Headlines



gazitv2

w41j

gazitv

Wednesday, May 21, 2014

লুঙ্গি, গেঞ্জি পরে যেভাবে সীমান্ত পাড়ি দিলো নূর হোসেন

ডেস্ক: নারায়ণগঞ্জের
আলোচিত সাত খুনের ঘটনায় প্রধান
অভিযুক্ত নূর হোসেনের
ভারতে পালিয়ে যাওয়ার
সত্যতা পেয়েছেন তদন্ত সংশ্লিষ্টরা।
ঘটনার পর দুই দিন এলাকায় প্রকাশ্য
ঘোরাফেরা করলেও লাশ উদ্ধারের
দিনই আত্মগোপনে চলে যায় সে। এরপর
প্রভাবশালী এক ব্যক্তির আশ্রয়ে চার
দিন থাকার পর গত ৫ই মে বেনাপোল
সীমান্ত
দিয়ে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ
করে নূর হোসেন।
তাকে ভারতে পালিয়ে যেতে সহায়তাকারী কামাল
হোসেন নামে এক
ব্যক্তিকে গ্রেপ্তারের পর তদন্ত
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এ
বিষয়ে নিশ্চিত হয়েছেন।
জিজ্ঞাসাবাদে কামাল বিস্তারিত
বর্ণনা দিয়েছে। নারায়ণগঞ্জের
পুলিশ সুপার ড. খন্দকার মহিদ উদ্দিন
বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে কামাল
যা তথ্য দিয়েছে তা যাচাই বাছাই
করা হচ্ছে। এরপর নূর
হোসেনকে ফিরিয়ে আনার
প্রক্রিয়া শুরু হবে। তদন্ত সংশ্লিষ্ট
সূত্র জানায়, নূর হোসেনের
সঙ্গে যোগাযোগের সূত্র
ধরে কয়েকদিন আগে যশোরের শার্শার
শ্যামলাগাছি এলাকা থেকে কামাল
নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার
করে পুলিশ। কামালকে দুই
দফা রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ
করা হলে সে নূর
হোসেনকে ভারতে পালিয়ে যেতে সহায়তার
কথা জানায়। সে শার্শার
শ্যামলাগাছিতে মশিউর নামে এক
ব্যক্তির অধীনে কাজ করে। মশিউর
সীমান্তের ওপার থেকে ফেনসিডিল
এনে বিক্রি করে। মাদক
বেচা কেনার সূত্র ধরেই কয়েক বছর
আগে মশিউরের সঙ্গে নূর হোসেনের
পরিচয় হয়। তারা দু’জন ঘনিষ্ঠ ছিল।
মশিউরের স্ত্রী মারা যাওয়ার পর
নূর হোসেন উদ্যোগ
নিয়ে চিটাগাং রোড এলাকায় এক
তরুণীর সঙ্গে তার
বিয়ে করিয়ে দেয়। এরপর নূর
হোসেনের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠতা আরও
বেড়ে যায়। কামাল হোসেন জানায়,
গত ৫ই
মে রাতে সে শ্যামলগাছিতে নূর
হোসেনকে মশিউরের
অফিসে সে দেখেছে। মশিউরের
নির্দেশে তাদের
নাস্তা এনে খাওয়ায়। নূর
হোসেনকে নিয়ে সে সময়
সারা দেশে তোলপাড় চলছিল।
শ্যামলাগাছিতে যাওয়ার সময় নূর
হোসেনের পরনে একটি লুঙ্গি ও
একটি হাফ হাতা গেঞ্জি ছিল। তার
মাথার চুল কালো করা ছিল। রাত
১০টার দিকে মশিউর তাকে (কামাল)
বিদায় দিয়ে নূর
হোসেনকে নিয়ে সীমান্তের
দিকে যায়। এ সময় মশিউর
তাকে বলে, তুই চলে যা,
আমি ভাইকে একটু ওপারে দিয়ে আসি।
তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ঘটনার
কয়েকদিন পর তারা নূর হোসেনের
সঙ্গে মশিউরের যোগাযোগের তথ্য
পান। মশিউরকে চিহ্নিত করতে তার
প্রধান সহযোগী কামালকে ধরা হয়।
কিন্তু কামালকে আটকের
বিষয়টি কোনভাবে টের পেয়ে মশিউর
আত্মগোপনে চলে যায়। সূত্র জানায়,
নূর হোসেনের কলকাতায় ব্যবসা ও
একটি বাড়ি আছে। সেখানে তার
অনেক বন্ধু-বান্ধবও রয়েছে।
ধারণা করা হচ্ছে,
সে ভারতে গিয়ে কোন বন্ধুর
আশ্রয়ে আত্মগোপন করে আছে।
কামালের বক্তব্য অনুযায়ী নূর হোসেন
একাই কলকাতায় গিয়েছে। কিন্তু
পুলিশ তার স্ত্রী-সন্তানদের খোঁজও
পাচ্ছে না। প্রথম
দিকে ধারণা করা হয়েছিল, স্ত্রী-
সন্তান সঙ্গে নিয়েই নূর হোসেন
কলকাতায় গিয়েছে। তবে পুলিশের এক
কর্মকর্তা বলেন, নূর হোসেন
ভারতে যাওয়ার পরের দুই-এক
দিনে তার স্ত্রী-সন্তানও
অবৈধভাবে সীমান্ত পার
হয়েছে বলে তারা ধারণা করছেন।
এদিকে নারায়ণগঞ্জের সাত খুনের
সঙ্গে নূর হোসেনের জড়িত থাকার
প্রমাণ পেয়েছে তদন্ত সংশ্লিষ্টরা।
প্রমাণ হাতে পাওয়ার পরই নূর
হোসেনের অস্থাবর সম্পত্তি ক্রোক
করার আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা।
এজাহারভুক্ত অন্য আসামিদের
বিরুদ্ধে এখনও কোন জড়িত থাকার
তথ্যপ্রমাণ হাতে পাওয়া যায়নি।
তথ্যপ্রমাণ হাতে পাওয়ার
সঙ্গে সঙ্গে পলাতক আসামিদের
স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি ক্রোকের
আবেদন করা হবে। তদন্ত সংশ্লিষ্ট
একজন কর্মকর্তা বলেন, নূর হোসেন
যে জড়িত
সে সম্পর্কে তারা মোটামুটি নিশ্চিত
হয়েছেন। এ সংক্রান্ত কিছু তথ্য-
প্রমাণ হাতে পেয়েছেন।
তাকে ধরতে পারলে অন্য আর
কে কে এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত
রয়েছে তা নিশ্চিত হওয়া যাবে।
অন্য আসামিরা কোথায়: সাত খুনের
এজাহারভুক্ত প্রধান আসামি নূর
হোসেন ভারতে পালিয়ে যাওয়ার
বিষয়ে নিশ্চিত হলেও
অন্যরা কে কোথায়
আছে তা জানতে পারেনি পুলিশ।
এজাহারভুক্ত দুই নম্বর
আসামি সিদ্ধিরগঞ্জ
থানা আওয়ামী লীগের
সেক্রেটারি হাজী ইয়াসিন ও চার
নম্বর আসামি আমিনুল ইসলাম রাজু
ঘটনার পরপরই সিঙ্গাপুর
পালিয়ে গেছে বলে গুঞ্জন আছে।
তবে গতকাল পর্যন্ত তাদের সিঙ্গাপুর
পালিয়ে যাওয়ার বিষয়ে নিশ্চিত
হতে পারেনি পুলিশ। তিন নম্বর
আসামি ও নূর হোসেনের ক্যাশিয়ার
হিসেবে পরিচিত হাসমত
আলী হাসুকে কয়েকদিন
আগে গ্রেপ্তারের গুঞ্জন ওঠে।
স্বরাষ্ট্র
প্রতিমন্ত্রী বিষয়টি প্রথমে স্বীকার
করলেও পরে তিনি টিভির স্ক্রল
দেখে বলেছিলেন দাবি করেন।
বিজিবি’র হাতে গ্রেপ্তার হওয়ার
গুজব উঠলে তাকে গতকাল পর্যন্ত
পুলিশের হাতে হস্তান্তর করা হয়নি।
এ ছাড়া অপর দুই আসামি ইকবাল ও
আনোয়ারের কোন অবস্থান শনাক্ত
করতে পারেনি পুলিশ। গ্রেপ্তার
অভিযানে অংশ নেয়া এক পুলিশ
কর্মকর্তা জানান, তারা প্রযুক্তির
সহায়তা নিয়ে এজাহারভুক্ত আসামি ও
নূর হোসেনের সহযোগীদের অবস্থান
শনাক্তের চেষ্টা করছেন।
তবে আসামিরা সবাই
আত্মগোপনে অনেক কৌশল অবলম্বন
করছে। তারা ঘন ঘন জায়গা বদল
করছে। এ কারণে অনেক অভিযান
ব্যর্থ হচ্ছে। তিনি জানান,
তারা প্রায় প্রতি রাতেই কোথাও
না কোথাও অভিযান চালাচ্ছেন।
দেশের বিভিন্ন সীমান্ত এলাকাতেও
অভিযান চালানো হয়েছে। এ সব
অভিযানে নূর হোসেনের কিছু ঘনিষ্ঠ
সহযোগীকে ধরা গেলেও এজাহারভুক্ত
আসামিদের কাউকেই পাওয়া যায়নি।
পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান,
তারা যোগাযোগের জন্য নিজেদের
মোবাইল ব্যবহার করছেন না।
দোকানের মোবাইল ব্যবহার
করে যোগাযোগ করছেন। এ
কারণে তাদের অবস্থান শনাক্ত
করা গেলেও গ্রেপ্তার
করা যাচ্ছে না।
সুত্র: মানবজমিন


Posted via Blogaway

No comments: