Headlines



gazitv2

w41j

gazitv

Sunday, October 5, 2014

জেনে নিন, বাতের ব্যথা প্রতিরোধের কার্যকরী টিপস

স্বাস্থ্য ডেস্ক: বিশ্বের অনেক মানুষই বাতের
ব্যথায় আক্রান্ত এবং প্রতিদিনই এই
সংখ্যা বেড়ে চলেছে আশংকাজনক হারে। বিশেষ
করে ধনীদের ক্ষেত্রে এ রোগ বেশি দেখা দেয়।
কারণ উন্নতমানের খাওয়া বিশেষ করে মাছ মাংস
ইত্যাদি যারা বেশি খান তাদের এ বাতের
সমস্যায় পড়তে হয়। এছাড়া দৈনন্দিন
জীবনে যারা অলস তাদের ক্ষেত্রেও এ
সমস্যা সৃষ্টি হয়। আবার বাতের ব্যথা মূলত দুই
ধরণের কারণে হয়ে থাকে। প্রথমত, বয়স জনিত
হাড়ের দুর্বলতা থেকে এবং দ্বিতীয়ত, হাড়ের
জয়েন্ট দুর্বল ও হাড়ে ক্যালসিয়ামের অভাব জনিত
কারনে। প্রখমে এটি পায়ের
আঙ্গুলে পরে আস্তে আস্তে হাড়সহ শরীরের বিভিন্ন
জয়েন্টে এ রোগ ছড়িয়ে পড়ে। বাত
আক্রান্তস্থানে প্রচুর গরম অনুভুত হয় এবং অসহনীয়
ব্যাথার সৃষ্টি হয়।
বাত একটি সিস্টেমিক ডিজিজ অর্থাত্
যা কিনা পুরো শরীরে প্রভাব ফেলে।
অস্থিসন্ধিতে ইউরিক এসিড জমা হয়ে এ রোগের
উত্পত্তি হয়। মূত্রের মাধ্যমে যে পরিমাণ
স্বাভাবিক ইউরিক এসিড বেরিয়ে যায়, তার
থেকে বেশি পরিমাণ ইউরিক এসিড যখন আমাদের
যকৃত্ তৈরি করে তখনই তা রক্তের পরিমাণ বাড়ায়।
অথবা খাবারের মাধ্যমে বেশি পরিমাণ ইউরিক
এসিডের উত্স যেমন লাল মাংস, ক্রিম, রেড ওয়াইন
ইত্যাদি গ্রহণ করলে এবং বৃক্ক (কিডনি) রক্ত
থেকে যথেষ্ট পরিমাণে তা ফিল্টার
করতে না পারলে বাতের উপসর্গগুলো দেখা দেয়।
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ইউরিক এসিড
অস্থিসন্ধিতে ক্রিস্টালরূপে জমা হতে থাকে এবং তাতে অস্থিসন্ধি ফুলে যায়,
প্রদাহ এবং ব্যথা হয় এবং সেই
সঙ্গে অস্থিসন্ধি ধীরে ধীরে শক্ত হয়ে যায়। বাত
সাধারণত পায়ের আঙুলের অস্থিসন্ধিকে আক্রান্ত
করে।
রোগের প্রাদুর্ভাব
বাত সাধারণত ৪০ থেকে ৫০ বছর বয়সী পুরুষদের
ক্ষেত্রে বেশি হয়ে থাকে। মহিলাদের
ক্ষেত্রে সাধারণত এটি রজঃনিবৃত্তির পর অর্থাত্
৪৫ বছরের পর দেখা দেয়। শিশু এবং তরুণদের
সাধারণত এ রোগে আক্রান্ত হতে দেখা যায় না।
কারণ এবং ঝুঁকিগুলো
অস্থিসন্ধিতে ইউরিক এসিড জমার কারণেই বাত
হয়ে থাকে। শতকরা ২০ ভাগেরও বেশি রোগীর
ক্ষেত্রেই দেখা যায়, বাতরোগের পারিবারিক
ইতিহাস থাকে। যেসব কারণে বাতরোগের
ঝুঁকি বাড়ে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো—
ডায়াবেটিস, শরীর মোটা হয়ে যাওয়া, কিডনির
রোগগুলো, সিকল সেল এনিমিয়া (এক ধরনের
রক্তস্বল্পতা)। নিয়মিত অ্যালকোহল পান
করলে তা দেহ থেকে ইউরিক এসিড বের
করে দেয়ায় বাধা দেয় এবং প্রকারান্তরে বাতের
ঝুঁকি বাড়ায়।
কিছু কিছু ওষুধ যেমন—অ্যাসপিরিন, বিভিন্ন ডাই-
ইউরেটিকস, লিভোডোপা, সাইক্লোস্পোরিন
ইত্যাদি অনেক সময় বাতের ঝুঁকি বাড়ায়।
রোগের লক্ষণগুলো
বাতের সমস্যা সাধারণত বৃদ্ধাঙ্গুলিতে প্রথম
দেখা দেয়। এর প্রধান লক্ষণগুলো হচ্ছে—
CXUIDTU
— প্রদাহ
— ব্যথা
— অস্থিসন্ধি লাল হয়ে যাওয়া
— অস্থিসন্ধি ফুলে যাওয়া ইত্যাদি।
— বাতে পায়ের অঙুল নাড়াতে তীব্র ব্যথা হয়;
অনেক সময় রোগীরা বলে থাকে যে, চাদরের
স্পর্শেও ব্যথা লাগে। বাতের লক্ষণগুলো খুব দ্রুতই
দেখা দেয়, যেমন কখনও কখনও এক দিনের মধ্যেই
দেখা দেয় এবং একই সঙ্গে একটি মাত্র
অস্থিসন্ধিতে লক্ষণ দেখা দেয়। বিরল
ক্ষেত্রে ২-৩টি অস্থিসন্ধিতে এক সঙ্গে ব্যথা হয়।
যদি অনেক স্থানে এক সঙ্গে লক্ষণ দেখা দেয়,
তবে হয়তো তা বাতের কারণে নাও হতে পারে।
তবে চিকিত্সা না করা হলে বাত অস্থিসন্ধির
যথেষ্ট ক্ষতি করতে এমনকি চলনক্ষমতাও হ্রাস
করতে পারে।
চিকিত্সা
চিকিত্সার মূল লক্ষ্য হচ্ছে অস্থিসন্ধিতে ইউরিক
এসিডের পরিমাণ কমিয়ে আনা এবং এর
মাধ্যমে রোগের লক্ষণ
এবং পরবর্তী অবনতি ঠেকানো।
চিকিত্সা না করা হলে বাত অস্থিসন্ধির যথেষ্ট
ক্ষতি করতে এমনকি চলনক্ষমতাও হ্রাস
করতে পারে। সচরাচর দেখা যায়, ঘন ঘন রোগের
লক্ষণগুলো প্রকাশ না পেলে লোকজন এর
চিকিত্সা করাতে চায় না। ওষুধের
মধ্যে আছে ন্যাপ্রোক্সেন এবং ইন্ডোমিথাসিনের
মতো এনএসএআইডি জাতীয় ওষুধ।
পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া এড়াতে চিকিত্সকের পরামর্শ
অনুযায়ী ওষুধ গ্রহণ করা এবং সেই সঙ্গে যথোপযুক্ত
ব্যবস্থা নেয়া দরকার।
প্রেডনিসোলোনের মতো স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধও
মুখে খাওয়া যেতে পারে অথবা আক্রান্ত
স্থানে ইনজেকশনের মাধ্যমে ব্যবহার
করা যেতে পারে। অ্যালোপিউরিনল, কোলচিসিন
এবং প্রোবেনেসিড আলাদাভাবে কিংবা এক
সঙ্গে ব্যবহার করা যেতে পারে। এই ওষুধগুলো দ্রুত
কার্যকর হয় তখনই, যখন এগুলো রোগের লক্ষণ
দেখা দেয়ার ১২ ঘণ্টার মধ্যেই ব্যবহার
করা যায়।
প্রতিরোধ
প্রতিরোধই বাতের সমস্যা থেকে উপশমের উত্তম
উপায়। রোগ দেখা দিলে ওষুধের মাধ্যমে প্রতিকার
পাওয়া যায় বটে, তবে তখন অ্যালকোহল এবং যেসব
খাবার গ্রহণ করলে ইউরিক এসিড মজুদ
হওয়া বেড়ে যায়, সেসব থেকে দূরে থাকা অবশ্য
কর্তব্য।
এছাড়া রোগীকে প্রচুর পানি খেতে হবে, নিয়মিত
ব্যায়াম করতে হবে, সুষম খাবার ব্যবহার করার
সঙ্গে সঙ্গে শরীরের ওজন ঠিক রাখতে হবে।
তবে সবচেয়ে বড় কথা হলো, রোগ হলে অবশ্যই একজন
অভিজ্ঞ চিকিত্সকের শরণাপন্ন হয়ে তার পরামর্শ
মতো চলতে হবে।
এছাড়াও জেনে নিন বাতের ব্যথার কবল
থেকে বাঁচার জন্য কার্যকরী কিছু টিপস।
•লিফট বা এস্কেলেটরের পরিবর্তে সিঁড়ি ব্যবহার
করুন।
•প্রতিদিন সকালে উঠে ৫-১০ মিনিট জোরে হাঁটুন
বা জগিং করুন।
•গাড়িতে ওঠার আগে কিংবা লম্বা জার্নির
শুরুতে অন্তত ৫০০ মিটার পায়ে হেঁটে নিন।
•ওজন কমানোর দিকে মনোযোগী হোন।
•প্রতিদিন ৬-৮ গ্লাস পানি খান।
•ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবার প্রতিদিন
পরিমিত পরিমানে খান।
•একটানা অনেকক্ষণ বসে থাকবেন না। ১৫-২০
মিনিট পর পর খানিকটা হেঁটে নিন।
•ধূমপান ও মদ্যপান হাড়ের ক্যালসিয়াম
শুকিয়ে দেয়ার জন্য দায়ী। ধূমপান ও মদ্যপান বন্ধ
করুন।
•প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় দুধ রাখুন।
যদি ‘লাক্টোস ইনটলারেন্ট’ হয়ে থাকেন
তবে ব্রকলি খান ক্যালসিয়ামের ঘাটতি পুরনের
জন্য।
•প্রতিদিন ব্যায়ামের জন্য অন্তত ১০ মিনিট
রাখুন।
•সপ্তাহে অন্তত ২ বার খানিকটা তেল গরম
করে নিয়ে হাড়ের জয়েন্টে ম্যাসাজ করুন।
•যারা ব্যথা ভুগছেন তারা আক্রান্ত
স্থানে প্রতিদিন গরম তুলা. কাপড় বা পানির সেঁক
নিন।

No comments: