Headlines



gazitv2

w41j

gazitv

Friday, September 5, 2014

বিশ্ব শিক্ষক দিবসে সকল শিক্ষকদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা

বিশ্ব শিক্ষক দিবসে সময়ের
কণ্ঠস্বর পরিবার ও পাঠকদের পক্ষ
থেকে সকল শিক্ষকদের
প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা
প্রবীর বিশ্বাস:
সময়ের কণ্ঠস্বর : শিক্ষক-শিক্ষিকা আমাদের বাবা-মায়ের
মত। বাবা-মা যেমন সন্তানদের ভালবাসা-স্নেহ-
মমতা দিয়ে বড় করেন, ঠিক তেমনি শিক্ষকেরা তাঁদের
শিক্ষার আলো দিয়ে আমাদের ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার জন্য
প্রাণপণ চেষ্টা করে যান। আর স্নেহ, মমতা,
ভালবাসাতো বটেই। তাঁদের শিক্ষার আলো
যেমনি আমাদের সামনের পথ চলাকে আরও সুদৃঢ় করে,
তেমনি তাদের স্নেহ, মমতা, ভালবাসা আমাদের মত
শিক্ষার্থীদের অনুপ্রাণিত করে। ৫ অক্টোবর বিশ্ব শিক্ষক
দিবস। দিবসটি উপলক্ষে বিশ্বব্যাপী শিক্ষকদের
প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হচ্ছে। শিক্ষকরা যাতে ভবিষ্যত
প্রজন্মের চাহিদা পূরণ করতে পারে তা নিশ্চিত করতেই
দিবসটি পালন করা হয়। বিশ্বব্যাপী শিক্ষক ইউনিয়নসমূহের
ফেডারেশন এডুকেশন ইন্টারন্যাশনাল (ইআই) ও এর
৪০১টি সংগঠন এ দিবসের ব্যাপক
স্বীকৃতি অর্জনে ভূমিকা রেখেছে। এ সংগঠন শিক্ষা পেশার
অবদানকে তুলে ধরে প্রতিবছর জনসচেতনতা মূলক প্রচার
চালায়। এডুকেশন ইন্টারন্যাশনাল-এর মতে, বিশ্ব শিক্ষক
দিবসকে সব দেশে স্বীকৃতি এবং উদযাপিত হওয়া উচিত।
শিক্ষকদের অধিকার, করণীয় ও মর্যাদা সুরক্ষায়
ইউনেস্কোর উদ্যোগে ১৯৬৬ সালের ৫ অক্টোবর
প্যারিসে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে ১৪৫টি সুপারিশ গৃহীত হয়।
এসব সুপারিশের মধ্যে শিক্ষকদের মৌলিক ও অব্যাহত
প্রশিক্ষণ, নিয়োগ ও পদোন্নতি, চাকুরির নিরাপত্তা,
শৃঙ্খলা বিধানের প্রক্রিয়া, পেশাগত স্বাধীনতা, কার্যক্রম
পর্যবেক্ষণ ও মূল্যায়ন, দায়িত্ব ও অধিকার,
শিক্ষা সংক্রান্ত নীতিনির্ধারণী প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ,
কার্যকর শিক্ষাদান ও শিখনের পরিবেশ এবং সামাজিক
নিরাপত্তা অন্যতম। পরবর্তী সময়ে আন্তর্জাতিক শ্রম
সংস্থা (আইএলও) উপর্যুক্ত সুপারিশসমূহ অনুমোদন করে।
আজ বিশ্ব শিক্ষক দিবস। এইদিবসে সকল শিক্ষকদের জানাই
প্রভুত শুভেচ্ছা। তারা হয়েউঠুন জাতির শ্রদ্ধার পাত্র ।
তাদের হাতে ফুটুক লক্ষ কোটি গোলাপ। তাদের মেধায়
কল্যানে যেনো দেখি আলোর মিছিল যাচ্ছে দেশ
থেকে দেশান্তরে। সময়ের কণ্ঠস্বর.কম পত্রিকা পরিবারের
পক্ষথেকেও জানাই শুভেচ্ছা।
প্রধান পৃষ্ঠপোষক আজিজুর রহমান আজিজ
১৯৯৩ সালে প্যারিসে অনুষ্ঠিত ইউনেস্কোর ২৬তম
অনুষ্ঠানে ৫ অক্টোবর দিনটিকে বিশ্ব শিক্ষক দিবস
হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এরপর ১৯৯৪ সাল
থেকে প্রতি বছর ৫ অক্টোবর “বিশ্ব শিক্ষক দিবস”
হিসেবে পালিত হচ্ছে। কিন্তু এত বছর পরেও বাংলাদেশের
শিক্ষকদের প্রকৃত মর্যাদা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।
এছাড়া আমরা জানি শিক্ষকরা নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও
তাদের শিক্ষাদান অব্যাহত রেখেছেন। তাই শিক্ষকদের
পাশে আমাদের দাঁড়াতে হবে, যাতে করে তারা তাদের দায়িত্ব
পালন করতে পারে আরও সাফল্যের সাথে।
ইউনেস্কোর মতে, শিক্ষা ও উন্নয়নে শিক্ষকরা বিশেষ
ভূমিকা রাখছেন। মানুষের মধ্যে সচেতনতা, উপলব্ধি সৃষ্টি ও
শিক্ষকদের ভূমিকার স্বীকৃতিস্মারক হিসেবে দিবসটি খুবই
গুরুত্বপূর্ণ। মানবিক বিপর্যয় বা বৈশ্বিক অর্থনৈতিক
সংকটে আক্রান্ত হয়েও সামাজিক, অর্থনৈতিক ও
বুদ্ধিবৃত্তিক বিনির্মাণে শিক্ষকরা তাদের
ভূমিকা রেখে চলেছেন। অপরদিকে শিক্ষকদের সামাজিক
মর্যাদা ও চাকরির নিশ্চয়তা নেই বলেই অনেক
মেধাবী শিক্ষার্থীরা এই পেশায় আসতে চান না।
ফলে শিক্ষার্থীরা সুশিক্ষা অর্জন করতে পারছে না। শুধু বই
পড়ে শিক্ষা লাভ করে সুনাগরিক হওয়া যায় না। একজন
প্রকৃত সুনাগরিক গড়ে তুলতে হলে সুশিক্ষার প্রয়োজন।
সুশিক্ষার জন্য চাই সুশিক্ষক। মেধাবী শিক্ষক
ছাড়া সুশিক্ষা গ্রহণ সম্ভব নয়। মেধাবীদের এই পেশায়
আকৃষ্ট করতে হলে তাদের চাকরির নিরাপত্তা ও আর্থিক
নিশ্চয়তা প্রদান করতে হবে। একমাত্র শিক্ষকতা পেশায়
কোনো ঘুষ নেই। সুতরাং, একজন শিক্ষক যাতে তার পরিবার-
পরিজনের লেখাপড়া, অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থানের নূন্যতম
চাহিদা মেটাতে পারে তার দিকে লক্ষ্য রেখে শিক্ষকদের
জন্য প্রয়োজন পৃথক জাতীয় বেতন স্কেল। তাহলে একজন
শিক্ষকের কোচিং- প্রাইভেট-টিউশনির দিকে উৎসাহ
কমে যাবে। ইচ্ছে করে কেউ প্রাইভেট পড়ায় না। নিতান্তই
বাঁচার তাগিদে শিক্ষক প্রাইভেট পড়ায়।
শিক্ষার মান উন্নয়ন, শিখন প্রক্রিয়া উন্নয়ন, শান্তিপূর্ণ
সহাবস্থান এবং সমাজে বিদ্যমান বৈষম্য দূরীকরণের
মাধ্যমে দক্ষ মানবসম্পদ বিনির্মাণে শিক্ষকের
ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়া সমৃদ্ধ
জাতি গড়ে তুলতে শিক্ষকরা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ
ভূমিকা পালন করে থাকেন। তাই মানসম্মত শিক্ষা প্রদান ও
আলোকিত মানুষ গড়ার লক্ষ্যে পেশাগত দক্ষতা সম্পন্ন
বিপুল সংখ্যক শিক্ষক প্রয়োজন। এছাড়া পেশাগত ও
সামাজিক নানা সমস্যায় তারা জর্জরিত। সে কারণে পর্যাপ্ত
সংখ্যক শিক্ষক নিয়োগ ও তাদের পেশাগত মান
উন্নয়নে শুরুতেই যথাযথ প্রশিক্ষণ নিশ্চিতকরণ ও
তা অব্যাহত রাখা, বিদ্যালয়ে শিক্ষার অনুকূল পরিবেশ
তৈরি এবং সঠিকভাবে তদারকির ব্যবস্থা নিশ্চিত করার জন্য
বাংলাদেশ সরকারকে উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
বর্তমান সরকার ঘোষিত ‘রূপকল্প-২০২১’ এর অন্যতম
লক্ষ্য ২০১৪ সালের মধ্যে নিরক্ষরমুক্ত বাংলাদেশ গড়া,
যা অত্যন্তসময়োপযোগী। এ লক্ষ্য অর্জনে সকল স্তরের
নাগরিককে একযোগে এগিয়ে আসতে হবে।
স্বাক্ষরতা অর্জনের মাধ্যমে শুধু লেখাপড়া নয়, মানুষের
জ্ঞান, সচেতনতা ও দক্ষতা বৃদ্ধি পায় যা সুস্থ সমাজ ও
উন্নত দেশ গঠনে কার্যকরী ভূমিকা রাখে। দেশের সামগ্রিক
উন্নয়ন এবং গণতন্ত্রকে সুদৃঢ় করতে সুশিক্ষিত ও দক্ষ
মানবসম্পদের কোন বিকল্প নেই। বর্তমান সরকার
শিক্ষাক্ষেত্রে বৈষম্য দূর করে শিক্ষার গুণগত মানোন্নয়ন
এবং দেশের নিরক্ষর জনগোষ্ঠীকে কর্মমুখী শিক্ষায়
শিক্ষিত করে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি করতে বিভিন্ন
কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে হবে। এর আলোতে সরকার
ইতোমধ্যে ‘জাতীয় শিক্ষানীতি-২০১০’ এবং ‘ষষ্ঠ
পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা’ প্রণয়ন করেছে। সেই পরিকল্পনার
মধ্যদিয়েই শিক্ষকদের আরও সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত
করতে হবে। অবশ্য বাংলাদেশ সরকার গত দুই
দশকে প্রাথমিক শিক্ষায় বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য
অগ্রগতি সাধিত হলেও এটি এখনো সার্বজনীন, গণমুখী ও
বৈষম্যহীন নয়।
দিবসটি পালনের উদ্দেশ্য হচ্ছে জাতীয় ও আঞ্চলিক
পর্যায়ে শিক্ষাসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিশ্ব শিক্ষক
দিবসে শিক্ষকদের মর্যাদা ও মানসম্মত
শিক্ষা বাস্তবায়নে শিক্ষকের গুরুত্ব সম্পর্কে অবহিত করা,
মানসসম্মত শিক্ষা তথা সকল শিশুর জন্য প্রাথমিক
শিক্ষা নিশ্চিতকরণে শিক্ষকদের দায়িত্ব ও কর্তব্য
সম্পর্কে আলোকপাত করা এবং প্রবীণ শিক্ষকদের
অভিজ্ঞতাকে জানা ও কাজে লাগানো।
পরিশেষে বলতে চাই এক জন মানব সন্তানকে শিক্ষিত
করে পূর্ণাঙ্গ মানুষ হিসেবে গড়ে তোলে বলেই
শিক্ষককে বলা হয় মানুষ গড়ার কারিগর। মা-বাবা যেমন
শিশুকে জন্মদান করে, লালন করে, তেমনি শিক্ষক তার সকল
মেধা, শ্রম ও সাধনা দিয়ে তাকে পূর্ণাঙ্গ মানুষ
হিসেবে গড়ে তোলে। তাই, বাংলাদেশের সকল শিক্ষকের
প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে এদেশের সকল শিশুর
জন্য মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে তাঁদের
ভূমিকার কথা তুলে ধরতে আমাদের এই আয়োজন।

posted from Bloggeroid

No comments: