Headlines



gazitv2

w41j

gazitv

Showing posts with label inews. Show all posts
Showing posts with label inews. Show all posts

Thursday, July 24, 2014

ঘরহীন ঘরে লাখো মানুষ

সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ চলছে দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে। সেই
যুদ্ধে অসংখ্য মানুষ নিহত হয়েছে। ঘরছাড়া হয়ে পাশের
দেশে আশ্রয় নিয়েছে কয়েক লাখ মানুষ।
ভিনভাষী ভিনদেশে স্বজনহীন অনাত্মীয় পরিবেশে কেমন
আছে ওরা? লিখেছেন ঐশী পূর্ণতা
সিরিয়ায় দুই বছরের বেশি সময় ধরে চলছে সরকার ও
বিরোধীদের সশস্ত্র সঙ্ঘাত। সেই হানাহানিতে যেমন
মরছে উভয় পক্ষের সৈন্যরা, তেমনি প্রাণহানি হচ্ছে অসংখ্য
নিরপরাধ সাধারণ মানুষেরও। প্রাণ বাঁচাতে অগণিত মানুষ
ছাড়ছে দেশ; ছুটছে অজানার পথে।
সেই অজানা পথটি অবশ্য খুব বেশি দূরে নয়; পাশের দেশ
তুরস্ক। অসংখ্য সিরিয়ান এখন আশ্রয় নিয়েছে তুরস্কের
শরণার্থী শিবিরে। আবার অনেকে শরণার্থী শিবির
ছেড়ে ছড়িয়ে পড়েছে নানা শহরে,
এমনকি রাজধানী ইস্তানবুলেও। শরণার্থী শিবিরের
বাইরে সিরিয়ানদের উপস্থিতি এত বেশি যে,
একটি তুর্কি পত্রিকা লিখেছে, এই শহরে (রাজধানী) অল্প
কিছু দূর হেঁটে গেলেই আপনি দু-একজন সিরীয় শরণার্থীর
সাথে ধাক্কা খাবেনই।
গৃহযুদ্ধ শুরুর সাথে সাথেই সিরিয়ান
শরণার্থীরা তুরস্কে পাড়ি জমাতে শুরু করে। তারা প্রধানত
এসেছে হোমস, দামেস্ক ও লাতাকিয়া থেকে। আসার
আগে তারা যেমন ছিল দুর্যোগে, তুরস্কেও তাদের
বিপত্তি কম নয়।
তুরস্কে সিরিয়ান শরণার্থীদের প্রধান ‘বিপত্তি’ হলো ভাষা।
সিরিয়া হলো আরবিভাষী দেশ। পক্ষান্তরে তুরস্কের
ভাষা তুর্কি বা টার্কিশ। তুরস্কে এসে তারা ছেলেমেয়েদের
ভর্তি করিয়ে দিয়েছে তুর্কিভাষী স্কুল-কলেজে, কিন্তু
চাকরি বা কাজ খুঁজতে গিয়ে নিজেদের পড়তে হচ্ছে বিপাকে।
তবে অনেকে আবার এই ‘বিপাক’কে সুযোগ বানিয়ে দু’
পয়সা উপার্জন করে নিচ্ছে। যেমন, অনেক
তুর্কি আরবি ভাষা শিখতে চায়। তাদের আরবি শেখানোর
কাজটি করছে অনেক শরণার্থী। তাতে আয়-উপার্জন
কিছুটা হচ্ছে তাদের।
তবে তাতেই যে কাঁড়ি কাঁড়ি অর্থ উপার্জন হচ্ছে, এমনও
নয়। স্বদেশে যত অর্থ বিত্ত-মর্যাদার অধিকারীই থাকুক
না কেন, এই ভিনভাষী ভিনদেশে তারা তো শরণার্থী বৈ আর
কিছু নয়। তাই
ছোটখাটো একতলা বাড়িভাড়া নিয়ে গাদাগাদি করে তারা থাকছে ফাতিহ,
ইউপ, ইয়েনিবসনা, ইসেনলার, বাসাকসেইর,
ইকিতেলি প্রভৃতি এলাকায়।
অনেকে বিয়েশাদি করে ঘরসংসারও শুরু করছে সেখানে।
তাদের কেউ চলছে সিরিয়া থেকে চলে আসার সময় এটা-
সেটা বিক্রি করে আনা জমানো টাকা ভেঙে।
আরবি শিখিয়ে যেমন কেউ চলছে,
তেমনি অনেকে শিখছে তুর্কি ভাষা। আশা :
তাহলে চাকরি পেতে বা টুকটাক ব্যবসায়-বাণিজ্য
করতে পারা যাবে। যারা এসবের কিছুই করতে পারছে না,
তাদের জন্য আছে বিভিন্ন দাতব্য সংস্থা এবং দানশীল
ব্যক্তিমানুষের সাহায্য।
তুরস্কের ১০টি নগরীতে সিরিয়ান শরণার্থীদের জন্য
খোলা হয়েছে ২০টি শিবির। সেখানে দুই লাখ তালিকাভুক্ত
শরণার্থী আশ্রয় নিয়েছে। এ ছাড়া রাজধানী ইস্তানবুলে ২০
হাজার তালিকাভুক্ত শরণার্থী রয়েছে, তবে তালিকাবহির্ভূত
শরণার্থীর সংখ্যা সেখানে কমবেশি ৬০ হাজার
হবে বলে ধারণা করা হয়। গোটা তুরস্কে তালিকাবহির্ভূত
শরণার্থীর সংখ্যা দুই লাখ
হবে বলে সাধারণভাবে মনে করা হয়।
তুরস্কে কেমন আছে সিরিয়ার এই চার লাখ
ঘরহারা দেশছাড়া মানুষের দল? মুস্তাফা (৩৪) ও রেশা (৩০)
দম্পতির কথাই ধরা যাক। তারা থাকতেন রাজধানী দামেস্কে।
মস্কো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গ্র্যাজুয়েশন করা মুস্তাফা নিজ
দেশে ছিলেন একজন সফল ডাক্তার। মাতৃভাষা আরবি ছাড়াও
বলতে পারেন ইংরেজি ও রুশ ভাষা। গৃহযুদ্ধের
তাড়া খেয়ে পাঁচ মাস আগে সব পেছনে ফেলে দুই শিশু
সন্তানকে নিয়ে চলে আসেন তুরস্কে। এখন থাকেন ফাতিহ
এলাকায়; দুই কামরার একটি ছোট্ট বাসায়। তুরস্কে আসার
পর প্রথম তিন মাস ছিলেন বেকার। চলেছেন দেশ
থেকে আনা টাকায় আর খুঁজেছেন চাকরি। কিন্তু কোথাও তার
জন্য চাকরি নেই। সবখানেই সাফ জবাব : ‘কোনো সিরিয়ান
ডাক্তারকে আমরা চাকরি দিতে পারব না।’ মাস-দুই
আগে অবশেষে মুস্তাফা একটি চাকরি পেলেন, তবে ডাক্তার
নয়, এখন তিনি একটি জুতার দোকানের সেলসকার্ক।
ইন্টারনাল মেডিসিনের স্পেশালিস্ট এখন জুতার দোকানের
ক্যাশিয়ার। বেতন মাসে ৭৫০ তুর্কি লিরা।
এভাবেই বেঁচে আছেন মুস্তাফা; একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার।
তা বেঁচে তো আছেন, কেমন আছেন ডাক্তার মুস্তাফা। তার
মুখেই শোনা যাক : ‘আমাকে প্রতিদিন ১৩ ঘণ্টা খাটতে হয়।
আমার ইউনিভার্সিটি ডিপ্লোমার কোনো মূল্য নেই এখানে।
খুব কঠিন জীবন। কিন্তু কী করা, বউ-বাচ্চা আছে। তাদের
মুখে দু’ মুঠো খাবার তুলে দেয়ার জন্য হলেও তো কিছু আয়-
রোজগার করতে হবে। তবে আমি চাই, আমার পুরনো পেশায়
(ডাক্তারি) ফিরে যেতে। তা সম্ভব না হলে অন্তত
ভাষা শেখানোর কাজটিও করতে পারি।’
‘দেশে তো ডাক্তার ছিলেন, পসারও ছিল ভালো। এই
ভিনদেশে এলেন কেন?’ জিজ্ঞেস করা হয়েছিল মুস্তাফাকে।
মুস্তাফার বুকফাটা আক্ষেপ : ‘এসেছি কি আর সাধে?
ওখানে (সিরিয়ায়) কোনো কারণ ছাড়াই প্রতিদিন অসংখ্য পুরুষ
মানুষকে ধরে ধরে জবাই করা হয়। নারী ও শিশুদের অপহরণ
করে কোথায় যে নিয়ে যাওয়া হয়! এ জন্যই এ দেশে।
নইলে কি কেউ নিজের দেশ ছাড়ে?’
এবার বলা যাক অপেক্ষাকৃত ভাগ্যবান আরেক দম্পতির কথা।
তারা হলেন আবদুল্লাহ (৩৫) ও মেলেক (৩১)।
দেশে থাকতে দু’জনই ছিলেন আল নূর ইউনিভার্সিটির
শিক্ষক। তুরস্কে এসেছেন বছরখানেক আগে। এসেই
তারা তুর্কি শিক্ষার্থীদের আরবি শেখানোর কাজ শুরু করেন।
তারা বলেন, আমাদের সৌভাগ্য যে, খুব সহজেই
আমরা কাজটি পেয়েছি। তবে আমাদের সবাই এ রকম
ভাগ্যবান নয়। আরবি শেখানো ছাড়া অন্য কাজ
যারা করছে তাদের খুব কম বেতনে অনেক
বেশি খাটতে হচ্ছে।
আরো সমস্যা আছে। যেমন, তাদের দুই সন্তান। একটির
বয়স ১২, অন্যটির চার বছর। সিরিয়ার যুদ্ধ ওদের
মধ্যে মানসিক বৈকল্যের জন্ম দিয়েছে। সিরিয়া ছাড়ার পর
ওদের আচার-আচরণে উগ্রতা ফুটে উঠেছে। হতাশ গলায়
বললেন ওদের মা মেলেক, ‘বলুন, শান্তি কোথায়?’
শুধু তা-ই নয়। টার্কিশ ভাষায় না-জানাও তাদের
পদে পদে বিপত্তি ঘটাচ্ছে। মেলেক বলেন,
যদি কোনো আরবিভাষী দেশে যেতে পারতাম, সেটাই
ভালো হতো। কিন্তু ওসব দেশ আমাদের মুখের ওপর ‘না’
করে দিয়েছে।
ইস্তানবুলের ইকিতেল্লি এলাকায় একটি এক কামরার
‘বাড়িতে’ বাস করেন আরেক সিরিয়ান
দম্পতি সুফি ইলাহি (২৩) ও দেলা মুহতার ইলাহি (১৭)।
তাদের আছে তিন মাস বয়সী এক শিশুসন্তান।
সাথে থাকে আরো তিন ভাই। সিরিয়ায় তাদের ছিল
বাগানঘেরা এক বিশাল বাড়ি। আর এখন তাদের
থাকতে হচ্ছে এক কামরার বাড়িতে।
ইস্তানবুলে এসেই তারা ঝাঁপিয়ে পড়েছেন কাজে। পেশায়
তারা জুতার কারিগর। সুতরাং কাজ পেতে তাদের খুব
বেশি ঝক্কি পোহাতে হয়নি। সমস্যা যেটা,
সেটা হচ্ছে মজুরিতে। একে তো শরণার্থী, তার ওপর
এখনো তাদের শরণার্থী কার্ড করানো হয়নি। এই
সুযোগে কম বেতনে অনেক
বেশি খাটিয়ে নিচ্ছে নিয়োগকর্তারা।
চাকরির টাকায় শুধু যে নিজেরা চলছে, তা নয়।
দেশে ফেলে আসা স্বজনদের জন্য টাকা পাঠাতে হয় অনেক
শরণার্থীর মতো সুফিদেরও। সুফির ভাই ইলিয়াস বলে, যেসব
সিরিয়ান সীমান্ত এলাকায় বাস করে, তাদের জন্য
টাকা পাঠাতেই হবে। কারণ, যুদ্ধ তাদের সর্বস্বান্ত
করে দিয়েছে।
তুরস্কের এত শহর থাকতে কেন
তারা রাজধানী ইস্তানবুলে এলো জানতে চাওয়া হয়েছিল সুফির
কাছে। সুফির জবাব : আমাদের সব আত্মীয়স্বজন আগেই
এখানে এসে গেছে তো, তাই। তা ছাড়া আমরা জুতার
কারিগর। এই কাজটা বড় শহরে খুঁজে পাওয়া সোজা। এটাও
একটা কারণ। এখানে কম বেতনে বেশি খাটতে হচ্ছে ঠিকই,
কিন্তু থাকা-খাওয়াটা চলে যাচ্ছে। তা ছাড়া দেশে (তুরস্ক-
সিরিয়া সীমান্ত এলাকায়) আমাদের মা, বাবা ও
বোনেরা থাকে। ওদের জন্যও টাকা-পয়সা কিছু
পাঠাতে পারছি।
সুফির ভাই ইউসুফের বয়স সবে ১২। পেটের
দায়ে সে বেচারাকেও কাজ করতে হয় এবং প্রতিদিন ১২
ঘণ্টা। খেলার বয়স তার, কিন্তু খেলার সময় কোথায়? আর
যেহেতু খেলতে যেতে পারে না, তাই এ দেশে তার
কোনো বন্ধুবান্ধবও নেই। তার কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল,
তুরস্ক কেমন লাগছে তার। তার জবাবে বৈষম্যের
চিত্রটি ফুটে ওঠে। সে বলে, যখনই এ দেশের লোকজন
বুঝতে পারে যে আমরা সিরিয়ান, অমনি ক্ষেপে যায়। বলে,
‘এইহানে আইছো ক্যান? পলাইয়া আইছো? নিজ
দ্যাশে থাইক্যা যুদ্ধ করতে পাইরলা না?’
ডিগ্রি ধুয়ে খাওয়া যায় না
যেসব উচ্চশিক্ষিত সিরিয়ান শরণার্থী এখনো বেকার, তাদের
মুখে একটি কথা এখন প্রায়-প্রবাদে রূপ নিয়েছে :
‘ডিগ্রি ধুয়ে খাওয়া যায় না’।
এই প্রবচনের বাস্তবতা মিলবে সেলাম ওনা (৫০) ও তার
স্বামীর দিকে তাকালে। আট সন্তানকে নিয়ে দুই বছর
আগে পালিয়ে তুরস্কে আসেন এই দম্পতি। বাসা নেন
ইস্তানবুলের বাসাকসেহির এলাকায়। স্বামী-স্ত্রী দু’জনই
কনস্ট্রাকশন ইঞ্জিনিয়ার। কিন্তু তবুও তুরস্কে তাদের
চাকরি মেলে না। কারণ হলো তারা টার্কিশ ভাষা জানেন না।
ওনা বলেন, দেশ থেকে জমানো টাকা-
পয়সা যা নিয়ে এসেছিলাম, সেটা ভাঙিয়েই এত দিন খেয়েছি।
এখন তা-ও তলানিতে এসে ঠেকেছে।
তাদের মেয়ে ফাতিমা বাহুদ (২১) পড়ত মেডিক্যাল স্কুলে।
তুরস্কে আসায় তা-ও ছাড়তে হয়েছে। সে এখন স্থানীয়
একটি ইউনিভার্সিটিতে টার্কিশ ভাষা শিখছে। তার মনের
গোপন বাসনা, আবার সে মেডিক্যাল স্কুলে ফিরে যাবে।
তার এ বাসনা কি সফল হবে? না, এ প্রশ্নের উত্তর
জানে না ফাতিমা। জানা নেই তার বাবা-মায়েরও।
শরণার্থী নিয়ে তুর্কিরা কী ভাবছে
শরণার্থীদের প্রতি সাধারণ তুর্কিদের মনোভাব
কী সেটা জানা গেছে জুতার কারিগর, কিশোর ইউসুফের কথায়।
‘অসাধারণ’ তুর্কিদের মনোভঙ্গিও সাধারণদের চেয়ে এমন
কিছু অসাধারণ বা ব্যতিক্রমী নয়।
বাহচেশির বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজতত্ত্ব বিভাগের প্রফেসর
নিলুফারের কথাই শোনা যাক। তিনি বলেন,
রাজধানী এবং সীমান্ত শহরগুলোতে শরণার্থীর
সংখ্যা যেভাবে বাড়ছে, তা বিরাট সমস্যা তৈরি করবে।
তিনি বলেন, বেশির ভাগ সিরিয়ান শরণার্থী টেক্সটাইল
ফ্যাক্টরি এবং অন্যান্য শিল্পপ্রতিষ্ঠানে অবৈধভাবে কাজ
করছে। এদের কোনো স্বাস্থ্যবীমা নেই। সিরিয়ার
যে অবস্থা, তাতে বোঝাই যায় যে, এ দেশে সিরিয়ান
শরণার্থীর সংখ্যা ভবিষ্যতে আরো বাড়বে।
এটা ভবিষ্যতে অনেক সামাজিক সমস্যা তৈরি করবে। এ
ছাড়া সাধারণ তুর্কিদের মধ্যে শরণার্থীদের
সম্বন্ধে একটা নেতিবাচক মনোভাব জন্ম নেবে।
প্রফেসর নিলুফারের শরণার্থী সমস্যা বিষয়ে ব্যাপক
অভিজ্ঞতা রয়েছে। ১৯৭৯ সালে ইরানের ইসলামি বিপ্লবের
পর বিপুলসংখ্যক ইরানি পালিয়ে তুরস্কে চলে যায়। তাদের
আগমন, অবস্থান এবং এর ফলে সৃষ্ট
নানা সমস্যা নিয়ে ব্যাপক পর্যবেক্ষণ, সমীক্ষা ও
গবেষণা করেছেন তিনি। সেই অভিজ্ঞতার জের
টেনে প্রফেসর নিলুফার বলেন, সেবার তুরস্কে ১৫ লাখ
শরণার্থী এসেছিল। তাদের কেউ কেউ তুরস্ক
থেকে ইউরোপের নানা দেশে চলে যায়, তবে বেশির ভাগই
তুরস্কেই থেকে যায়। যারা থেকে যায় তাদের পোহাতে হয়
নানা দুর্ভোগ। তুরস্কের শরণার্থী আইন অনুযায়ী তাদের
দেয়া হয় ‘মেহমান’ মর্যাদা। কিন্তু হলে হবে কী,
ছেলেমেয়েদের স্কুল-
কলেজে পাঠানো কিংবা চাকরি পাওয়া কঠিন হয় তাদের।
তারা কাজ করত বেআইনিভাবে। অনেক
ইরানি শরণার্থী নানা রকম অপরাধেও জড়িয়ে পড়ে।
প্রফেসর নিলুফার বলেন, অভিজ্ঞতার আলোকে এবার
সিরিয়ান শরণার্থীরা আসার সাথে সাথেই তাদের বেশির
ভাগকে শরণার্থী শিবিরে ঢোকানো হয়েছে। এই কাজটা খুব
ভালো হয়েছে।
তবে শরণার্থীদের অনেকে তুরস্কে বেআইনিভাবে কাজ
করছে এবং বেশ কম বেতনে। প্রফেসর নিলুফারের মতে,
এটাও একটা সামাজিক সঙ্কট তৈরি করবে।
তুর্কি নিয়োগকর্তারা কম বেতনে শরণার্থী শ্রমিক
পেয়ে হয়তো দেশীয় শ্রমিকদের বাদ দিয়ে ওদেরই নেবেন।
এতে দেশে শ্রমিক অসন্তোষ দেখা দিতে পারে।
এ ছাড়া সিরিয়ান শরণার্থীদের নানা অপরাধের
সাথে জড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা খুব বেশি বলেই মনে করেন
প্রফেসর নিলুফার। তার মতে, ওরা যে ধরনের খারাপ
অবস্থায় বসবাস করছে, তাতে অপরাধে জড়ানোটাই
স্বাভাবিক।
এর সমাধান কী? প্রফেসর নিলুফার বলেন, সিরিয়ান
শরণার্থীদের সরকারিভাবে ‘শরণার্থী’
হিসেবে স্বীকৃতি দিতে হবে; ‘মেহমান’ নয়। এরপরই তাদের
ওয়ার্ক পারমিট ইস্যু করতে হবে এবং তাদের
ছেলেমেয়েরা যাতে লেখাপড়ার সুযোগ পায়, সেই
ব্যবস্থা করতে হবে। এর
অন্যথা হলে মহাসঙ্কটে পড়তে হবে তুরস্ককে, যে সঙ্কট
থেকে উত্তরণের পথ কারো জানা নেই।
তিনি বলেন, সরকারিভাবে বিভিন্ন শহরে স্পেশাল ইউনিট
স্থাপন করতে হবে, যারা শরণার্থীদের থাকা, খাওয়া, চাকরি,
শিক্ষা, স্বাস্থ্য ইত্যাদির ব্যাপারে প্রয়োজনীয়
ব্যবস্থা নেবে। আর এ বিষয়ে তুরস্কের আন্তর্জাতিক
সহযোগিতাও চাওয়া উচিত।

posted from Bloggeroid

Monday, July 21, 2014

শিক্ষার্থীদের পর্নভিডিও দেখিয়ে অশালীন নির্যাতন করতেন শিক্ষক

আর্ন্তজাতিক ডেস্ক: ব্যাঙ্গালুরের এক শিক্ষক
শ্রেণিকক্ষে পর্নভিডিও দেখিয়ে শিক্ষার্থীদের ধর্ষণ
করতেন বলে অভিযোগ মিলেছে। ৩০ বছর বয়সী অভিযুক্ত
শিক্ষক মোস্তফা ইলিয়াস মুন্নাকে রবিবার গ্রেপ্তার করেন
পুলিশ।
বেসরকারি এক বিদ্যালয়ের আইসস্কেটিংয়ের শিক্ষক
ছিলেন মোস্তফা। তিন সপ্তাহ আগে ছয় বছর বয়সী এক
শিক্ষার্থীকে শ্রেণিকক্ষে যৌন নিপীড়ন করেন তিনি। এই
ঘটনা নাড়া দেয় ভারতের সমগ্র মানুষকে।
মোস্তফাকে গ্রেপ্তারের দাবিতে স্কুলের সামনে অবস্থান
নেন অভিভাবক এবং সচেতন নাগরিকরা।
রবিবার মোস্তফাকে গ্রেপ্তারের পরে পুলিশ কমিশনার
রাগাবেন্দ্রা আরুদকার বলেন, ‘ইন্ডিয়ার প্যানেল কোর্টের
৩৭৬ এবং ৪০৬ ধারায় মোস্তফাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এছাড়া ওই নির্যাতিত শিক্ষার্থীর অভিভাবক বিদ্যালয়ের
আরও ছয়জন কর্মীর বিরুদ্ধে মোস্তফাকে সহায়তার
অভিযোগ এনেছেন। সেই অভিযোগও তদন্ত করে দেখা হবে।’
মোস্তফার
মোবাইল
এবং ল্যাপটপ
জব্দ
করেছে পুলিশ।
পুলিশ
জানায়,
ওই
ল্যাপটপ
এবং মোবাইলে প্রচুর
পর্নভিডিও
রয়েছে।
বিদ্যালয়ের
ছোট
শিশুদের
এগুলো দেখিয়ে ধর্ষণ
করতেন
তিনি।
এগুলো তিনি ইন্টারনেটের
বিভিন্ন
পর্নসাইড
থেকে ডাউনলোড
করেছিলেন।
এসব
কার্যকলাপ
থেকেই
বুঝা যায়
মোস্তফা কতোটা নিচু
মানসিকতার।
অভিযুক্ত মোস্তফা প্রায় ২০ বছর ধরে ব্যাঙ্গালুরে বাস
করছেন। এর আগে তিনি বিহারের দারবহাঙ্গায় থাকতেন।
২০১১ সাল থেকে মাসিক ১৮০০০ হাজার রূপিতে ওই
বিদ্যালয়ে কর্মরত ছিলেন মোস্তফা।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, মোস্তফা বিবাহিত এবং তার তিন
বছরের এক সন্তান রয়েছে।
প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, এর আগেও
আরেকটি বিদ্যালয়কে থেকে মোস্তফাকে একই
অভিযোগে বরখাস্ত করা হয়। তবে ওই
অভিযোগে কোনো মামলা দায়ের করা হয়নি।
উল্লেখ্য, ২ জুলাই মোস্তফা ছয় বছরের এক শিশুর ওপর
শ্রেণিকক্ষে যৌন নির্যাতন করেন। পরবর্তীতে ১৪ জুলাই
শিশুটির বাবা-মা বাদী হয়ে শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের
করেন।

posted from Bloggeroid