নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের
মেয়র সেলিনা হায়াৎ
আইভী বলেছেন, নারায়ণগঞ্জের মানুষ
একটি পরিবারের হাতে জিম্মি।
এখানে যারাই হত্যা-গুমের
বিরুদ্ধে কথা বলছে, তাদের ওপরই
নির্যাতনের খড়্গ নেমে আসছে।
ওয়ার্ড কাউন্সিলর, আইনজীবীসহ সাত
খুনের ঘটনার পটভূমিতে গত শুক্রবার
একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি এসব
কথা বলেন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন
প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক সোহরাব
হাসান ও জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক শরিফুল
হাসান
সিটি করপোরেশন
নির্বাচনের সময় আপনি বলেছিলেন,
নারায়ণগঞ্জবাসীকে শান্তির শহর
উপহার দেবেন। আড়াই বছর পর
নারায়ণগঞ্জের অবস্থা কেমন?
এটাকে কি শান্তির শহর বলা যায়?
সেলিনা হায়াৎ আইভী: না,
নারায়ণগঞ্জকে শান্তির শহর
বলা যাবে না। অসম্ভব অশান্ত
একটি শহরে পরিণত হয়েছে। খেয়াল
করে দেখবেন, ২০১১ সালের ৩০
অক্টোবর যখন নারায়ণগঞ্জ
সিটি করপোরেশনের নির্বাচন হয়,
তার পর থেকে ২০১২
সালটা মোটামুটি ভালো ছিল।
কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
২০১৩ সালের ৮ মার্চ তানভীর
মুহাম্মদ ত্বকী হত্যার পর
থেকে নারায়ণগঞ্জ অশান্ত হয়ে ওঠে।
এর পর থেকে জেলায় শিশু
হত্যা বেড়ে যায়। এ পর্যন্ত জেলায়
২০-২২ জন শিশু হত্যাকাণ্ডের শিকার
হয়েছে। আমি মনে করি, ত্বকী হত্যার
বিচার হলে এতগুলো শিশু হত্যার
ঘটনা ঘটত না। নারায়ণগঞ্জ অশান্ত
হওয়ার পেছনে ত্বকী হত্যা একটি বড়
কারণ। আরও অনেক কারণ রয়েছে। তার
মধ্যে একটি কারণ মাদক।
পুরো নারায়ণগঞ্জে মাদকের ছড়াছড়ি।
প্রশাসনের নাকের ডগায়
এখানে মাদক ব্যবসা চলছে।
গত সপ্তাহে সাতজনকে অপহরণ ও
হত্যার যে ঘটনাটি ঘটেছে,
সেটি নারায়ণগঞ্জবাসীর জন্য
অত্যন্ত মর্মান্তিক।
কোর্টে হাজিরা দিতে এসে, আইনের
আশ্রয় নিতে এসে কেউ যদি অপহূত হন
এবং লাশ হয়ে ফিরে আসেন, এর
চেয়ে মর্মান্তিক আর কী হতে পারে।
৫ জানুয়ারি নির্বাচনের
পর সারা দেশের
পরিস্থিতি মোটামুটি শান্ত।
বিরোধী দলের আন্দোলন
বা রাজনৈতিক কর্মসূচি তেমন নেই।
সেখানে নারায়ণগঞ্জ হঠাৎ করেই
উত্তপ্ত হওয়ার কারণ কী?
আইভী: আপনি ঠিকই বলেছেন।
সারা দেশ অত্যন্ত শান্ত। কিন্তু
নারায়ণগঞ্জে যে দুজন সাংসদ
রয়েছেন,
তাঁরা কি নারায়ণগঞ্জকে শান্ত
থাকতে দিচ্ছেন? ৫ জানুয়ারির পর
থেকে তাঁরা যে ধরনের উসকানিমূলক
বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছেন,
সেটা নারায়ণগঞ্জকে অশান্ত করার
জন্য যথেষ্ট। তাঁদের কর্মকাণ্ডও এর
জন্য দায়ী।
ক্যাঙারু পারভেজ নামে শামীম
ওসমানের এক কর্মী গুলশান
থেকে অপহূত হন গত বছরের ৬ জুলাই।
এরপর পারভেজের স্ত্রী থানায়
জিডি করলেন, যাতে বলা হয়েছিল,
ডিবি পুলিশ তাঁকে তুলে নিয়ে গেছে।
ফিরোজ নামে একজন সার্জেন্ট সেই
ঘটনা দেখেছেন
বলে তিনি জিডিতে উল্লেখ করেছেন।
কিন্তু ঘটনার দুই মাস পর আমার
কর্মী আবু সুফিয়ান, কাউন্সিলর শওকত
হোসেন, তপনকে আসামি করা হলো। আর
চার নম্বর আসামি করা হলো আমার
ভাই উজ্জ্বলকে, যিনি মহানগর
যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক, আর পাঁচ
নম্বর আসামি করা হলো আমার
ভাগনে লিমনকে, সাত নম্বর
আসামি হলো মামাতো ভাই রেজাউল
করিম। পারভেজকে কারা অপহরণ
করেছে, সবাই জানেন। তার পরও কেন
মিথ্যা মামলা দিয়ে আমার ভাই ও
কর্মীদের ওপর অত্যাচার করা হচ্ছে?
প্সা ত হত্যাকাণ্ডের সাত
দিন পার হলো। এখন পর্যন্ত কেউ
গ্রেপ্তার হয়নি।
এমনকি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিন
চিহ্নিতও করতে পারেনি।
বিষয়টি কীভাবে দেখছেন?
আইভী: ঘটনার পরপরই যদি অভিযান
চালানো হতো,
তাহলে হয়তো মানুষগুলোকে জীবিত
উদ্ধার করা যেত। যেটি ত্বকীর
ক্ষেত্রেও হয়েছিল। আমরা বারবার
অনুরোধ করেছিলাম। কিন্তু
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ‘খুঁজছি’,
‘দেখছি’ ইত্যাদি বলে সময়ক্ষেপণ
করল। আমি বলব, এখানে প্রশাসন
পক্ষপাতদুষ্ট ছিল।
প্রশাসনে যাঁরা আছেন,
তাঁরা প্রভাবশালীদের কথায়
ওঠাবসা করেন। বিগত ৩০ বছর
নারায়ণগঞ্জে এটাই চলে আসছে।
যে দলই ক্ষমতায় থাকুক না কেন,
প্রশাসনের
কর্মকর্তারা প্রভাবশালী পরিবার
দ্বারা প্রভাবিত হয়ে কাজ করেছেন।
প্তাহলে কি বলতে চান,
প্রশাসন পেশাগত দায়িত্ব
পালনে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে?
আইভী: এই যে একের পর এক
হত্যাকাণ্ড ঘটছে, মানুষ গুম
হচ্ছে কিন্তু প্রশাসন এর রহস্য
উদ্ঘাটন করতে পারছে না,
আসামিদের ধরতে পারছে না।
তাতে কি প্রমাণিত হয়
না যে তারা ব্যর্থ? আমি বলব,
পুরোপুরি না হলেও প্রশাসন ৮০
শতাংশ ব্যর্থ। আবার অনেক সময়
প্রশাসনের সদিচ্ছা থাকলেও
প্রভাবশালীদের চাপে কিছু
করতে পারে না। এখানে অনেক সৎ
কর্মকর্তা এলেও স্বাধীনভাবে কাজ
করতে পারেননি।
বাধা দেওয়া হয়েছে।এই সংকটময়
মুহূর্তে নারায়ণগঞ্জের সাধারণ
নাগরিকদের প্রতি আপনার আহ্বান
কী?
আইভী: আমি তাঁদের একটি কথাই
বলতে চাই, ভীত হবেন না।
অপরাধীরা যত ক্ষমতাবান হোক
না কেন, একসময়
তারা শাস্তি পাবেই। আর
নারায়ণগঞ্জের মানুষ তো এখন
প্রতিবাদ করতে শিখেছেন,
তাঁরা মাঠে নেমে এসেছেন। এটাই
আশার কথা।
এই অবস্থায়
আপনি নিজে কি নিরাপত্তাহীন বোধ
করছেন?
আইভী: আমি আমার জন্য নয়,
আমি কর্মীদের ব্যাপারে শঙ্কিত।
যাঁরা আমার পক্ষে নির্বাচন
করেছেন, তাঁদের বিভিন্ন
মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে।
জেলে পাঠানো হচ্ছে। বিশেষ
করে বন্দর থানা ও সিদ্ধিরগঞ্জ
থানায় আমার কর্মীদের
বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেওয়ার
এবং তুলে নেওয়ার
পাঁয়তারা চলছে বলে শুনেছি।
এই পরিপ্রেক্ষিতে আমি স্থানীয়
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর
কাছে এবং আমার দলের ঊর্ধ্বতন
কর্তৃপক্ষের কাছে আহ্বান থাকবে,
নারায়ণগঞ্জবাসীকে উদ্ভূত
পরিস্থিতি থেকে মুক্তি দেওয়া হোক।
ব্যক্তিগতভাবে আমি কারও
বিরুদ্ধে নই। বৃহস্পতিবার আমাদের
দলের প্রচার সম্পাদক হাছান মাহমুদ
বলেছেন, নারায়ণগঞ্জে কিছু হলেই
আমি নাকি শামীম ওসমানের
বিরুদ্ধে কথা বলি।
আমি তাঁকে অনুরোধ করব, তিনি যেন
নারায়ণগঞ্জে এসে সাধারণ মানুষের
সঙ্গে কথা বলেন, তাঁদের
কথা শোনেন, বুঝতে চেষ্টা করেন
এখানে কী হচ্ছে।
গত এক-দেড় বছরে শামীম ওসমান
যেসব বক্তব্য দিয়েছেন, তার ভিডিও
ক্লিপগুলো যদি খতিয়ে দেখেন,
তাহলেই দেখতে পারবেন,
তিনি কী সব ভাষা ব্যবহার করেন।
তিনি কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের
সাধারণ সম্পাদককে অশ্লীল ভাষায়
কথা বলেছেন, মন্ত্রী রাশেদ খান
মেননকে কটূক্তি করেছেন, হাসানুল
হক ইনু সম্পর্কে যে মন্তব্য করেছেন,
সদ্যপ্রয়াত বর্ষীয়ান সাংবাদিক
এবিএম মূসা সাহেবকে যে গালাগাল
করেছেন, তার তুলনায় আমি তো কিছুই
না।
শামীম ওসমান বলেছেন,
নারায়ণগঞ্জের
মানুষকে নাকি চাইলেই
ওনারা পিঁপড়ার
মতো ডলা দিয়ে পোকামাকড়ের
মতো মেরে ফেলতে পারেন।
এটি কি একজন নেতার কথা হলো?
তিনি সারাক্ষণ নেত্রীর নাম
ভাঙাচ্ছেন, আওয়ামী লীগের
সাইনবোর্ড দেখাচ্ছেন। এসবের
মাধ্যমে তিনি দলেরই
(আওয়ামী লীগ) ক্ষতি করছেন। কারণ,
তাঁর কর্মকাণ্ডে নারায়ণগঞ্জের
সাধারণ মানুষ অতিষ্ঠ।
প্রথম আলো: নারায়ণগঞ্জের
আওয়ামী লীগের অবস্থা কী?
আইভী: নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগের
যাঁরা সাধারণ কর্মী, তাঁরা এসব
মেনে নিচ্ছেন না।
এখানে আওয়ামী লীগের
মধ্যে গ্রুপিং আছে।
সেটি থাকা অস্বাভাবিক নয়। কিন্তু
তাঁর (শামীম ওসমান) অমতে যদি কেউ
কথা বলেন, তাঁকেই জামায়াত-
বিএনপির লোক বানানোর
চেষ্টা করেন।
মাঠপর্যায়ের
কর্মীরা কি আপনার সঙ্গে আছেন?
আইভী: মাঠপর্যায়ের কর্মীরা আমার
সঙ্গে না থাকলে আমি লক্ষাধিক
ভোটের ব্যবধানে জয়ী হতে পারতাম
না। বিএনপি-জামায়াতের
সঙ্গে আমার যোগাযোগ
আছে বলে শামীম ওসমান যে অভিযোগ
করেছেন,
আমি সে ব্যাপারে তাঁকে চ্যালেঞ্জ
করছি। তিনি একটিও প্রমাণ
দিতে পারবেন না। আর
আমি জামায়াতের কাউকে তো চিনিই
না। এখানে জামায়াত প্রতিষ্ঠিতও
নয়। তিনিই
বলে বলে জামায়াতকে প্রতিষ্ঠিত
করছেন।
আরেকটি ব্যাপার লক্ষ করুন, শামীম
ওসমান বিএনপি-জামায়াতের
বিরুদ্ধে কথা বলেন, কিন্তু
মামলাগুলো
Posted via Blogaway
৪ ফেব্রুয়ারী, ২০১৩ - www.nowbd.com/Contained up-to-date Bangladesh News, Breaking News, Reviews, Opinion and Featured Stories. Read Daily Bangladeshi ...
Pages
- Home
- Bangla daily newspaper list
- English daily newspaper list
- District daily newspaper list
- all newspapers list
- online news
- Result bd 2016
- radio stations
- Bangladeshi TV Channels
- brahmanbaria24.com/news
- contact us
- English
- regional
- Rangpur
- Comilla
- Barisal
- Rajshahi
- Khulna
- Sylhet
- Chittagong
- National
- Prothomalo
- madershomoy
- daily-amder shomoy
No comments:
Post a Comment