আপনি লক্ষ করেছেন কি, কিছু লোক প্রচুর খায়, ব্যায়ামও
করে না, অথচ বেশ সুস্থ। স্থূলতায় আক্রান্ত
হচ্ছে না তারা। অথচ আপনি হয়তো সামান্য খাবার খাচ্ছেন,
কিন্তু ভুঁড়ির লাগাম টেনে ধরতে পারছেন না। কেন
এমনটি হয়?
অস্ট্রেলিয়ার দুই গবেষক মাইকেল জেনসেন ও ডেভিড
ডানস্টেনের মতো এই রহস্য নিহিত পদযুগলের মধ্যে।
তারা মত দিচ্ছেন, ‘সাবলীলভাবে হাঁটতে থাকো, ওজন
বাড়বে না।’ তারা গবেষণায় দেখেছেন, আপনি যদি নিষ্ক্রয়
থাকেন, বিশেষ করে বসে থাকেন, তবে তা স্বাস্থ্যের জন্য
খারাপ, এমনকি আপনি ব্যায়াম করলেও।
২০১০ সালে আটলান্টার আমেরিকান ক্যান্সার সোসাইটির
আলপা প্যাটেলের নেতৃত্বে একটি দল এক লাখ ২৩ হাজার
মধ্যবয়সী লোকের কাছ থেকে ১৪ বছর ধরে তথ্য সংগ্রহ
করে বিশ্লেষণ করতে বসল। যারা দিনে ছয় ঘণ্টা বা এর
চেয়ে বেশি সময় বসে থাকে তাদের সাথে যারা তিন
ঘণ্টা বা এর চেয়ে কম বসে থাকে, তাদের
মধ্যে তুলনা (খাবারসহ অন্যান্য বিষয় বিবেচনা করেই)
করে তারা মৃত্যুর হারে বিস্ময়কর তথ্য দেখেন।
যারা বেশি সময় বসে থাকে, তাদের ক্ষেত্রে নারীদের
মধ্যে মৃত্যুর হার ৪০ শতাংশ এবং পুরুষদের মধ্যে ২০
শতাংশ বেশি। নারী ও পুরুষের মধ্যে এত বড় ব্যবধান কেন
হচ্ছে, তার কারণ গবেষকেরা অনুমান করতে পারেননি।
অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ড
বিশ্ববিদ্যালয়ে আরেকটি সমীক্ষা চালানো হয় ৮,৮০০
অস্ট্রেলিয়ানের টিভি দেখা নিয়ে। তারা হিসাব করেন, ২৫
বছরের চেয়ে বেশি বয়সীরা প্রতি এক ঘণ্টা টিভি দেখে আয়ু
২২ মিনিট করে কমিয়ে ফেলেন। অর্থাৎ যারা দিনে ছয়
ঘণ্টা করে টেলিভিশন দেখেন আর যারা মোটেই টিভি দেখেন
না, তাদের চেয়ে তারা ছয় বছর আগে মারা যেতে পারেন।
কথা পরিষ্কার। ঘণ্টার পর ঘণ্টা স্থির
হয়ে বসে থাকা (বাকি সময় আপনি যে কাজই করুন না কেন)
মানে আপনার স্বাস্থ্যকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলা। অর্থাৎ কয়েক
ঘণ্টা টিভি দেখার আগে বা পরে যদি আপনি প্রচণ্ড ব্যায়ামও
করেন, তাতে ফায়দা নেই। প্যাটেলের সমীক্ষায় দেখা যায়,
যারা ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে বসে কাজ করে, তাদের
মধ্যে মৃত্যুর হার বেশি। গবেষক দল অবশ্য ঘুমানোর
বিষয়টি আমলে নেননি। তারা টিভি দেখা, কম্পিউটারে চোখ
রাখা, বই পড়া, ডেস্কে কাজ করার দিকেই মনোনিবেশন
করেছিলেন।
আমরা কিভাবে নিষ্ক্রিয় সময় কাটাই সেটাও বৈজ্ঞানিক
সরঞ্জাম ব্যবহার করে হিসাব করেছেন ডেভিড ডানস্টেন।
তিনি দেখিয়েছেন, ১৪ থেকে ১৫ ঘণ্টার
একটি দিনে আমরা ৫৫ থেকে ৭৫ ভাগ সময় নিষ্ক্রিয় থাকি।
আমরা যাকে প্রচণ্ড পরিশ্রমপূর্ণ কাজ বা ব্যায়াম বলি,
সেটা করি মাত্র ৫ ভাগ সময়।
আপনি নিজেই নিজের সময় নিয়ে পরীক্ষা করতে পারেন।
আপনি হয়তো নিয়ম মেনে প্রতি দিন বেশ হাঁটাহাঁটি করেন।
কিন্তু সেটা হয়তো এক ঘণ্টা। তারপর দিনে সাত থেকে আট
ঘণ্টাই কাটে চেয়ার বা সোফায় বসে। তবে আপনার পাশেরই
আরেকজনকে হয়তো দেখবেন, তিনি কাজ করছেন,
তবে কিছুক্ষণ পরপরই একটু হেঁটে নিচ্ছেন।
কাজে ফাঁকি দিচ্ছেন না। বেয়ারাকে না বলে নিজেই স্টল
থেকে চা বা কফি নিয়ে এলেন, ফাইলটি নিজেই অন্যের
ডেস্কে পৌঁছে দিলেন।
অবশ্য বর্তমানে কম্পিউটারভিত্তিক অফিসে এসব কাজ
একটু কঠিনই। পুরো ব্যবস্থাটিই এমন করে সাজানো যে,
কম্পিউটার থেকে আপনার চোখ সরানোরই উপায় নেই।
কিন্তু আমাদের দেহ কিন্তু এমন ধরনের জীবনযাত্রায়
অভ্যস্ত নয়। কলরাডো বিশ্ববিদ্যালয়ের হিউম্যান
ফিজিওলিস্টের গবেষক আড্রেই বারগোইগন্যান জানান,
বিবর্তনের দৃষ্টিকোণ থেকে দেখলে বোঝা যায় যে,
আমরা তৈরি হয়েছি সক্রিয় থাকার জন্য। তিনি কিছু
স্বেচ্ছাসেবককে, যারা আগে অত্যন্ত সক্রিয় ছিল, বেড
রেস্টে রাখেন। তিন মাস পর দেখতে পান, তারা টাইপ টু
ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার মতো অবস্থায় পৌঁছে গেছে।
এই গবেষণায় দেখা যায়, নিষ্ক্রিয়তার ফলে আমাদের বিপাক
কার্যক্রমে পরিবর্তন ঘটে। গবেষকেরা মনে করছেন,
নিষ্ক্রিয় থাকলে আমাদের যেসব পেশি চর্বি হজম করে,
সেগুলো কাজ করতে পারে না। ফলে রক্ত থেকে চর্বি শোষণ
করার প্রক্রিয়ায় ব্যাঘাত ঘটে। বিভিন্ন স্থানে চর্বি জমার
হার বাড়তে থাকে।
কাজেই আপনাকে সক্রিয় থাকতেই হবে। কাজের
ফাঁকে ফাঁকে হাঁটুন। টেলিভিশন দেখার সময় প্রতি ২০-২৫
মিনিট পরপর একটু বিরতি নিয়ে পায়চারী করুন। আপনি বেশ
কিছু সময় ব্যায়াম করতে চাইলে করুন। কিন্তু ঘণ্টার পর
ঘণ্টা এক চেয়ারে বসে থাকবেন না।

করে না, অথচ বেশ সুস্থ। স্থূলতায় আক্রান্ত
হচ্ছে না তারা। অথচ আপনি হয়তো সামান্য খাবার খাচ্ছেন,
কিন্তু ভুঁড়ির লাগাম টেনে ধরতে পারছেন না। কেন
এমনটি হয়?
অস্ট্রেলিয়ার দুই গবেষক মাইকেল জেনসেন ও ডেভিড
ডানস্টেনের মতো এই রহস্য নিহিত পদযুগলের মধ্যে।
তারা মত দিচ্ছেন, ‘সাবলীলভাবে হাঁটতে থাকো, ওজন
বাড়বে না।’ তারা গবেষণায় দেখেছেন, আপনি যদি নিষ্ক্রয়
থাকেন, বিশেষ করে বসে থাকেন, তবে তা স্বাস্থ্যের জন্য
খারাপ, এমনকি আপনি ব্যায়াম করলেও।
২০১০ সালে আটলান্টার আমেরিকান ক্যান্সার সোসাইটির
আলপা প্যাটেলের নেতৃত্বে একটি দল এক লাখ ২৩ হাজার
মধ্যবয়সী লোকের কাছ থেকে ১৪ বছর ধরে তথ্য সংগ্রহ
করে বিশ্লেষণ করতে বসল। যারা দিনে ছয় ঘণ্টা বা এর
চেয়ে বেশি সময় বসে থাকে তাদের সাথে যারা তিন
ঘণ্টা বা এর চেয়ে কম বসে থাকে, তাদের
মধ্যে তুলনা (খাবারসহ অন্যান্য বিষয় বিবেচনা করেই)
করে তারা মৃত্যুর হারে বিস্ময়কর তথ্য দেখেন।
যারা বেশি সময় বসে থাকে, তাদের ক্ষেত্রে নারীদের
মধ্যে মৃত্যুর হার ৪০ শতাংশ এবং পুরুষদের মধ্যে ২০
শতাংশ বেশি। নারী ও পুরুষের মধ্যে এত বড় ব্যবধান কেন
হচ্ছে, তার কারণ গবেষকেরা অনুমান করতে পারেননি।
অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ড
বিশ্ববিদ্যালয়ে আরেকটি সমীক্ষা চালানো হয় ৮,৮০০
অস্ট্রেলিয়ানের টিভি দেখা নিয়ে। তারা হিসাব করেন, ২৫
বছরের চেয়ে বেশি বয়সীরা প্রতি এক ঘণ্টা টিভি দেখে আয়ু
২২ মিনিট করে কমিয়ে ফেলেন। অর্থাৎ যারা দিনে ছয়
ঘণ্টা করে টেলিভিশন দেখেন আর যারা মোটেই টিভি দেখেন
না, তাদের চেয়ে তারা ছয় বছর আগে মারা যেতে পারেন।
কথা পরিষ্কার। ঘণ্টার পর ঘণ্টা স্থির
হয়ে বসে থাকা (বাকি সময় আপনি যে কাজই করুন না কেন)
মানে আপনার স্বাস্থ্যকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলা। অর্থাৎ কয়েক
ঘণ্টা টিভি দেখার আগে বা পরে যদি আপনি প্রচণ্ড ব্যায়ামও
করেন, তাতে ফায়দা নেই। প্যাটেলের সমীক্ষায় দেখা যায়,
যারা ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে বসে কাজ করে, তাদের
মধ্যে মৃত্যুর হার বেশি। গবেষক দল অবশ্য ঘুমানোর
বিষয়টি আমলে নেননি। তারা টিভি দেখা, কম্পিউটারে চোখ
রাখা, বই পড়া, ডেস্কে কাজ করার দিকেই মনোনিবেশন
করেছিলেন।
আমরা কিভাবে নিষ্ক্রিয় সময় কাটাই সেটাও বৈজ্ঞানিক
সরঞ্জাম ব্যবহার করে হিসাব করেছেন ডেভিড ডানস্টেন।
তিনি দেখিয়েছেন, ১৪ থেকে ১৫ ঘণ্টার
একটি দিনে আমরা ৫৫ থেকে ৭৫ ভাগ সময় নিষ্ক্রিয় থাকি।
আমরা যাকে প্রচণ্ড পরিশ্রমপূর্ণ কাজ বা ব্যায়াম বলি,
সেটা করি মাত্র ৫ ভাগ সময়।
আপনি নিজেই নিজের সময় নিয়ে পরীক্ষা করতে পারেন।
আপনি হয়তো নিয়ম মেনে প্রতি দিন বেশ হাঁটাহাঁটি করেন।
কিন্তু সেটা হয়তো এক ঘণ্টা। তারপর দিনে সাত থেকে আট
ঘণ্টাই কাটে চেয়ার বা সোফায় বসে। তবে আপনার পাশেরই
আরেকজনকে হয়তো দেখবেন, তিনি কাজ করছেন,
তবে কিছুক্ষণ পরপরই একটু হেঁটে নিচ্ছেন।
কাজে ফাঁকি দিচ্ছেন না। বেয়ারাকে না বলে নিজেই স্টল
থেকে চা বা কফি নিয়ে এলেন, ফাইলটি নিজেই অন্যের
ডেস্কে পৌঁছে দিলেন।
অবশ্য বর্তমানে কম্পিউটারভিত্তিক অফিসে এসব কাজ
একটু কঠিনই। পুরো ব্যবস্থাটিই এমন করে সাজানো যে,
কম্পিউটার থেকে আপনার চোখ সরানোরই উপায় নেই।
কিন্তু আমাদের দেহ কিন্তু এমন ধরনের জীবনযাত্রায়
অভ্যস্ত নয়। কলরাডো বিশ্ববিদ্যালয়ের হিউম্যান
ফিজিওলিস্টের গবেষক আড্রেই বারগোইগন্যান জানান,
বিবর্তনের দৃষ্টিকোণ থেকে দেখলে বোঝা যায় যে,
আমরা তৈরি হয়েছি সক্রিয় থাকার জন্য। তিনি কিছু
স্বেচ্ছাসেবককে, যারা আগে অত্যন্ত সক্রিয় ছিল, বেড
রেস্টে রাখেন। তিন মাস পর দেখতে পান, তারা টাইপ টু
ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার মতো অবস্থায় পৌঁছে গেছে।
এই গবেষণায় দেখা যায়, নিষ্ক্রিয়তার ফলে আমাদের বিপাক
কার্যক্রমে পরিবর্তন ঘটে। গবেষকেরা মনে করছেন,
নিষ্ক্রিয় থাকলে আমাদের যেসব পেশি চর্বি হজম করে,
সেগুলো কাজ করতে পারে না। ফলে রক্ত থেকে চর্বি শোষণ
করার প্রক্রিয়ায় ব্যাঘাত ঘটে। বিভিন্ন স্থানে চর্বি জমার
হার বাড়তে থাকে।
কাজেই আপনাকে সক্রিয় থাকতেই হবে। কাজের
ফাঁকে ফাঁকে হাঁটুন। টেলিভিশন দেখার সময় প্রতি ২০-২৫
মিনিট পরপর একটু বিরতি নিয়ে পায়চারী করুন। আপনি বেশ
কিছু সময় ব্যায়াম করতে চাইলে করুন। কিন্তু ঘণ্টার পর
ঘণ্টা এক চেয়ারে বসে থাকবেন না।

No comments:
Post a Comment