একমাত্র স্বয়ংসম্পূর্ণ সুষম খাবার
হলো দুধ। কিন্তু এই
খাবারটি বাজার
থেকেকিনেখেতেচাইলেএটিনির্ভেজাল
কি না অবশ্যই তা নিশ্চিত
হওয়া দরকার। কারণ অসাধু
ব্যবসায়ীরা ভোক্তাদের
চোখে আকর্ষণীয়
করতে এবং বেশি দিন সংরক্ষণের
জন্য দুধে নানা রাসায়নিক
ব্যবহার করে। এসব রাসায়নিক
দুধের পুষ্টিমান যেমন কমিয়ে দেয়
তেমনি তা স্বাস্থ্যের জন্য
মারাত্মক হুমকি। দুধে ব্যবহৃত
বেশিরভাগ ভেজালই বিষাক্ত। এর
মধ্যে রয়েছে, আটা, চিনি,
অ্যাসিড, ফরমালিন, মেলামিন,
অ্যামোনিয়াম সালফেট ইত্যাদি।
এসব ভেজাল দেওয়া হয় দুধ ঘন
করতে, আমিষের পরিমাণ
বেশি দেখাতে এবং বেশি দিন
সংরক্ষণ করতে। তবে কিছু
রাসায়নিক পরীক্ষা করে সহজেই
ভেজাল দুধ শনাক্ত করতে পারেন।
চাইলে বাজার
থেকে কিনে ঘরে রাখতে পারেন
এসব রাসায়নিক।
জীবাণু
দুধে ব্যাকটেরিয়ার মতো ক্ষতিকর
জীবাণু থাকতে পারে। তবে কিছু
উপকারী জীবাণুও থাকে। ক্ষতিকর
ব্যাকটেরিয়ামুক্ত করার জন্য দুধ
পাস্তুরিত করা হয়।
তবে ঠিকমতো পাস্তুরিত
না করা হলে সেসব জীবাণু থেকেই
যায়। দুধে ক্ষতিকর জীবাণু
অতিমাত্রায়
আছে কিনা তাপরীক্ষা করতেপারেন
মিথিলিন নীল হ্রাসকরণ
পরীক্ষার মাধ্যমে। জীবাণুযুক্ত
দুধের
মধ্যেএটিদিলেতাৎক্ষণিকভাবেনীল
বর্ণ ধারণ করবে।
চিনি (টেবিল সুগার)
দুধের চিনিকে বলে ল্যাকটোজ।
দুধের চর্বির উপাদানটি আমিষের
সঙ্গে তুলনাযোগ্য। সুক্রোজ বা এ
জাতীয় চিনি দুধের মধ্যে ভেজাল
দেওয়া হয় ঘন করার জন্য। সুক্রোজ
যোগ
করলে দুধে কার্বোহাইড্রেটের
পরিমাণ বেড়ে যায় ফলে ঘন
দেখায়। এভাবেই অসাধু
ব্যবসায়ীরা দুধের ঘনত্ব ঠিক
রেখে ইচ্ছে মতো পানি যোগ করে।
এটি পরীক্ষা করার জন্য
দুধে কিটোজ সুগার যোগ করুন।
চিনি যোগ করা থাকলে লাল বর্ণ
দেখা যাবে।
ময়দা (স্টার্চ)
দুধে প্রচুর চর্বি থাকে।
এতে কার্বোহাইড্রেট যোগ
করলে কঠিন উপাদানের পরিমাণ
বাড়ে ফলে চর্বির পরিমাণ কমে।
এই কাজটি করা হয়
ময়দা বা স্টার্চ যোগ করে। এই
ভেজাল শনাক্ত করতে আয়োডিনের
দ্রবণ যোগ করুন দেখবেন
কালচে নীল বর্ণ ধারণ করেছে।
এসিড
বেনজোয়িক এসিড
বা স্যালিসাইলিক এসিড
সাধারণত খাবার কারখানায়
প্রিজারভেটিভ হিসেবে ব্যবহার
করা হয়। এ ধরনের রাসায়নিক
যোগ করা হলে দুধ অনেক দিন
সংরক্ষণ করা যায়। দুধের
মধ্যে এসিডের ভেজাল শনাক্ত
করতে দরকার ঘন সালফিউরিক
এসিড এবং ফেরিক ক্লোরাইড। এসব
রাসায়নিক বেনজোয়িক এসিড
এবং স্যালিসাইলিক এসিডের
সঙ্গে বিক্রিয়া করে যথাক্রমে ঘন
কালো এবং বেগুনি বর্ণের যৌগ
তৈরি করে।
সাবান
সাবান ব্যবহার করা হয়
দুধকে ফেনাযুক্ত করার জন্য।
ফলে দুধে প্রচুর সর
পড়তে দেখা যায়। কিন্তু এই
সাবানে যে রাসায়নিক
থাকে তা পাকস্থলী ও কিডনিসহ
নানা ধরনের স্বাস্থ্য
জটিলতা তৈরি করে। দুধের সাবান
শনাক্ত করার জন্য ফেনফথেলিন
টেস্ট করতে পারেন। এ ক্ষার
দুধের এসিডের
সঙ্গে বিক্রিয়া করে নিষ্ক্রিয়
হয়ে যায় এবং গোলাপি বর্ণ ধারণ
করে।
ফরমালিন
পচনশীল খাদ্যদ্রব্য সংরক্ষণের
জন্য এ রাসায়নিক এখন
ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। কিন্তু
ফরমালিন অতিমাত্রায় বিষাক্ত
যা যকৃত এবং কিডনি বিকল
করে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে। এই
ফরমালিন সালফিউরিক এসিড
এবং ফেরিক ক্লোরাইডের
সঙ্গে বিক্রিয়া করে নীল-লোহিত
বর্ণের রিং তৈরি করে।
দুধে ফলমালিন ভেজাল থাকলে এ
রাসায়নিক দিয়ে সহজেই
তা শনাক্ত করতে পারবেন।
অ্যামোনিয়াম সালফেট
ল্যাক্টোমিটারকে ফাঁকি দেওয়ার
জন্য সাধারণত এই রাসায়নিক
ব্যবহার করা হয়।
এটি দুধে মেশালে ঘনত্ব
বেড়ে যায়। এটা শনাক্ত করা যায়
সোডিয়াম হাইড্রোক্সাইড,
সোডিয়াম হাইপোক্লোরাইট
এবং ফেনল ব্যবহার করে। এই
তিনটি রি এজেন্টের
সঙ্গে বিক্রিয়া করে অ্যামোনিয়াম
সালফেট ঘন নীল বর্ণের যৌগ গঠন
করে।
তবে দুধে আমিষের
মাত্রা বাড়িয়ে দেখানোর জন্য
কখনো মেলামিনও ব্যবহার
করা হয়। সাধারণ প্যাকেট দুধ
বা গুঁড়া দুধে এ ভেজাল
বেশি দেয়া হয়। এটা শনাক্ত
করার জন্য অবশ্য জটিল
ল্যাবরেটরি পরীক্ষা দরকার।
এটা বাড়িতে করা সম্ভব নয়।
ভেজাল শনাক্ত করার জন্য
সাধারণ যে পরীক্ষাগুলোর
কথা ওপরে বর্ণনা করা হলো সেই
রাসায়নিকগুলোআপনিটিকাটুলিএলাকার
রাসায়নিক
বাজারে পেতে পারেন।
Posted via Blogaway
No comments:
Post a Comment