Headlines



gazitv2

w41j

gazitv

Friday, June 6, 2014

ফিরে দেখা :একজন ক্ষণজন্মা সালমান শাহ এর যত জানা-অজানা এবং রহস্য ! (ভিডিও)

বিনোদন ডেস্ক : সালমান শাহ নামটি ৯০ দশকের
বাংলা চলচ্চিত্রের এক ধুমকেতুর নাম । যিনি হুট
করে এসে বাংলা চলচ্চিত্রের দর্শকদের মন জয় করে খুব
তাড়াতাড়ি চলে গিয়েছিলেন । আমার এই লিখাটি সালমান
সম্পর্কে সবাইকে একটা পরিপূর্ণ ধারনা দেয়ার
চেষ্টা মাত্র। সালমান কে নিয়ে এই লিখাটি সম্পূর্ণ আমার
৯০ দশকে হলে দেখা একজন দর্শকের চোখ দিয়ে দেখার
বর্ণনা ।
সালমান শাহ ১৯৭১ সালে সিলেট জেলায় অবস্থিত
জকিগঞ্জ উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন, এবং তাঁর
রাশি ছিল বৃশ্চিক। তাঁর পিতা কমর উদ্দিন চৌধুরী ও
মাতা নীলা চৌধুরী। তিনি পরিবারের বড় ছেলে। যদিও তাঁর মুল
নাম চৌধুরী সালমান শাহরিয়ার ইমন, কিন্তু চলচ্চিত্র
জীবনে এসে হয়ে যান ‘সালমান শাহ’। সালমানের দাদার
বাড়ি সিলেট শহরের শেখঘাটে আর নানার বাড়ি দারিয়া পাড়ায়
। যে বাড়ির নাম এখন ‘সালমান শাহ হাউস’ । নানার
মুলবাড়ি ছিল মৌলভিবাজারে। সালমান শাহ ১২ আগস্ট ১৯৯২
বিয়ে করেন, এবং তাঁর স্ত্রীর নাম সামিরা।
১৯৮৫/৮৬ সালের দিকে হানিফ সংকেতের গ্রন্থনায় কথার
কথা নামে একটি ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান প্রচারিত হত। এর কোন
একটি পর্বে ‘নামটি ছিল তার অপূর্ব’ নামের একটি গানের
মিউজিক ভিডিও পরিবেশিত হয়। হানিফের সংকেতের
স্বকন্ঠে গাওয়া এই গান এবং মিউজিক ভিডিও দুটোই
অনুষ্ঠানের জন্য বিশেষভাবে নির্মিত। একজন সম্ভাবনাময়
সদ্য তরুন তার পরিবারের নানারকমের ঝামেলার
কারনে মাদকাসক্ত হয়ে মারা যায়, এই ছিল গানটার থিম।
গানের প্রধান চরিত্র অপূর্বর ভূমিকায় অভিনয়ের মাধ্যমেই
সালমান শাহ মিডিয়াতে প্রথম আলোচিত হন। তখন অবশ্য
তিনি ইমন নামেই পরিচিত ছিলেন। মিউজিক
ভিডিওটি জনপ্রিয়তা পেলেও নিয়মিত টিভিতে না আসার
কারনে দর্শক আস্তে আস্তে ইমনকে ভুলে যায়। আরও
কয়েক বছর পর অবশ্য তিনি আব্দুল্লাহ আল মামুনের
প্রযোজনায় পাথর সময় নাটকে একটি ছোট
চরিত্রে এবং কয়েকটি বিজ্ঞাপনচিত্রেও কাজ করেছিলেন।
■ এক নজরে সালমান শাহ
● আসল নাম : চৌধুরী সালমান শাহরিয়ার ইমন
● জন্ম : ১৯ সেপ্টেম্বর ১৯৭১, রবিবার
● বাবা : কমর উদ্দিন চৌধুরী
● মা : নীলা চৌধুরী
● স্ত্রী : সামিরা
● উচ্চতা : ৫ ফুট ৮ ইঞ্চি
● রাশি : বৃশ্চিক
● প্রথম চলচ্চিত্র : কেয়ামত থেকে কেয়ামত
● শেষ ছবি : বুকের ভেতর আগুন
● প্রথম নায়িকা : মৌসুমী
● সর্বাধিক ছবির নায়িকা : শাবনূর (১৪টি)
● মোট ছবি : ২৭টি
● বিজ্ঞাপনচিত্র : মিল্ক ভিটা, জাগুরার, কেডস, গোল্ড
স্টার টি, কোকাকোলা, ফানটা।
● ধারাবাহিক নাটক : পাথর সময়, ইতিকথা
● একক নাটক : আকাশ ছোঁয়া, দোয়েল, সব পাখি ঘরে ফেরে,
সৈকতে সারস, নয়ন, স্বপ্নের পৃথিবী।
● মৃত্যু : ৬ সেপ্টেম্বর, ১৯৯৬, শুক্রবার
■ সালমান শাহ অভিনীত ছবির তালিকা:
ছবির নাম :: ছবি মুক্তির তারিখ ::
● কেয়ামত থেকে কেয়ামত – ১৯৯৩ সালের ২৫ মার্চ
● তুমি আমার – ১৯৯৪ সালের ২২ মে
● অন্তরে অন্তরে – ১৯৯৪ সালের ১০ জুন
● সুজন সখী – ১৯৯৪ সালের ১২ আগস্ট
● বিক্ষোভ – ১৯৯৪ সালের ৯ সেপ্টেম্বর
● স্নেহ – ১৯৯৪ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর
● প্রেমযুদ্ধ – ১৯৯৫ সালের ২৩ ডিসেম্বর
● কন্যাদান – ১৯৯৫ সালের ৩ মার্চ
● দেনমোহর – ১৯৯৫ সালের ৩ মার্চ
● স্বপ্নের ঠিকানা – ১৯৯৫ সালের ১১ মে
● আঞ্জুমান – ১৯৯৫ সালের ১৮ আগস্ট
● মহামিলন – ১৯৯৫ সালের ২২ সেপ্টেম্বর
● আশা ভালোবাসা – ১৯৯৫ সালের ১ ডিসেম্বর
● বিচার হবে- ১৯৯৬ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি
● এই ঘর এই সংসার – ১৯৯৬ সালের ৫ এপ্রিল
● প্রিয়জন – ১৯৯৬ সালের ১৪ জুন
● তোমাকে চাই – ১৯৯৬ সালের ২১ জুন
● স্বপ্নের পৃথিবী – ১৯৯৬ সালের ১২ জুলাই
● সত্যের মৃত্যু নেই – ১৯৯৬ সালের ৪ অক্টোবর
● জীবন সংসার – ১৯৯৬ সালের ১৮ অক্টোবর
● মায়ের অধিকার – ১৯৯৬ সালের ৬ ডিসেম্বর
● চাওয়া থেকে পাওয়া – ১৯৯৬ সালের ২০ ডিসেম্বর
● প্রেম পিয়াসী – ১৯৯৭ সালের ১৮ এপ্রিল
● স্বপ্নের নায়ক – ১৯৯৭ সালের ৪ জুলাই
● শুধু তুমি – ১৯৯৭ সালের ১৮ জুলাই
● আনন্দ অশ্রু – ১৯৯৭ সালের ১ আগস্ট
● বুকের ভেতর আগুন – ১৯৯৭ সালের ৫ সেপ্টেম্বর
সালমান এর মৃত্যু না অপমৃত্যু?
১৯৯৬ সালের ৫ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় ‘প্রেমপিয়াসী’ ছবির
ডাবিং করতে যান সালমান শাহ। সেখানে তাঁর সহশিল্পী ছিলেন
নায়িকা শাবনূর। কিছুক্ষণ পর সালমান তাঁর বাবা কমর উদ্দিন
চৌধুরীকে ফোন করে বলেন, তাঁর
স্ত্রী সামিরাকে নিয়ে এফডিসির সাউন্ড কমপ্লেক্সে আসার
জন্য। শ্বশুরের সঙ্গে সাউন্ড
কমপ্লেক্সে এসে সামিরা দেখতে পান সালমান ও শাবনূর
ঘনিষ্ঠভাবে খুনসুটি করছে। সালমান প্রায়ই এ ধরনের
খুনসুটি করতেন। সামিরাকে উত্তেজিত করে তুলতেন।
কিছুক্ষণ পর কমর উদ্দিন চলে গেলে সামিরাও দ্রুত
গাড়িতে ওঠেন। অবস্থা খারাপ দেখে একই গাড়িতে ওঠেন
সালমান শাহ ও চিত্র পরিচালক বাদল খন্দকার। সালমানের
সঙ্গে কথা বন্ধ করে দেন সামিরা। তাঁকে বোঝাতে থাকেন
বাদল। বেরিয়ে যাওয়ার সময় সালমান এফডিসির প্রধান
ফটকের সামনে নেমে আড্ডা দেন, যা এর
আগে কখনো করেননি।রাত ১১টার দিকে নিউ ইস্কাটন রোডের
ইস্কাটন প্লাজার বি-১১ নম্বর ফ্ল্যাটে পেঁৗছে দিয়ে বিদায়
নেন বাদল খন্দকার। সামিরাও তখন ঘরে। সাড়ে ১১টার
দিকে সালমান বেডরুমে গিয়ে টিভি দেখেন। তখনো তাঁদের
মধ্যে কথা বন্ধ। ১২টার দিকে সালমানের
মোবাইলে একটি ফোন আসে।
তিনি বাথরুমে গিয়ে কথা বলে বেরিয়ে টিভি বন্ধ করে অডিও
ক্যাসেট ছাড়েন। এ সময় আরো একটি ফোন আসে। এ
নিয়ে দুজনের মধ্যে কথা কাটাকাটি শুরু হয়। উত্তেজিত
হয়ে সালমান মোবাইল ফোনসেটটি ভেঙে ফেলেন। ক্ষুব্ধ
সামিরা ব্যাগ গুছিয়ে ধানমণ্ডি ২৭ নম্বরে ফুফুর বাসায়
যাওয়ার জন্য রওনা হন। সালমানের পিএ আবুল
ইন্টারকমে দারোয়ানকে গেট না খুলতে নিষেধ করেন।
সামিরা ফিরে এলে সালমান তাঁকে ফুফুর বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার
প্রতিশ্রুতি দেন। ৬ সেপ্টেম্বর সকালে ‘তুমি শুধু তুমি’ ছবির
শুটিংয়ে যাওয়ার কথা থাকলেও সালমান ঘুমাতে থাকেন।
বাজারে পাঠানো হয় তাঁর দেহরক্ষী দেলোয়ারকে। এ সময়
কমর উদ্দিন তাঁর ছেলের ফ্ল্যাটে আসেন। সালমানকে বলেন,
মা, ভাই ও তাঁকে নিয়ে সিলেটে যাবেন। এ সময় সিদ্দিক
নামের এক প্রযোজকও আসেন। কমর উদ্দিন ও সিদ্দিক
চলে যাওয়ার পর সামিরা তাঁর বেডরুমে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন।
সকাল ১১টার দিকে সালমান ঘুম থেকে উঠে দুই কাজের মেয়ের
একজনকে ডেকে চা ও পানি খান। কিছুক্ষণ পর
ড্রেসিংরুমে ঢুকে ভেতর থেকে দরজা লক করে দেন। ঢোকার
আগে আবুলকে বলে যান, আমাকে যেন কেউ ডিস্টার্ব
না করে। সাড়ে ১১টার দিকে আবুল সামিরাকে জাগিয়ে বলেন,
অনেকক্ষণ আগে ড্রেসিংরুমে ঢুকলেও তাঁর কোনো সাড়াশব্দ
পাওয়া যাচ্ছে না। সামিরা দরজার ডুপ্লিকেট
চাবি খুঁজতে থাকেন। পৌনে ১২টায় ডুপ্লিকেট
চাবি দিয়ে আবুল ও সামিরা ড্রেসিং রুমের দরজা খুলে দেখেন
ফ্যানের সঙ্গে গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলে আছেন সালমান।
সামিরা ও দুই কাজের মেয়ে সালমানকে উঁচু করে ধরেন।
পাশের বাসার কাজের
মেয়ে দড়ি কেটে সালমানকে নামিয়ে আনেন। দড়িটি ছিল
ব্যায়ামের যন্ত্র থেকে বের করা। সালমান ফ্যান পর্যন্ত
ওঠেন ঘরে থাকা একটি কাঠের মই দিয়ে। নামানোর পর
পাশের বাসার কাজের মেয়েটি বলে, ‘শরীর এখনো গরম।
উনি মরেননি।’ তখন মাথায় ও গায়ে তেল মালিশ করা হয়। এ
সময় মে ফেয়ার বিউটি পার্লার থেকে সামিরার
বান্ধবী রুবি এসে শুশ্রূষায় অংশ নেন। হাউজিং কমপ্লেক্সের
ম্যানেজারও আসেন। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে চলচ্চিত্রের
প্রোডাকশন ম্যানেজার সেলিম এসে সালমান শাহকে মরার
মতো পড়ে থাকতে দেখে সালমানের বাবা কমর
উদ্দিনকে খবর দেন। খবর পেয়ে কমর উদ্দিন, সালমানের
মা নীলা চৌধুরী, ভাই শাহরান ছুটে আসেন ঘটনাস্থলে।
তাঁরা গিয়ে তাঁকে হাসপাতালে নেওয়ার জন্য লিফট
দিয়ে নামাতে যান। এ সময় লিফটের যান্ত্রিক ত্রুটির
কারণে ১৫ মিনিট দেরি হয়।
পরে তাঁকে নামিয়ে হলি ফ্যামিলি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
সেখানকার
চিকিৎসকরা তাঁকে ভর্তি করতে অস্বীকৃতি জানালে ঢাকা মেডিক্যাল
কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানকার কর্তব্যরত
চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। সালমান শাহর
বাবা কমর উদ্দিন চৌধুরী রমনা থানায় অপমৃত্যু
মামলা করেন। পরবর্তী সময়ে মা নীলা চৌধুরী সালমানের
স্ত্রী, শ্বশুর, শাশুড়িসহ
কয়েকজনকে আসামি করে আদালতে হত্যা মামলা করেন। এই
পর্যায়ে পুরো ব্যাপারটি খুবই নোংরা পর্যায়ে চলে যায়।
নীলা চৌধুরী অভিযোগ করেন, সামিরার সাথে বিতর্কিত
ব্যবসায়ী আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের অবৈধ সম্পর্ক
গড়ে উঠেছিল এবং এ দু’জন মিলে সালমানকে হত্যা করেছে।
সামিয়া পালটা অভিযোগ করেন যে নীলা চৌধুরীই আজিজ ভাই
সহ অনেক পুরুষকে তার বাড়িতে নিয়ে আসত
এবং এটা নিয়ে সালমান ও তার বাবা নীলার উপর ক্ষুদ্ধ
ছিলেন। এছাড়া সামিরা পুরো ঘটনার জন্য সালমান-শাবনুরের
প্রেমকেও দায়ী করে।
২০০১ থেকে সালমান শাহ এর মা নীলা চৌধুরীর সাথে আমার
পরিচয় ঘটে যার এবং নীলা আপার কাছে যাওয়া আসার
কারনে ধীরে ধীরে আপার বেশ স্নেহভাজন হয়ে উঠি। ফলে খুব
কাছ থেকে সালমান শাহ ও তাঁর পরিবার
সম্পর্কে একটি স্পষ্ট ধারনা পাই। প্রায় সময় তখন
আফসোস করতাম ‘ইশ যদি সালমান বেঁচে থাকতো এই সময়
তাহলে কাছ থেকে তাকেও দেখার সুযোগ হতো’। সালমান এর
ধানমণ্ডি বাসভবনেও গিয়েছিলাম। সেখানে সালমান এর
ব্যবহৃত সকল আসবাবপত্র ,কাপড় চোপড় সহ তাঁর
শৌখিনতা সম্পর্কেও একটা ধারনা পেয়েছিলাম। তিন
বছরে পরিবারটির সাথে মেলামেশায় যা বুঝলাম
সেটা হলো সালমান এর মৃত্যু কোন আত্মহত্যা ছিল
না সেটা পুরো স্পষ্ট। এটি ছিল একটি পরিকল্পিত
হত্যাকাণ্ড যা নিয়ে আমার কোন সন্দেহ নেই এবং এই
হত্যার পেছনে সালমান এর খুব কাছের মানুষ জড়িত
এবং আগে থেকে কেউ কেউ কিছুটা টেরও পেয়েছিল। কিন্তু
কোন এক অজানা রহস্য সেই
হত্যাটা আত্মহত্যা বলে প্রতিষ্ঠিত করা হলো এবং এই
হত্যার কোন কুল কিনারা আজ পর্যন্ত হয়নি যার
পেছনে সালমান এর কোন এক আপনজনসহ বাহিরের চিহ্নিত
শত্রু জড়িত ছিল। এই হত্যার বিচার
আজো হয়নি এবং হয়তো আগামিতেও
হবে না সে ব্যাপারে আমি নিশ্চিত।।
এবার আমার দর্শকের চোখ দিয়ে দেখা সালমান এর কিছু
ছবির গল্প বলবো
১: কেয়ামত থেকে কেয়ামত:
১৯৯৩ সালের ঈদুল ফিতরের ছবিগুলোর মাঝে মুক্তি পায়
সোহানুর রহমান সোহান এর রেকর্ড পরিমান ব্যবসাসফল
ছবি ‘ কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ যা ছিল ভারতের আমির -
জুহির ‘কেয়ামত সে কেয়ামত’ ছবির বাংলা সংস্করন
বা রিমেক। যা পরিচালক ও প্রযোজক ভারত থেকে মুল ছবির
প্রযোজক ও পরিচাকের অনুমতি নিয়েই ছবিটি তৈরি করেন।
সোহান তখন ইন্ডাস্ট্রির নবীন একজন পরিচালক
যিনি বাংলাদেশের ৮০র দশক থেকে ৯০ দশক এর
সবচেয়ে সেরা পরিচালক এ জে মিন্টুর সহকারী পরিচালক
হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করেছিলেন এবং মিন্টুকেই যিনি ‘গুরু’
মানেন। ৯২ সালে ‘বেনাম বাদশাহ’ দিয়ে সোহান পরিচালকের
খাতায় নাম লিখান যেটি ছিল সেই সময়ের অন্যতম
ব্যবসাসফল ছবি। প্রথম ছবিতেই সোহান বুঝিয়ে দিয়েছিলেন
গুরু মিন্টুর যোগ্য একজন ছাত্রই ছিলেন তিনি। সোহানের
ছবি দিয়ে কাজ শুরু করলেও সালমান কে কখনও গুরু এ
জে মিন্টুর ছবিতে পাওয়া যায়নি। যা সালমান এর নিজেরও
একটা আক্ষেপ ছিল মিন্টুর ছবিতে কাজ না করার জন্য।
চ্ছবিতে দর্শকরা সালমান হাজির হলেন যথারীতি আমির
খানের মতো জনপ্রিয় গানটির মাধ্যমে ।
প্রথম সাক্ষাতেই দর্শক নড়ে চড়ে বসলো নতুন সুদর্শন
তরুন নায়ক সালমান কে দেখে । এরপর যতই ছবির গল্প
এগোতে থাকে ততই যেন সালমানকে দর্শকদের
ভালো লাগতে থাকে । সেই সাথে ভালো লাগতে থাকে সালমান
– মৌসুমি জুটিকে ।
দুজনকে মানিয়েছিলে বেশ পুরো ছবিতে দুই তরুন তরুনির
প্রেম ও সর্বশেষ দুই অভিজাত পরিবারের দন্ধের
কারনে দুইজনের করুন মৃত্যুর মদ্ধএ দিয়ে ছবিটি শেষ হয় ।
যা দর্শকদের চোখ ভেজা অবস্থায় বাড়ী ফিরতে বাধ্য করে ।
প্রজুক্তির অপ্রতুলতা সত্ত্বেও বলিউড এর একটি সুপারহিট
ছায়াছবির বাংলা রিমেক অসাধারন ভাবে সফল হয়
যা বাংলা ছায়াছবির একটি মাস্টার পিস বলা যায় । বলিউড এর
বিগ বাজেটের তুলনায় বনাগ্লাদেশের সল্প বাজেট ও পরিচিত
লোকেশনেও ছবিটি দারুন সফলতা পায় এবং সেই
সঙ্গে প্রথম ছবিতেই দর্শকদের বিশাল ভাললাগা ও
ভালবাসায় পরিনত হোন সালমান । কেয়ামত থেকে কেয়ামত’
ছবির প্রযোজনা সংস্থা ‘আনন্দমেলা চলচ্চিত্র যার কর্ণধার
ছিলেন প্রযোজক সুকুমার রঞ্জন ঘোষ
যিনি ব্যক্তিগতভাবে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য।
যিনি পরবর্তীতে একইভাবে ‘সাজন’ রুবেল, ইলিয়াস কাঞ্চন
ও মৌসুমি এবং ‘আমার ঘর আমার বেহেস্ত’ শাকিল খান ও
পপি কে নিয়ে ছবি তৈরি করেন যার পরিচালক এই সোহানুর
রহমান সোহান। ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ ছবিতে সোহান
নবাগত ২ তরুন তরুণীকে নিয়ে কাজ করে ১০০% সফল
হয়েছিলেন। যে ছবিটি ছিল তজাম্মেল হক বকুল এর ‘বেদের
মেয়ে জ্যোৎস্না’ ছবির পর রেকর্ড করা ব্যবসা সফল
ছবি যা দেখতে সারা বাংলার সব মানুষ
হলে হুমড়ি খেয়ে পড়েছিল। প্রথমবার যে সকল
হলে ছবিটি মুক্তি পায় তাঁর অধিকাংশ হলেই পুরো ৪ সপ্তাহ
হাউসফুল ব্যবসা করে অর্থাৎ সিনেমা হল
মালিকরা ছবিটি পুরো ১ মাস প্রদর্শন করতে বাধ্য হয়। ছবির
গান সবগুলো ছিল সুপারহিট। এই ছবির পর সালমান কে আর
কখনও সোহানের ছবিতে পাওয়া যায়নি কিন্তু
মৌসুমিকে একাধিকবার সোহানের ছবিতে কাজ
করতে দেখা গেছে।
অন্তরে অন্তরেঃ http://www.youtube.com/watch?
v=msFiN5b8rzs
‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ ছবির সুপারহিট সালমান মৌসুমির
২য় সুপারহিট ছবি শিবলি সাদিক এর ‘অন্তরে অন্তরে’।
‘অন্তরে অন্তরে ‘ ছবির আলম খানের গানগুলো ছিল সেই
সময়ের রেডিও ও টেলিভিশনের ছায়াছবির গানের মধ্য তুমুল
জনপ্রিয় গান। ছবিটি পারিবারিক ও রোমান্টিক প্রেমের ছবি।
শিবলি সাদিক মুলত সামাজিক অ্যাকশন ও পারিবারিক গল্পের
ছবির এক নিপুন কারিগর। সেই সময় শিবলি সাদিক এর
নামটা বক্স অফিসে আলাদা সমীহ জাগানিয়া একটি নাম।
যে ছবির পরিচালকের নাম শিবলি সাদিক থাকে সেই
ছবি প্রেক্ষাগৃহের মালিকরা চোখ বন্ধ করে নিয়ে যেতো।
কারন শিবলির ছবির দর্শক তখনও ঘরে ঘরে ছিল।
শিবলি সাদিক একবারে নতুন কিন্তু বক্স অফিসে তোলপাড়
করা জুটি ‘সালমান – মৌসুমি’ কে নিয়ে এমন দুর্দান্ত
একটি গল্পের ছবি বানালেন আর সাথে শিবলির বন্ধু সঙ্গীত
পরিচালক আলম খানের মিষ্টি সুরের গান ছবিতে দিয়ে দিলেন
যার ফলাফল সালমান – মৌসুমি জুটির টানা ২ য় সুপারহিট
ছবি।
প্রথম ছবির পিতা পুত্র অর্থাৎ রাজীব – সালমান এবার
আলাদা রাজীব এই ছবিতে মৌসুমির পিতা যিনি একজন
জমিদারের বিশ্বস্ত প্রজা ও গরীব জেলে। আর সালমান
জমিদার বাড়ীর বিদেশ ফেরত নাতী। ধনি গরীবের অসম
প্রেম , বাধা বিপত্তি ও নাটকীয়তা শেষে অবশেষে দুই তরুন
তরুণীর মিলন ছিল ছবিটির মুল উপজীব্য । এই ধরনের
ছবি আরও বাংলা চলচ্চিত্রে হয়েছিল তবুও ছবিটি হয় সুপার
ডুপার হিট। হয়তো প্রথম ছবি ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ এর
মধ্য সালমান -মৌসুমির বিয়োগান্তর সমাপ্তি দর্শক
মেনে নিতে পারেনি যা তাদের মনে দাগ ফেলে । সেই
ঘা শুকাতেই হয়তো দর্শক ‘অন্তরে অন্তরে’
দেখতে হুমড়ি খেয়ে পড়েন । রাজীব এই ছবিতে পজিটিভ
চরিত্রের এক দুর্দান্ত অভিনেতা। শিবলি সাদিক
কাহিনীকে এতো চমৎকার ভাবে গেথেছিলেন
যে পুরো ছবিটি শেষ না হওয়া পর্যন্ত দর্শক হল থেকে বের
হয়নি।
তুমি আমারঃ ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ ও ‘অন্তরে অন্তরে’
ছায়াছবি দুটি সুপারহিট হওয়ার সুবাদে সালমান- মৌসুমি জুটির
চাহিদা আকাশতুঙ্গে। ঠিক এমন সময়ই কি এক
অজানা কারনে সালমান – মৌসুমি আর
জুটি বাঁধতে রাজী হননি। তাঁরা দুজনেই নিজেদের
চেনাতে সিদ্ধান্ত নিলেন যে আর একসঙ্গে কোন
ছবিতে অভিনয় করবেন না যা পরবর্তীতে মাত্র আরও ২
টি ছবি ছাড়া দুজনের দেখা একসঙ্গে দর্শকরা পায়নি।
ফলে পরিচালকগন বেশ বিপাকে পড়ে যান ,কারন ঐ সময়
মৌসুমি ছাড়া প্রতিষ্ঠিত সব অভিনেত্রীই ছিলেন
ইন্ডাস্ট্রিতে সালমানের সিনিয়র যারা তখন জনপ্রিয়তার
তুঙ্গে। বিশেষ করে চম্পা ও দিতি। এদের সাথে জুটি করেও
লাভ হবেনা। সালমান হয়ে পড়েন মৌসুমি বিহীন একা।
ঠিক তখনই প্রয়াত অভিনেতা ও পরিচালক জহিরুল হক
সিদ্ধান্ত নেন যে ইন্ডাস্ট্রির আরেক নতুন মুখ
‘শাবনুর’কে নিয়ে সালমান এর সাথে ছবি বানাবেন। উল্লেখ্য
শাবনুর এর প্রথম ছবি প্রয়াত এহতেশাম এর ‘চাঁদনী রাতে’
ছবিটি বক্স অফিসে মুখ থুবড়ে পরে যার বিপরীতে ছিলেন
আরেক নবাগত নায়ক ‘সাব্বির’। ‘চাঁদনী রাতে’ ছবিটি আমি ও
আমার বন্ধুরা অর্ধেক দেখে হল থেকে বের
হয়ে আসি ভালো না লাগার কারনে। তখন শাবনুর স্কুল
পড়ুয়া একজন অভিনেত্রী যার মাঝে কিশোরীপনা স্পষ্ট
লক্ষণীয় ছিল। যাই হোক, সালমান প্রথমেই
রাজী হয়ে গেলেন কিন্তু আপত্তি ছিল প্রযোজকের যার
দায়িত্ব নিলেন পরিচালক জহিরুল হক।
তিনি প্রযোজককে আশস্থ করলেন যে ছবিটি ব্যবসা সফল
হবেই।
প্রবীণ পরিচালকের সাথে নবীন সালমান ও শাবনুর এর এটাই
প্রথম কাজ। ছবিটি ছিল পুরোটাই রোমান্টিক
ছবি যেখানে সালমান বন্ধুদের কাছ থেকে ধার করা কাপর
চোপড়, গাড়ী ইত্যাদি ব্যবহার করে নিজেকে একজন ধনির
ছেলে হিসেবে শাবনুর এর সামনে তুলে ধরেন
যা পরবর্তীতে প্রকাশ পায় সম্পূর্ণ মিথ্যে ও অভিনয়।
আসলে সালমান ধনী পরিবারের সন্তান নয়
যা নিয়ে কাহিনীতে ব্যাপক গণ্ডগোল লাগিয়ে দেন বুদ্ধিমান ও
অভিজ্ঞ পরিচালক জহিরুল হক। জহিরুল হক হচ্ছেন সেই
পরিচালক যিনি ৮০র দশকে সারেন্ডার, বিজয়, জনি ওস্তাদ
এর মতো ব্যবসা সফল ছবি উপহার দিয়েছিলেন। ‘তুমি আমার’
ছবি ১৯৯৪ সালে মুক্তি পাওয়া মাত্রই আমরা সব সালমান -
সানী ভক্তরা হলে ভিড় করি। টিকেট নিয়ে স্কুল
পড়ুয়া ছাত্ররা কালোবাজারিদের উপর চড়াও হয়, যার
ফলে সিনেমার মারামারি বাস্তবে শুরু হয়ে যায় হলের
বাহিরেই। আবার এক স্কুলের ছেলেরা অন্য স্কুলের ছেলেদের
উপর হামলা চালায় কাউনটার থেকে আগে টিকেট সংগ্রহ
করা নিয়ে। কে কার আগে টিকেট কিনবে সেটা নিয়েই
ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া, ধস্তাধস্তি শুরু হলো। অবশ্য এইসব
দৃশ্য তখন হলের নিত্যদিনের সকালের
শোতে দেখা যেতো যা কারনে হলের দর্শকদের খুব
বেশী আতংকিত হতে দেখা যায়নি। মাঝে মাঝে বিকেলের
শোতে ও এইরকম দু চারটা ঘটনা ঘটে ঘটতো।
যে কথা বলছিলাম সেই কথা ফিরে আসি। ‘তুমি আমার ‘
ছবিটি মুক্তির পর যথারীতি সুপারহিট। অর্থাৎ নবাগত
সালমানের একটানা ৩ টি সুপারহিট ছবি দিয়ে প্রযোজক ,
পরিচালকদের আস্থা অর্জন করলেন আর অন্যদিকে শাবনুর
পেলেন প্রথম সুপারহিট ছবির স্বাদ এবং বুঝে গেলেন
যে নিজের ক্যারিয়ার বাঁচাতে ও সাজাতে সালমান এর
সাথে জুটি বাঁধা ছাড়া কোন বিকল্প নেই। অর্থাৎ শাবনুর
নিজের ক্যারিয়ার গড়তেই সালমান কে ব্যবহার
করতে লাগলেন। কারন দর্শক সালমান এর জন্য
ছবি দেখতে যায় শাবনুর জন্য নয় এটা স্পষ্ট।
আমরা যারা সেই সময় হলে নিয়মিত যেতাম তাঁরা কেউ শাবনুর
এর ছবি এসেছে এই জন্য যেতাম না, সবাই সালমানের নতুন
ছবি সেইজন্যই যেতাম।
ছবির সাথে সাথে প্রয়াত মেধাবী সঙ্গীত পরিচালক আবু
তাহের এর সুরে ছবির গানগুলো বিশেষ করে কুমার
বিশ্বজিতের কণ্ঠে ও ২য় বার রুনা লায়লার কণ্ঠের ‘”
শেখ ইশতিয়াকের কণ্ঠের ”
আগুন ও কনক চাপার কণ্ঠে ‘ আমার জন্ম তোমার জন্য ‘ ও

গানগুলি ছিল সেই সময় চরম হিট যা বিটিভির ছায়াছন্দে ও
রেডিওর ছায়াছবির গানের নিয়মিত প্রচারিত হতে থাকে।
উল্লেখ্য এর আগে জহিরুল হক এর ছবিগুলোর গান
থাকতো আলম খানের সুর করা কিন্তু এই প্রথম জহির তাঁর
বন্ধু আলম খান এর ব্যস্ততার কারনে আবু তাহের
কে নিয়ে গানের কাজ করেন আর আবু তাহেরও তাঁর সেই
আস্থার প্রতিদান দিয়েছেন ছবির সবগুলো গানকে চমৎকার
সুর করে। সেই থেকে শুরু হলো বাংলা চলচ্চিত্রের
একটি সুপারহিট জুটি সালমান – শাবনুর এর জন্ম এবং শুরু
হয়ে গেলো একটি অঘোষিত লড়াই যার একদিকে সালমান -
শাবনুর অন্যদিকে মৌসুমি – ? সেটার জন্য আগামী পোস্ট
পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। যাদের কারনে সেই সময়
ইন্ডাস্ট্রি ও দর্শক ২ দিকে ভাগ হয়ে যায় আর
চলতে থাকে একজুদ্ধ……..।ফলাফল কিছু অসাধারন ছবি ।।
তুমি আমার ছবির সাফল্যর পরপরেই পরিচালক জহিরুল হক
সালমান -শাবনুর জুটিকে নিয়ে ৭০র দশকের সুপারহিট খান
আতাউর রহমান এর ‘সুজন সখী’ (ফারুক কবরী) রিমেক
বানানোর ঘোষণা দেন যা পরবর্তীতে তিনি শেষ
করে যেতে পারেননি । ছবিটির শুটিং শুরু করার পরপরেই
পরিচালক জহিরুল হক মৃত্যুবরণ করেন যার ফলে ছবিটির কাজ
থেমে যায়। পরবর্তীতে পরিচালক তমিজ উদ্দিন
রিজভি ছবিটির কাজ শেষ করে পরিচালক জহিরুল হক এর নাম
দিয়েই ছবিটি মুক্তি দেন।
বিক্ষোভ ঃ তিন তিনটি রোমান্টিক / প্রেমের ছবির পর এই
প্রথমবার দর্শকরা নতুন এক সালমান কে দেখলো ।
যে সালমান নিজের ক্রেজ তৈরি করেছিলেন রোমান্টিক ছবির
নায়ক হিসেবে সেই সালমান এবার এলেন অ্যাকশন ছবির
নায়ক হয়ে। পরিচালক মোহাম্মদ হান্নান তিন সুপারহিট
রোমান্টিক ছবির নায়ক সালমান কে নিয়ে তৈরি করেন
বাংলাদেশের অন্ধকার ছাত্র রাজনীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ
স্বরূপ ‘বিক্ষোভ’ ছবিটি। যার মধ্য
দিয়ে কিভাবে মেধাবী ছাত্রদের রাজনৈতিক নেতারা নিজেদের
স্বার্থে ব্যবহার করছেন সেই সত্যিকারের চিত্রটি পরিচালক
সাহসের সাথে ফুটিয়ে তোলেন এ যেন আমাদের
দেশে ঘটে যাওয়া কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্মম সত্যিকারের
চিত্র।
ছবির নায়িকা সেই আগের ‘তুমি আমার’ খ্যাত শাবনুরকেই
বেছে নিলেন কারন মৌসুমি সালমান বিরোধ এবং মৌসুমির
সাথে ইতিমধ্যে দর্শকরা অন্য একজনকে গ্রহন
করে নিয়েছে তাই পরিচালক হান্নান কোন ঝুঁকি না নিয়েই
শাবনুরকে সালমান এর বিপরীতে নিয়েই শুরু করেন ‘বিক্ষোভ’
ছবিটি। ছবির প্রযোজনা সংস্থা বি.এম ফিল্মস এর এটি ছিল
প্রথম ছবি যা নিবেদন করেছিলেন আলেয়া বেগম ও
সালেহা রাব্বি। ছবিটি মুক্তি পাওয়ার পর যথারীতি সালমান
ঝড়ে হলগুলো ‘হাউসফুল’ হয়ে ছবি প্রদর্শন করতে থাকে।
টিকেটের চড়া মূল্য এবং আবারো হল কাউনটারে দর্শকদের
ধস্তাধস্তি ও মারামারি। তবুও ছবির ব্যবসায় কোন আচর
পড়েনি। এই ছবিতে সালমান কলেজের একজন মেধাবী ছাত্র।
যার পিতা রাজীবের ‘রাজনীতিতে একটা কথা আছে’ কথাটির
প্যাঁচে পড়ে প্রান হারান। সালমান তখন শিশু। যখন বড় হন
তখন রাজীব দেশের একজন রাজনৈতিক নেতা যিনি সালমানের
কলেজের সন্ত্রাসী জহির উদ্দিন পিয়ার এর আশ্রয় ও
প্রশ্রয়দাতা। যার সন্ত্রাসের কারনে কলেজের সাধারন
শিক্ষার্থীরা অসহায় হয়ে পড়ে। একসময় সবাই প্রতিবাদ
করতে শুরু করে।
উল্লেখ্য যে এই ছবিতে মঞ্চ ও টেলিভিশনের
শক্তিশালি অভিনেতা জহির উদ্দিন পিয়ারের দুর্দান্ত ও
ভয়ানক অভিনয় দর্শকদের নজর কাড়ে। রাজীবের রাজনৈতিক
প্রতিপক্ষ নাসির খান কোণঠাসা তাই একসময়
সালমানকে নিজের দলে ভেড়াতে সক্ষম হোন এবং রাজীবের
বিরুদ্ধে লেলিয়ে দেন। এখানে শাবনুর চরিত্রটি শুধু নায়কের
সাথে থাকার জন্য থাকা একটি চত্রিত্র যার বিশেষ কোন
ভুমিকা নেই বললেই চলে।
ছবির চিত্রনাট্য এতো শক্তিশালী ছিল যে দর্শকরা ছবি শেষ
হওয়ার আগ পর্যন্ত একবারও অনুমান করতে পারেনি ছবির
শেষ পর্যন্ত কি হবে? একদিকে ছবির নাটকীয়তা,
অন্যদিকে অভিনেতা অভিনেত্রীদের দুর্দান্ত অভিনয় ও একের
পর এক দুর্দান্ত গানগুলো দিয়ে ছবিটি ছিল ঠাসা।অথচ
আজকের এতো ঢাকঢোল পেটানো ও দাওয়াত দিয়ে প্রিমিয়াম
শো দেখানো ছবি গুলোর মাঝে তাঁর ছিটেফোটা পাওয়া যায়না।
ভালো গল্প ও গানের ছবি হলে ঢাকঢোল
পেটানো লাগেনা এবং প্রিমিয়াম শো করে সাংবাদিকদের
টাকা দিয়ে ছবির প্রচার করা লাগেনা তাঁর প্রমান ‘বিক্ষোভ’।
পরিচালক হান্নান প্রমান করেছিলেন যে শুধু সালমানের টানেই
নয় ছবির গল্প ও চিত্রনাট্য ছিল শক্তিশালি, গান ছিল
চমৎকার যার কারনে দর্শকরা ছবিটিকে গ্রহন করেছিল।
ছবিতে পরিচালক আমাদের খ্যাতনামা আরেক সুরকার আহমেদ
ইমতিয়াজ বুলবুল এর হাতে ছবির গানগুলোর দায়িত্ব দেন।
বুলবুল ১০০ তে ১০০ পেয়েই তার পুরো দায়িত্ব
সফল্ভাবে সম্পন্ন করেন। উপরে ছবির জনপ্রিয় তিনটি গান
ছাড়াও আরও দুটি গান ছিল । একটি হলো আগুন ও
কনকচাপার কণ্ঠের ‘তোমাকে আমি যেন জীবন
দিয়ে ভালবাসতে পারী’ ।
অন্যটি হলো রুনা লায়লার একক কণ্ঠে ‘ ওগো মোর
জীবনসাথী’ গানটি। সবগুলো গানের গীতিকার ও সুরকার
ছিলেন আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল। এই ছবির ব্যবসায়িক
সফলতার পরেও সালমান কে আর এই ধরনে সামাজিক
অ্যাকশন ছবিতে খুব বেশী দেখা যায়নি। সালমান
আবারো যথারীতি রোমান্টিক প্রেমের ছবিতে কাজ
করতে শুরু করেন। আসলে মোহাম্মদ হান্নান এর ছবিটি ছিল
এমন যে এখানে সালমান না হয়ে যদি তখনকার জনপ্রিয়
নায়ক মান্না, ওমরসানী বা রুবেল কেও নেয়া হতো তাহলেও
ছবিটি ব্যবসাসফল হতো। কারন এর গল্প ও গাঁথুনি ছিল খুব
মজবুত যার কারনে ছবিটি দেখে দর্শকরা চরম
মজা পেয়েছিল। আর তখন এই ধরনের রাজনৈতিক গল্পের
ছবির বাজারও ছিল চরম। যার প্রমান এর ২ বছর আগের
ছবি কাজী হায়াত ‘ত্রাস’, ‘চাঁদাবাজ’ ,নাদিম মাহমুদ এর ৯৩
তে নাদিম মাহমুদ এর ‘আখেরি হামলা’ ছবিগুলো। প্রথমদিন
‘বিক্ষোভ’ ছবিটির হাউস্ফুল দেখে সবাই সালমান এর জন্য
ভিড় করেছে মনে হলেও পরবর্তীতে তা পাল্টে যায়। ছবির
কাহিনীর কারনেই দর্শক ছবিটি লুফে নেয়। তবে সালমানের
যে কোন অবদান নেই সেটা আমি বলছি না ,
এখানে দর্শকরা আগের শান্তশিষ্ট প্রেমিক সালমানের
বদলে এক নতুন প্রতিবাদী কলেজ ছাত্র
সালমানকে দেখতে পায়। যিনি রোমান্টিক ছবির মতোই
এখানেও সফল। তবে সালমানের অনেক দর্শক
মনে মনে সালমানকে অ্যাকশন নায়ক হিসেবে গ্রহন
করেনি যা সালমান নিজেও বুঝতে পেরেছিলেন । মোহাম্মদ
হান্নান এর সাথে সালমানের সেটাই প্রথম এবং শেষ
ছবি ছিল। জীবিত অবস্থায় মোহাম্মদ হান্নান সালমান শাবনুর
জুটিকে নিয়ে আর কাজ করেননি। আজো স্মৃতির
পটে ছবিটি হলে দেখার দিনটির কথা বারবার মনে পড়ে আর
চোখে সেইসব আনন্দ ও উত্তেজনা নিয়ে বদ্ধ হল
ঘরে একের পর এক সিগারেট টানার দৃশ্যগুলো চোখে ভাসে,
যেখানে আমরা সব বন্ধুরা ছিলাম চরম টেনশনে। ধন্যবাদ
জানাই পরিচালক মোহাম্মদ হান্নান কে এমন একটি চমৎকার
সুন্দর ছবি আমাদের উপহার দেয়ার জন্য।
দেনমোহর ঃ ১৯৯৫ সালের রোজার ঈদে মুক্তিপ্রাপ্ত
ছবিগুলোর মধ্য অন্যতম ছবি ছিল শফি বিক্রম্পুরি পরিচালিত
‘দেনমোহর’ ছবিটি। যে ছবিতে ৩য়বার পর্দায় আগমন
ঘটে জনপ্রিয় সালমান – মৌসুমি জুটি। ঈদের ৩য় দিন
ছবিটি সিলেটের ‘মনিকা’ সিনেমা হলে দেখতে বন্ধুরা সহ ভিড়
জমাই। যথারীতি চির পরিচিত দৃশ্য । সালমান মৌসুমির
ছবি দেখতে সব শ্রেণীর দর্শকদের ভিড়।
শফি বিক্রমপুরি আমাদের দেশের প্রবীণ পরিচালকদের
একজন। যিনি বাণিজ্যিকছবির একজন সফল পরিচালক
হিসেবে পরিচিত। এর আগে একই পরিচালক ‘লেডি স্মাগলার’,
‘লেডি কমান্ডো’ লেডি ইন্সপেকটার’ ‘আজকের হাঙ্গামা’
নামক লেডি অ্যাকশন ছবির সিরিজ পরিচালক
হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেন। পরিচালকের পূর্বের ছবিগুলোর
অভিজ্ঞতা থেকে অনুমান করেছিলাম ছবিটা বোধ হয়
‘দেনমোহর’ নামক রীতিনীতির বিরুদ্ধে মৌসুমির কোন
প্রতিবাদী লেডি অ্যাকশন এর ছবি হবে । যাই হোক ছবি শুরু
হওয়ার সাথে সাথে জেনে গেলাম এটি একটি বিদেশী ছায়াছবির
নকল কিন্তু সেটা কোন দেশের ও কোন ছবির তা পরিচালক
উল্লেখ করেননি। ছবি শুরু হওয়ার কিছুক্ষণ পরে বুঝলাম
এটি বলিউড এর সালমান খান অভিনীত ৯০র শুরুর
একটি ব্যবসাসফল হিন্দি ছবির নকল। বুঝে গেলাম
যা ভেবে ঢুকেছিলাম সেটা নয়।
ছবির শুরুতেই মনোয়ার নামক জমিদার পুত্র সালমান
কে দেখার সাথেই সাথেই দর্শকের হাততালি, যেখানে তরুন
সালমান তাঁর চাচা ড্যানী সিডাক কে সাথে নিয়ে ‘বাহাদুর’
নামক এক তেজী ঘোড়াকে পোষ মানাতে ব্যস্ত।
যথারীতি স্মার্ট সালমান এর চেষ্টা অনেক কষ্টে সফল
এবং ঘোড়া সালমান কে নিয়ে অজানার উদ্দেশ্য ছুটতে থাকে।
এর সাথেই সাথেই নায়িকা মৌসুমি র পর্দায় আগমন
যেখানে সিলেটের জাফলং এলাকায় তিনি সখীদের সাথে নাচ ও
গানে ব্যস্ত। বুঝে গেলাম যে পাগলা ঘোড়া সালমান
কে নিয়ে ছুটতে ছুটতে জাফলং এসে গেছে। আমার
লিখা পড়ে অনেকে ভাবতে পারেন আমি রিভিউ
লিখতে বসেছি আসলে তা নয়। আমি শুধু পর্দায়
কিভাবে সালমান কে উপস্থাপন করেছিল শুরুতেই প্রবীণ
পরিচালক শফি বিক্রমপুরি সেটাই একটু তুলে ধরলাম। যার
উদ্দেশ্য ছিল যে দর্শকদের কাছে সালমান
কে পরিচালকরা সবসময় একটু
অন্যভাবে স্মার্টলি তুলে ধরতেন যেটা অন্য সব নায়কদের
ক্ষেত্রে খুব কম ঘটতো। সাধারনত পর্দায় নায়কদের
চিরচেনা আগমন দৃশ্য ছিল নায়িকার চিৎকারে আকাশ
থেকে উড়ে এসে পর্দায় প্রথম হাজির হতো নায়ক,
অথবা কোন বস্তিতে চাঁদাবাজী, সন্ত্রাসীদের আক্রমন আর
সেখানে অসহায় বস্তিবাসীর দোয়া ” হ্যাঁ আল্লাহ আমাদের
এই জালিমদের হাত থেকে বাঁচাও’ কবুল করতেই আকাশ
থেকে উড়ে এসে নায়ক বস্তিবাসিকে রক্ষা করে নিজের
আগমনী বার্তা দর্শকদের জানাতো। সেখানে সব
পরিচালকরাই সালমান কে এসব চিরচেনা দৃশ্য দিয়ে পর্দায়
দর্শকদের সামনে পরিচয় করিয়ে দিতেন না। সেখানে সালমান
একটু ভিন্ন।
হতে পারে তাঁরছবিগুলো হয়তো অ্যাকশনধর্মী ছিল না বলেই
এইভাবে পরিচালকরা সালমান কে পর্দায় আনতেন
অথবা হতে পারে সালমান এর স্মার্ট
ক্রেজকে কাজে লাগিয়ে একটু ভিন্ন ভাবে পর্দায় আনতেন।
শফি বিক্রমপুরীর আগের ছবিগুলো থেকে এই ছবিটি সম্পূর্ণ
ভিন্ন। আগে যেখানে শফির ছবিগুলো ছিল
অ্যাকশনে ঠাসা সেখানে ‘দেনমোহর’ পুরোই বিপরীত। দুই
জমিদার পুত্র কন্যার প্রেম ভালোবাসা, বিয়ে ও বিয়ের কাবীন
নিয়ে দুই জমিদারের জেদ ও অহংকারের
লড়াইয়ে সম্পর্কে ফাটল/ বিরহ এবং পরিশেষে ভুলবুঝাবুঝির
অবসান ঘটিয়ে দুই পরিবারের মিলন এই হলো ‘দেনমোহর’
ছবির কাহিনী সংক্ষেপ । আসলে ছবিটি ব্যবসাসফল হওয়ার
পেছনে দুটি কারন – ১) সালমান -মৌসুমি জুটির প্রেম ও
রাজীব – আহমেদ শরীফের শত্রুতা যেন ‘কেয়ামত
থেকে কেয়ামত’ ছবির মতো একটি রসায়ন এর ভ্রান্ত
ধারনা ২) খ্যাতিমান সঙ্গীত পরিচালক আলাউদ্দিন আলীর
সুরে গানগুলো। এই দুটি জিনিসকে পুজি করেই
ছবিটি ঈদে মুক্তি পাওয়ায় সুপারহিট তকমা লাগিয়ে নেয়।
উল্লেখ্য যে সালমান -মৌসুমির প্রথম ছবি যেটি ৯৩ এর
রোজার ঈদে মুক্তি পেয়েছিল এবং যেখানে রাজীব – আহমেদ
শরীফ এর শত্রুতার প্রতিশোধের জেদ ছিল ঠিক ২ বছর পর
একই সময়ে একই মুক্তি পাওয়া ও মুল চরিত্র গুলো একই
ধরনের হওয়াতে দর্শক ভেবেছিল হয়তো ‘কেয়ামত
থেকে কেয়ামত’ ছবির মতোই কোন বিয়োগাত্মক প্রেম
কাহিনী নির্ভর ছবি ‘দেনমোহর’।
এখানে গভীরভাবে পর্যালোচনা করলে পরিচালকের কৌশলের
প্রশংসা করতেই হয়। ছবির কাহিনীর ধরন,
পাত্রপাত্রী নির্বাচন , মৌলিক গান , মুক্তির সময় ও
বিজ্ঞাপনের ধরন সব ,মিলিয়ে পরিচালক একটি কৌশল
অবলম্বন করেছেন । বাংলাদেশ বেতারে ছবির নিয়মিত ১০
মিনিটের বিজ্ঞাপনে পরিচালক বারবার সালমান – মৌসুমির
প্রেম ও পারিবারিক দ্বন্দ্ব কে উপস্থাপন এবং কাহিনীর
সমাপ্তি সম্পর্কে দর্শকদের অন্ধকারে রাখার
চেষ্টা পুরোটাই সফল।
এখানে সালমান জমিদারের পুত্র হিসেবে বেশ ভালো অভিনয়
করেছেন যিনি জিদি, রাগী ও অহংকারী পিতার সন্তান
হিসেবে পুরোটাই সফল। যে একদিকে পিতার দুটি গুন জিদ ও
রাগ পেলেও অহংকারী স্বভাবটা পায়নি। সব কিছুতেই সফল
হওয়ার জিদ, অন্যায়ের
বিরুদ্ধে সাথে সাথে গর্জে উঠা এবং মানুষকে সমানভাবে বিচার
করে নিরহংকার ভাবে মেশা ব্যক্তিত্বসম্পূর্ণ এক বলিষ্ঠ
যুবক। যার কারনে দর্শক ছবিটি পুরো শেষ করেই হল
থেকে বেরিয়েছিল।
ছবিটির গানগুলো ছিল সেই সময়ে খুবই জনপ্রিয় গান ।
বিশেষ করে খালিদ হাসান মিলু ও সাবিনা ইয়াসমিন এর
কণ্ঠের শুধু একবার শুধু একবার বলো ভালোবাসি ‘ গানটি ছিল
চরম।
এছাড়া মৌসুমি ও তাঁর সখিদের নিয়ে প্রথম গান,
মৌসুমিকে দেখার পর প্রেম নিবেদনের গানটি ছিল অন্যতম।
ছবিটি ছিল ‘যমুনা ফিল্মস’ এর প্রযোজনায় ও ‘বন্ধন
বানীচিত্র’এর পরিবেশনায় নির্মিত ছবি। যার ব্যবসার দরুন
পরপর একটানা তিনটি সুপারহিট ছবি উপহার দিলো ‘সালমান
– মৌসুমি’ জুটি যা চলচ্চিত্রে তাঁদের আসন কে আরও
সুসংগঠিত করে। ছবিতে কিছু সামান্য অসংগতি ও
ত্রুটি থাকা সত্ত্বেও পরিচালক শফি বিক্রমপুরী বেশ
ভালভাবেই সফল ও সার্থক হয়েছেন এই কথা বিনা বাক্য
মেনে নেয়া যায়।
যারা ছবিটি দেখেননি তাঁরা ছবিটি দেখে নিতে পারেন অবসরের
নির্মল বিনোদনের জন্য ।
সালমানের অভিনীত সবগুলো ছবিই মুক্তি পাওয়া মাত্রই
আমার হলে দেখা । কারন ৯০ দশকের অন্য সব কিশোর
তরুণদের মতো আমি ও আমার বন্ধুরা তখন বাংলা চলচ্চিত্র
রোগে আক্রান্ত । সালমানের ছবি সম্পর্কে বলতে গেলে এই
লিখা আরও বিশাল আকার ধারন করবে যা পাঠকের মনযোগ
বিচ্যুত হতে পারে ।
মাত্র তিনবছরের ক্যারিয়ারে প্রয়াত সালমান যে সকল
খ্যাতিমান ও গুণী পরিচালকদের ছবিতে কাজ করেছিলেন
তাদের নাম ও ছবির তালিকা – সোহানুর রহমান সোহান
(কেয়ামত থেকে কেয়ামত), শিবলি সাদিক –
(অন্তরে অন্তরে, আনন্দ অশ্রু ও মায়ের অধিকার), জহিরুল
হক ( তুমি আমার ও সুজন সখী), গাজী মাজহারুল আনোয়ার
(স্নেহ), শফি বিক্রম্পুরি ( দেনমোহর), দিলিপ সোম
(মহামিলন), এম এম সরকার (চাওয়া থেকে পাওয়া, প্রেম
পিয়াসি), বাদল খন্দকার ( স্বপ্নের পৃথিবী), হাফিজউদ্দিন
( আঞ্জুমান), দেলোয়ার জাহান ঝনটু ( কন্যাদান) , মালেক
আফসারি ( এই ঘর এই সংসার), এম এ খালেক ( স্বপ্নের
পৃথিবী), জীবন রহমান (প্রেমযুদ্ধ), মোহাম্মদ হান্নান
(বিক্ষোভ), মোহাম্মদ হোসেন (প্রিয়জন), মতিন রহমান
(তোমাকে চাই) ,শাহ আলম কিরন ( বিচার হবে), জাকির
হোসেন রাজু ( জীবন সংসার) তমিজ উদ্দিন
রিজভী (আশা ভালোবাসা) ।।
যে সকল গুণী ও খ্যাতিমান পরিচালকদের সাথে কাজ
করতে পারেননি বা করার সুযোগ হয়নি তাঁরা হলেন – কামাল
আহমেদ, এ জে মিন্টু, দেওয়ান নজরুল, মোতালেব হোসেন,
দিলীপ বিশ্বাস, রায়হান মুজিব, ফজল আহমেদ বেনজীর ,
কাজী হায়াত, শহিদুল ইসলাম খোকন, মোস্তফা আনোয়ার,
চাষি নজরুল ইসলাম, আমজাদ হোসেন, আবুল খায়ের বুলবুল,
অশোক ঘোষ, নাদিম মাহমুদ, সিদ্দিক জামাল নানটু,
ইস্পাহানি আরিফ জাহান, নূর হোসেন বলাই, মমতাজুর রহমান
আকবর, সৈয়দ হারুন, আওকাত হোসেন, মনোয়ার খোকন,
উত্তম আকাশ, ওয়াকিল আহমেদ, বেলাল আহমেদ, এফ আই
মানিক, আজিজুর রহমান বুলি, শেখ নজরুল ইসলাম, আলমগীর
কুমকুম ।।
যাদের ছবি করতে পারেনি উনাদের
যদি একটি করে ছবি সালমান জীবিত অবস্থায় উপহার
দিয়ে যেতে পারতো তাহলে বাংলা চলচ্চিত্রের
ইতিহাসে আরও কিছু কালজয়ী ছবি দর্শকরা পেতো। এই
আফসোস রয়ে যাবে সালমান ভক্তদের চিরকাল।
তথ্যসুত্র -ইন্টারনেট …


Posted via BN24Hour

No comments: