Headlines



gazitv2

w41j

gazitv

Thursday, July 17, 2014

পুরান ঢাকার রাতের রসনা!

ঢাকা: শহর, শহর, ঢাকা শহর/
আজব শহর ঢাকা/
এই শহরে আছে অনেক গলি আঁকাবাঁকা।
সত্যিই ঢাকা শহরের প্রতিটি অলি-
গলিতে কবি শামসুর রাহমান উপরোক্ত
পংক্তিগুলো মূর্ত হয়ে ওঠে।
আসলে ঢাকা একটি আজব শহর। একই শহরের মধ্যেই
রয়েছে শত রমকের ভিন্নতা। শত শত সুরম্য
অট্টালিকার ভিড়ে বাকি ঢাকায় যখন গভীর
রাতে শুনশান নীরবতা।
তখনো জেগে থাকে পুরান ঢাকার প্রতিটি অলি-
গলি। ভোজন রসিকদের জন্য বিখ্যাত জায়গা পুরান
ঢাকার প্রায় প্রতিটি অলি-গলিতে সারারাত
চলে জিভে জল আনা নানা খাবারের আয়োজন।
বাঙালির রসনা তৃপ্তি মেটাতে জেগে থাকে পুরান
ঢাকার অলি-গলি, সেইসঙ্গে অসংখ্য মানুষও।
প্রায় সারারাতই রাজধানীর অন্যান্য
এলাকা থেকে পুরান ঢাকার খাবার
চেখে দেখতে ছুটে আসেন ভোজন রসিকেরা।
এখানকার ঐতিহ্যবাহী রেস্তোরাগুলোও সারারাতই
থাকে উৎসবের আমেজ। তাই ভূরিভোজের জন্য পুরান
ঢাকার জুড়ি মেলা ভার।
বুধবার দিবাগত গভীর রাতে পুরান ঢাকার
আগা সাদেক রোডের নাজিরা বাজার এলাকায় ঢু
মারতেই দেখা গেলো চৌরাস্তার
ঐতিহ্যবাহী রেস্তোরাগুলোর দিনের মতোই ব্যস্ত।
খদ্দের ও দোকানিদের হাক-ডাকে বোঝা ভার রাত
ও দিনের পার্থক্য।
গভীর রাতে বিসমিল্লাহ কাবাব ঘরে ভোজন প্রিয়
মানুষের ভিড় সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন
দোকানিরা। মুখরোচক গরুর চাপ, গরুর বটি কাবাব,
খাসির চাপ, খাসির রেজালা, খাসির
খিরি কাবাব, খাসির মগজ, মুরগির চাপ, মুরগির
গিলা কলিজা, টিকি কাবাব ও জালি কাবাবের
টানে আশপাশ এবং দূর থেকেও অনেকে ভিড়
জমিয়েছেন এখানে। জায়গার সীমাবদ্ধতা থাকায়
অনেকে বাইরেও অপেক্ষা করছেন।
পবিত্র রমজান মাসের সময় বিকেল
তিনটা থেকে সেহরির আগ পর্যন্ত চলে এই কাবাব
ঘরটি। রাত-দিন সব সময় একই রকম ভিড়
লেগে থাকে এখানে।
গভীর রাতে রায় সাহেব বাজার থেকে বিসমিল্লাহ
কাবাব ঘরে এসেছেন ভোজন রসিক আহনাফ ইমন।
এতো রাতে পুরান ঢাকায় খাবার
খেতে আসা প্রসঙ্গে তিনি জানান,
এখানে বটি কাবাবের সঙ্গে তেতুল ও ঝালের সস
দিয়ে পরোটা খাওয়ার টানে বার বার ছুটে আসেন
তিনি।
বিসমিল্লাহ কাবাব ঘরের
স্বত্ত্বাধিকারী হাসিবুর রহমান
বাংলানিউজকে জানান, রমজান উপলক্ষে বিকেল
তিনটা থেকে সেহরির আগ পর্যন্ত কাবাব ঘর চলে।
তবে অন্যান্য সময় সারারাত বেচাকেনা চলে। শুধু
পুরান ঢাকা নয় নতুন ঢাকার মানুষও এই কাবাব
ঘরে ছুটে আসেন।
নাজিরা বাজার চৌরাস্তা সংলগ্ন এলাকাতেই
প্রায় ৮ থেকে ১০টি রেস্তোরায় ব্যস্ততা একই
রকম। একই ব্যস্ততা দেখা গেছে চানখারপুলের
নাজিম উদ্দিন রোডেও। সেখানকার ৭
থেকে ৮টি রেস্তোরার যেন কোনো বিশ্রাম নেই।
গভীর রাতে ভোজন রসিকদের সামলাতে হিমিশিম
খাওয়া অবস্থা দোকানির।
এখানকার রেস্তোরাগুলোতে স্পেশাল
বাসমতি চালের কাচ্চি, খাসির কাচ্চি, মোরগ
পোলাউ, গরুর তেহারি, ভূনা খিচুড়ি, বিউটির
লাচ্ছি, বোরহানি, ফালুদা, হামদর্দের রুহ আফজা,
রয়েলের লাবাং ও পেস্তার শরবত,
কোলকাতা কাচ্চি ও জাফরানের শরবত, ফিন্নি, দই
ও মিষ্টিসহ নানা খাবারের সম্ভার রয়েছে। এসব
টানে রাত-বিরাতে আসে নানা শ্রেণি-পেশার
মানুষ। বিশেষ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়,
ঢাকা মেডিকেল কলেজসহ বিভিন্ন এলাকার
শিক্ষার্থীরা।
এই নাজিম উদ্দিন সড়কে সারারাত
বেচাকেনা কেনা করেন গণেশ ঘোষ। দধি, ক্ষির,
রস মালাই বিক্রি করেন তিনি। তার ‍কাছে ঘন দুধ
ও ক্ষির দিয়ে তৈরি সুস্বাদু লাবড়িও পাওয়া যায়।
গনেশ ঘোষ বাংলানিউজকে জানান, দীর্ঘ ২২ বছর
ধরে এখানে রাতভর বেচাকেনা করে আসছেন তিনি।
এই ব্যবসা তার বাবাও করতেন, তার কাছ
থেকে শিখেছেন।
তিনি আরো বলেন, বেচাকেনায় দিন ও রাতের
কোনো পার্থক্য নেই এখানে। বরং রাতেই
ভালো বেচাকেনা হয়।

posted from Bloggeroid

No comments: