নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জ
সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র ও
৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম ও
আইনজীবী চন্দন সরকারসহ ৭ জনকে অপহরণের
পর কারা হত্যা করেছে তার তথ্য দিলেন
আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য শামীম ওসমান।
রোববার শিমরাইলে নজরুল ইসলাম
হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে স্থানীয়
আওয়ামী লীগের এক সমাবেশে প্রধান
অতিথির বক্তব্যে তিনি এ তথ্য প্রকাশ
করেন। পরে তিনি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায়
একটি অডিও প্রকাশ করেন।
শামীম ওসমান বলেন, ‘যারা জহিরুল ইসলাম
পারভেজকে (ক্যাঙ্গারু পারভেজ)
হত্যা করেছে তারাই নজরুল ইসলামসহ ৭
জনকে অপহরণের পর হত্যা করে নদীতে লাশ
ফেলে দিয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘এই মঞ্চে দাঁড়িয়ে বলতে চাই
এই মামলায় যাদের নাম আছে তাদের
মধ্যে যদি কেউ মনে করেন
আপনি অপরাধী না তাহলে কোর্টে যান।
আত্মসমর্পণ করেন। হেসেনও
যদি মনে করে সে অপরাধী না কিংবা হাসু,
ইশাবেলা, ইয়াসীন ভাইও
যদি মনে করে তারা অপরাধী না।
তাহলে বলবো আদালতে সারেন্ডার
(আত্মসমর্পণ) করেন।’
তবে তিনি এও বলেন, ‘এই হত্যাকাণ্ডের
সঙ্গে হোসেনের
সম্পৃক্ততা আছে এটা প্রমাণিত হয়। এই
ইকবাল কে? সে এর আগে সিটি করপোরেশনের
নির্বাচনের আগে ১ কোটি টাকার
কন্টাকে র্যাব-১০
কে দিয়ে নজরুলকে তুলে নিয়ে যায়। ভাগ্য
ভালো তখন আমি প্রধানমন্ত্রীর
কার্যালয়ে ছিলাম। তাৎক্ষণিক
আমি প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন মহলের
সঙ্গে যোগাযোগ করি। এবং আল্লার অশেষ
রহমতে নজরুলকে ফিরিয়ে আনি। তাই
ইলেকশনের
আগে যে তুলে নিয়ে যেতে পরে সে এখন
হত্যাও করতে পারে। এটা শতভাগ প্রমাণীত।
শুধু সেই নয় অন্য আমি আরো মনে করি যাদের
নামে মামলা হয়েছে তারাও শতভাগ এই
হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত। তাদের
অমিলম্বে গ্রেপ্তার করতে হবে।’
নজরুল ইসলামকে নিজের লোক
দাবি করে শামীম বলেন,
‘ওকে হত্যা করে আমার হাত ভেঙে দিয়েছে।
ওকে আমি আমার নিজের হাতে তৈরি করেছি।
নজরুল রাস্তা থেকে উঠে আসেনি, ছাত্রলীগ
থেকে উঠে এসেছে। যারা ছাত্রলীগ
থেকে রাজনীতিতে আসে তারাই প্রকৃত
পক্ষে রাজনীতিক হয়।’
নিজের জীবনের নিরাপত্তা নেই
দাবি করে তিনি বলেন, ‘আমি শামীম
ওসমানকেও এখন নিজের জীবনের
নিরাপত্তা চেয়ে থানায় জিডি করতে হয়।
তবে আমি আমার জীবন নিয়ে ভয় পাই না।
প্রতিদিনই ঢাকা থেকে নারায়ণগঞ্জ
একা একা আসি। গাড়িতে নফল নামাজ
পড়তে পড়তে আসা-যাওয়া করি।’
তিনি বলেন,
‘ওরা আমারে ভালো থাকতে দিচ্ছে না। কেউ
যদি মনে করে,
কোনো ব্যক্তি বা বাহিনী যদি আমার নম্র
কথা বা আমার
ভদ্রতাকে দুর্বলতা ভাবে এটা তাদের ভুল।
আপনারা আর ভুল ভাইবেন না, আজকের
থেকে আমি আর ভদ্র থাকবো না। যারা এই
হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে তাদের আর ছাড়
দেয়া হবে না।’
শামীম ওসমান বলেন, ‘সব সময় কিছু লোক
থাকে, যারা যে কোনো ঘটনা ঘটলেই
সেটাকে অন্যদিকে টার্নিং করে দেয়।
ঘটনা ঘটে শেষ হওয়ার আগেই বলতে শুরু
করে ওসমান পরিবার, ওসমান
পরিবার...বিশেষ পরিবার...। এই পরিবার
ওই পরিবার কইরা মূল
ঘটনা টার্নিং করে দেয়াই তাদের কাজ।
এবার হবে না। আমরা এবার মাঠে নামবো।
তবে আমি আপনাদের
আস্থা দিতে পারি ইনশাল্লাহ মাঠে আমাদের
নামতে হবে না।’
তিনি বলেন, ‘আমি আমাদের প্রধানমন্ত্রী,
যাকে আমি আমার মায়ের মতো ভালোবাসি।
জননেত্রী শেখ হাসিনা, যিনি তার সব
হারিয়েছেন। স্বজন হারানোর ব্যথা শেখ
হাসিনা বুঝেন। কারণ উনারও তো সবাই
গেছেন। আমি ওনার সাথে কথা বলেছি যে,
আপা আমার শারীরিক ও মানসিক
অবস্থা এতো খারাপ যে ভাইয়ার মৃত্যুর পর
আমার পক্ষে কারো কাছে যাওয়া সম্ভব না,
মিটিং করাও সম্ভব না, মিথ্যা বলাও
সম্ভবনা। আমি মিথ্যা আশ্বাস দেবো না।
শেখ হাসিনা আমায়
পরিষ্কারভাবে বলে দিয়ে বলেছেন যে,
শামীম এই ঘটনার
আগে পেছনে টাকা দিয়ে বা কিলিং করার
পেছনে যারা আছে আমি প্রধানমন্ত্রী থাকা অবস্থায়
কেউ রেহাই পাবে না।’
উল্লেখ্য, গত ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ
সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র ও
৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম ও
আইনজীবী চন্দন সরকারসহ ৭
জনকে দিনে দুপুরে অপহরণ করে সন্ত্রাসীরা।
ওইদিন সন্ধ্যায় গাজীপুর থেকে আপহৃত
নজরুলের গাড়ি উদ্ধার করা হয়। এরপর গত
বুধবার দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত
শীতলক্ষ্যা নদী থেকে অপহৃতদের মৃতদেহ
উদ্ধার করে পুলিশ।
Posted via Blogaway
No comments:
Post a Comment