Headlines



gazitv2

w41j

gazitv

Saturday, November 29, 2014

আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে বাংলার মানুষ শান্তিতে থাকে (প্রধানমন্ত্রীর পূর্ণ বক্তব্য)

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন,
আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে বাংলার মানুষ
শান্তিতে থাকে। কিন্তু বিএনপি যখনই ক্ষমতায়
আসে তখনই সন্ত্রাসের জন্ম দেয়।
তারা সন্ত্রাসের
রাজনীতিতে দেশকে শ্মশানে পরিণত
করে।
তিনি বলেন, ‘বিএনপি সরকারের
আমলে হবিগঞ্জে আওয়ামী লীগের
অনেক নেতা খুন হয়েছেন।
তারা সংখ্যালঘুদের নির্যাতন করেছে। শুধু তাই
নয়, বিএনপি ক্ষমতায় এসে সারাদেশে একই
সঙ্গে ৫শ’ স্থানে বোমা ও গ্রেনেড
হামলা করেছিল। যুবসমাজের হাতে অস্ত্র
তুলে দিয়েছিল।
শনিবার বিকেল সোয়া ৩টার
দিকে হবিগঞ্জের নিউ ফিল্ড
মাঠে জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত
জনসভায় ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ
কথা বলেন।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার
সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন,
‘বিএনপি রাজাকার। তারা যুদ্ধাপরাধীদের
হাতে জাতীয় পতাকা তুলে দিয়েছিলো।
যুদ্ধাপরাধের দায়ে আজ যাদের
শাস্তি হয়েছে, তাদের হাতেই
খালেদা জিয়া মন্ত্রিত্ব তুলে দিয়েছিলেন।
এর মাধ্যমে তিনি লাখো শহীদের রক্তের
সঙ্গে বেইমানি করেছেন। তাই
তিনি দেশের শত্রু। জনগণের শত্রু।
শহীদদের রক্তের সঙ্গে বেইমানি করার
জন্য একদিন জনগণের আদালতে তারও বিচার
হবে।’
জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি হবিগঞ্জ-লাখাই
আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট মো.
জাহির জনসভায় সভাপতিত্ব করেন। সাধারণ
সম্পাদক বানিয়াচং-আজমিরীগঞ্জ আসনের
সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট আব্দুল মজিদ খান
জনসভা পরিচালনা করেন।
প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের
সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিএনপির দুই
গুণ, সন্ত্রাস ও মানুষ খুন। বিএনপি-জামায়াত
ক্ষমতায় থাকলে দেশের মানুষ
অশান্তিতে থাকে। জনগণ অর্থ উপার্জন
করে, আর বিএনপি সেই টাকা পাচার
করে দেয়। বিএনপি ২০০১ সালে ক্ষমতায়
এসে কোনো কাজ করতে পারেনি।
আওয়ামী লীগ যে কাজ রেখে গিয়েছিল,
তা বিএনপি শেষ করতে পারেনি। ২০০৯
সালে ক্ষমতায় এসে আওয়ামী লীগ
সেগুলো সম্পূর্ণ করছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিএনপি ক্ষমতায়
এসে সারা দেশের মত হবিগঞ্জেও নির্যাতন
চালিয়েছিল। সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা করেছিল।
আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর
দেশের মানুষের
মনে শান্তি এনে দিয়েছিল। হবিগঞ্জের
যোগাযোগ ব্যবস্থা খারাপ ছিল।
আওয়ামী লীগ সরকার এসে এখানকার সার্বিক
উন্নয়ন করেছে। নৌকা মার্কায় ভোট
দেওয়ার জন্য এখানকার বাসিন্দাদের ধন্যবাদ
জানাই।’
তিনি বলেন, ‘হবিগঞ্জের
মাটিতে কিবরিয়াকে গ্রেনেড
হামলা করে হত্যা করা হয়েছে। এর বিচার
হবে। বিএনপির নির্বাচন বর্জনের
প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, ‘এক
অর্থে ভালোই হয়েছে।
পার্লামেন্টে এখন খিস্তি-খেউর শোনা যায়
না। সংসদ ভদ্রভাবে চলছে। সংসদের
প্রতি মানুষের আস্থা ফিরে এসেছে। সংসদ
ভালোভাবে চলছে।’
শেখ হাসিনা ৫ জানুয়ারির ভোট
ঠেকাতে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটের
সহিংস আন্দোলনের সমালোচনা করেন।
তিনি বলেন,
বিএনপি নেত্রী বক্তৃতা দিয়ে বেড়ান, তার
সময়ে নাকি দেশে উন্নয়নের জোয়ার
বয়ে ছিল। তিনি জোয়ার দেখাতে পারেন
আর না পারেন, ভাটার টান দেখিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী ডিজিটাল বাংলাদেশের
উন্নয়নের কথা তুলে ধরে বলেন, ‘এখন
গ্রামে বসে মানুষ আউটসোর্সিং-এর
মাধ্যমে ২০ হাজার টাকা থেকে ৫০ হাজার
টাকা পর্যন্ত আয় করছে।
কাউকে না খেয়ে মরতে হচ্ছে না।
বর্তমানে আমাদের প্রচুর খাদ্য মজুদ
রয়েছে। বিদেশে চাল
রপ্তানী করতে পারছি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ
সরকার ক্ষমতায় আসায় হবিগঞ্জের ব্যাপক
উন্নয়ন হয়েছে। আজকে হবিগঞ্জের
অনেকগুলো প্রতিষ্ঠান উদ্বোধন
করা হয়েছে। এর ধারাবাহিকতায়
শায়েস্তাগঞ্জকে উপজেলা করা হবে।’
লাখো লোকের এ সভায় বক্তব্য রাখেন
সাবেক সমাজকল্যাণমন্ত্রী এনামুল হক
মোস্তফা শহীদ, হবিগঞ্জ-৪ (মাধবপুর-
চুনারুঘাট) আসনের সংসদ সদস্য
অ্যাডভোকেট মাহবুব আলী, কেন্দ্রীয়
যুবলীগ সভাপতি ওমর ফারুক চৌধুরী, সাধারণ
সম্পাদক হারুনুর রশীদ, আওয়ামী লীগ
জাতীয় পরিষদ সদস্য শহীদ উদ্দিন চৌধুরী,
সংসদ সদস্য সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত, সংসদ সদস্য
আমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরী,
উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল হাই, মুশফিউল
আলম আজাদ, আলমগীর চৌধুরী,
জেলা যুবলীগ সভাপতি আতাউর রহমান
সেলিম, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক
সম্পাদক জাকির হোসেন চৌধুরী অসীম,
যুগ্ম সম্পাদক মর্তুজ আলী, সাংগঠনিক সম্পাদক
মশিউর রহমান শামীম, হবিগঞ্জ পৌর
আওয়ামী লীগ
সভাপতি অ্যাডভোটে নিলাদ্রী শেখর
পুরকায়স্থ টিটো, জেলা শ্রমিকলীগের
সাধারণ সম্পাদক ফরিদ আহমেদ রাজু,
জেলা কৃষকলীগ সভাপতি হুমায়ূন কবির রেজা,
জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি কামরুল
হাসান, জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি ডা. ইসতিয়াজ
রাজ চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান।
জনসভার শুরুতে কোরআন তেলাওয়াত
করেন জেলা ওলামা লীগ
সভাপতি মওলানা আব্দুল মজিদ। গীতা পাঠ
করেন প্রমথ সরকার। বাইবেল পাঠ করেন
অ্যাডওয়ার্ড সাইমন সরকার ও ত্রিপিটক পাঠ
করেন শীল ভদ্র মহাথেরো।
মধ্যহ্ন বিরতির পর সভার
শুরুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হবিগঞ্জ
নিউফিল্ডের জনসভাস্থলে আধুনিক স্টেডিয়াম,
ডায়াবেটিক হাসপাতাল, নার্সিং ইনস্টিটিউট, নতুন
জেলা পরিষদ অডিটরিয়াম ও কমিউনিট সেন্টার,
জেলা শিল্পকলা একাডেমী ভবন, সার্ভার
স্টেশন, আলেয়া জাহির কলেজ,
জেলা কমান্ড্যান্ট, শায়েস্তাগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস
স্টেশন, আনসার ও ভিডিপি কার্যালয় ভবনের
উদ্বোধন এবং শাহজিবাজার (৩৩০ মেগাওয়াট)
কম্বাইন্ড সাইকেল পাওয়ার প্ল্যান্টের
ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
হবিগঞ্জের নবীগঞ্জে বিবিয়ানায়
গ্যাসক্ষেত্র সম্প্রসারণ প্রকল্প এবং বিবিয়ানা-
ধনুয়া গ্যাস পাইপলাইন উদ্বোধন করেন
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এছাড়াও ঢাকা-
সিলেট মহাসড়ক থেকে বিবিয়ানা বিদ্যুৎ
কেন্দ্র পর্যন্ত সংযোগ সড়ক
এবং নবীগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স
স্টেশন উদ্বোধন করেন। শনিবার দুপুর
পৌণে ১২টায় তিনি এসব প্রকল্পের উদ্বোধন
ও ভিত্তিস্থাপন করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ
হাসিনাঢাকাথেকেহেলিকপ্টারেরওয়ানাহয়েদুপুরেনবীগঞ্জের
বিবিয়ানায় পৌঁছান।
শেভরণ পরিচালিত বাংলাদেশের
সবচেয়ে বড় গ্যাসক্ষেত্র
বিবিয়ানা থেকে এখন প্রতিদিনি ৯০০ মিলিয়ন
ঘনফুটের বেশি গ্যাস উত্তোলন হচ্ছে।
জালালাবাদ ও মৌলভীবাজারেও গ্যাস
তুলছে শেভরণ।
শেভরণ কর্মকর্তারা জানান, বিবিয়ানার সম্প্রসারণ
প্রকল্প থেকে প্রতিদিন প্রায় ৩০০ মিলিয়ন
ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন করা হবে। এর
ফলে শেভরণ পরিচালিত তিনটি ক্ষেত্র
থেকে প্রতিদিন গ্যাস উৎপাদনের পরিমাণ
দাঁড়াবে প্রায় ১৪০০ মিলিয়ন ঘনফুট। শেভরণ
আরও জানায়, বাংলাদেশে বর্তমানে প্রতিদিন
প্রায় ২৪০০ ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন হলেও
চাহিদা আরও ৫০০ মিলিয়ন ঘনফুটের বেশি।
প্রধানমন্ত্রী বিবিয়ানা দক্ষিণ ৪০০ মেগাওয়াট
ক্ষমতাসম্পন্ন কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎ
কেন্দ্র, বিবিয়ানা-৩৪০০ মেগাওয়াট
ক্ষমতা সম্পন্ন কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎ
কেন্দ্রের ভিত্তিস্থাপন করেন
এবং বিবিয়ানা-২৩৪১ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন
কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎ কেন্দ্র পরিদর্শন
করেন।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘গভীর
সমুদ্র থেকে গ্যাস, তেল উত্তোলনের
উদ্যোগ নেওয়া হবে। প্রাকৃতিক সম্পদ
আহরণের ক্ষেত্রে বিদেশিদের ওপর
নির্ভর না করে আমাদের নিজেদের
উদ্যোগ নিতে হবে। সেই
লক্ষ্যে শক্তি সঞ্চয়
করতে হবে এবং প্রয়োজনীয়
ব্যবস্থা নিতে হবে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা মিয়ানমার ও
ভারতের সঙ্গে সমুদ্রসীমা নির্ধারণ
করেছি। উভয়ক্ষেত্রেই আমাদের সমুদ্র
জয় হয়েছে। এখন আমাদের কাজ
হবে নিজেদের সীমানায় প্রাকৃতিক
সম্পদের খোঁজ ও আহরণ করা।

No comments: