কুমিল্লা: মৃত্যুর পরে নয়, বরং মৃত্যুর আগেই
নিজে নিজের কুলখানির আয়োজন করে তারপরপরই
মৃত্যুর কোলে ঢলে পরলেই এক বৃদ্ধ।
ঘটনাটি ঘটেছে দাউদকান্দি উপজেলার
পদুয়া ইউনিয়নে।
স্থানীয়রা জানান, সেখানকার বিশিষ্ট
সমাজসেবক ১০১ বছরের বৃদ্ধ হাজী দুধ
মিয়া বেপারী গতকাল রবিবার সকালে পদুয়ার
মহিষমারি গ্রামের বাড়িতে নিজ হাতে গরিব ও
এলাকাবাসীকে কুলখানি খাওয়ানো শেষে বিকেলে মৃত্যুর
কোলে ঢলে পড়েন।
এলাকাবাসী ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়,
উপজেলা পদুয়া ইউনিয়নের মহিষমারি গ্রামের
হাজী জব্বর আলীর ছেলে হাজী দুধ
মিয়া বেপারী ইচ্ছা পোষণ করেন তাঁর বয়স শত
বছর পূর্ণ হলে তিনি নিজের কুলখানি নিজ
হাতে করে যাবেন। গতকাল ১০১ বছরে পা দেন
তিনি। তাঁর সেই ইচ্ছা অনুযায়ী গতকাল চারটি গরু
জবাই দিয়ে গরিব-দুখী, এলাকাবাসীসহ চার
হাজার জনের জন্য ভোজসভার আয়োজন করেন তিনি।
এতে সংসদ সদস্য থেকে শুরু করে বিভিন্ন
রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীরাও আমন্ত্রিত হন।
কুলখানির অনুষ্ঠান শেষে সবাই যার যার
মতো চলে যায়। বিকেলে খবর আসে দুধ
মিয়া বেপারী ইন্তেকাল করেছেন। আসরের
নামাজের পর তাঁর জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এ খবর
ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি এলাকায় ব্যাপক আলোচনার
জন্ম দেয়। এলাকাবাসী আবার ছুটে যায় দুধ মিয়ার
বাড়ি। সেখানে গিয়ে এর সত্যতা খুঁজে পায়।
পরে আসর নামাজের পর স্থানীয় সংসদ সদস্য ও
প্রতিরক্ষাবিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির
সভাপতি মেজর জেনারেল (অব.) সুবিদ আলী ভুঁইয়াসহ
নানা শ্রেণী-পেশার কয়েক হাজার লোক তাঁর
জানাজায় অংশ নেয়।
জানাজার আগে দুধ মিয়া বেপারীর ছেলে মো. আবুল
হোসেন বলেন, “বাবার শেষ ইচ্ছা ছিল শতবর্ষ পূর্ণ
হলেই নিজের কুলখানি নিজে উপস্থিত
থেকে করে যাবেন। সেই অনুযায়ী গতকাল চার
হাজার লোককে দাওয়াত করে অনুষ্ঠানের আয়োজন
করা হয়। অনুষ্ঠান
শেষে বিকেলে আমাকে ডেকে বলে, ‘আমার
শরীরটা কেমন জানি লাগছে।
আমাকে তোমরা ডাক্তারের কাছে নিবা না। আমার
সময় শেষ।’ একথা বলেই তিনি মৃত্যুর
কোলে ঢলে পড়েন।”
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো.
ইসমাইল হোসেন সরকার বলেন, ‘হাজী দুধ
মিয়া বেপারীর মতো ভাগ্য লাখে একজনেরও
জুটে কি না, আমার জানা নেই।
সকালে তিনি ঘুরে ঘুরে সবাইকে খাওয়ালেন, সবার
কাছে দোয়া চাইলেন; আর বিকেলেই
দুনিয়া থেকে বিদায় নিলেন। এ যেন এক অলৌকিক
ঘটনা।’
Posted via Blogaway
No comments:
Post a Comment