রাজপথে রোগী নিয়ে স্বজনের এই বিড়ম্বনার
কারণটা বড় অদ্ভুত৷ খুলনা থেকে গতকাল
রোগী নিয়ে অ্যাম্বুলেন্সযোগে ঢাকার পঙ্গু
হাসপাতালে আসছিলেন তাঁরা৷ সন্ধ্যায় হেয়ার
রোডে এসে যানজটে আটকা পড়লে দ্রুত উল্টোপথেই
যাওয়ার চেষ্টা করেন৷ চালকের জানা ছিল না এই
পথে সম্প্রতি গতিরোধক বসানো হয়েছে৷ ট্রাফিক
পুলিশও সতর্ক করেনি তাঁকে৷ গতিরোধক পার
হতে গিয়ে অ্যাম্বুলেন্সের চারটি চাকাই ফুটো হয়ে যায়৷
বাধ্য হয়ে রোগীকে রাস্তায় নামিয়েই শুশ্রূষা করছেন
স্বজন l ইউসুফ সা’দ
খুলনা থেকে তাঁরা আসছিলেন ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে,
অ্যাম্বুলেন্সে করে৷ ঢাকায় পেঁৗছাতেই সন্ধ্যা নেমে এল৷
হেয়ার রোডে ঢুকেই আটকে গেলেন যানজটে৷ দীর্ঘ যানজট
রোগীর শারীরিক যন্ত্রণা যেন আরও বাড়িয়ে দিল৷ উিদ্বগ্ন
স্বজনদের পরামর্শে চালক দ্রুত
হাসপাতালে পেঁৗছাতে উল্টো পথে হোটেল
রূপসী বাংলা মোড়ের দিকে এগোলেন৷ কিন্তু গতকালের
সন্ধ্যাটি যে তাঁদের জন্য এতটা নিকষ কালো হয়ে উঠবে,
তা তাঁরা ভাবতেও পারেননি৷ কিছু দূর এগোতেই
সড়কটিতে সম্প্রতি বসানো প্রতিরোধযন্ত্রে অ্যাম্বুলেন্সে
চারটি চাকাই ফুটো হয়ে গেল৷
চাকা ফুটো হয়ে যাওয়া অ্যাম্বুলেন্স
আরেকটি অ্যাম্বুলেন্স জোগাড় হওয়ার আগ পর্যন্ত
যন্ত্রণাকাতর ওই রোগী ও তাঁর স্বজনদের রাস্তায়
পোহাতে হয় চরম দুর্ভোগ৷ এর মধ্যে একবার
রোগীকে বেদনানাশক ইনজেকশনও দিতে হয়৷
উল্টো পথে যানবাহন চলাচল ঠেকাতে গত সপ্তাহে হেয়ার
রোডে ওই প্রতিরোধযন্ত্র (ডিভাইস) বসিয়েছে পুলিশের
ট্রাফিক বিভাগ৷ যন্ত্রটি উদ্বোধনের সময় পুলিশের পক্ষ
থেকে জানানো হয়েছিল, তাদের জানানো হলে যানজটের সময়
অ্যাম্বুলেন্সসহ জরুরি যানবাহনের জন্য বিশেষ
ব্যবস্থা নেওয়া হবে৷
চাকা ফুটো হয়ে যাওয়ার পর দীর্ঘক্ষণ রাস্তায়
অ্যাম্বুলেন্সটি দাঁড়িয়ে থাকে৷
একপর্যায়ে রোগী অসুস্থবোধ করলে তাঁকে ব্যথানাশক
ইনজেকশন দেওয়া হয় l ছবি: প্রথম আলো
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হেয়ার রোডে বসানো ওই
প্রতিরোধযন্ত্র অতিক্রম করার সময় অ্যাম্বুলেন্সের
চারটি চাকাই ফুটো হয়ে যায়৷ বিকল অ্যাম্বুলেন্সটি সড়কের
প্রায় মাঝখানে অাটকে থাকে কিছুক্ষণ৷ পরে পুলিশ অন্যদের
সহযোগিতায় অ্যম্বুলেন্সটি ঠেলে সড়কের
একপাশে নিয়ে যায়৷ অ্যাম্বুলেন্সে থাকা মাথায় ও
হাতে গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত রোগী রিংকু
ফরাজী কাতরাচ্ছিলেন৷ সঙ্গে থাকা উদ্বিগ্ন ভাই, খালা ও
এক আত্মীয় বুঝতে পারছিলেন না কী করবেন৷ কারও
সহযোগিতাও পাচ্ছিলেন না৷ একপর্যায়ে তাঁরা রিংকু
ফরাজীকে অ্যাম্বুলেন্স
থেকে স্ট্রেচারে করে নামিয়ে ফুটপাতে আনেন৷
যন্ত্রণা কমাতে সঙ্গী আত্মীয় তাঁকে ব্যথানাশক
ইনজেকশন দেন৷ প্রায় পৌনে এক ঘণ্টা পর
আরেকটি অ্যাম্বুলেন্স জোগাড়
করে তাঁরা রোগীকে নিয়ে আবার পঙ্গু হাসপাতালের
দিকে রওনা দেন৷
বিকল অ্যাম্বুলেন্সের চালক সোহেল রানা জানান, রাজধানীর
পথঘাটও তিনি ঠিকমতো চেনেন না৷ রোগীর ভাইয়ের
কথামতো তিনি উল্টো পথ ধরে হাসপাতালে যাচ্ছিলেন৷
সড়কে চাকা ফুটো করার যন্ত্র বসানো হয়েছে,
তা তিনি জানতেন না৷
জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গণমাধ্যম
ও জনসংযোগ বিভাগের উপকমিশনার মো. মাসুদুর রহমান
রাতে প্রথম আলোকে বলেন, জরুরি সেবা দিতে পুলিশ
প্রস্তুত রয়েছে৷ তবে তা পুলিশকে আগে জানাতে হবে৷
Posted via Blogaway
No comments:
Post a Comment