মানুষের মিথ্যা ধরার
ক্ষমতা অনেক শক্তিশালী। কিন্তু এ
ব্যাপারে সচেতন না থাকার
কারণে মিথ্যা বুঝতে প্রায়ই
ব্যর্থ হই আমরা। নতুন এক
গবেষণার পর এসব তথ্য
জানিয়েছেন ইউনিভার্সিটি অব
ক্যালিফোর্নিয়ার হাস স্কুল অব
বিজনেস এর ফরেনসিক
সাইকোলজিস্ট ড. লেনি টেন
ব্রিঙ্ক এবং তার দল।
সৌভাগ্যবশত অন্যের
অঙ্গভঙ্গীদেখেআপনিবুঝতেপারবেন
যে সে আপনার
সঙ্গে মিথ্যা বলছে কিনা। এ
কথা জানান এফবিআইয়ের সাবেক
বিহেভিরোয়াল অ্যানিলিস্ট
এবং বডি ল্যাঙ্গুয়েজ এক্সপার্ট ড.
লিলিয়ান গ্লাস।
এখানে ১১টি লক্ষণ
দেওয়া হলো যা দেখে বুঝতেপারবেন
কেউ আপনার
সঙ্গে মিথ্যা কথা বলছে কিনা।
১. মাথা দ্রুত
নাড়াচাড়া করা
যদি আপনি দেখেন যে,
বক্তা আপনার
সঙ্গে কথা বলতে বলতে ঘনঘন
হঠাৎ করে এলোমেলো নাড়াচ্ছেন
তবে বুঝবেন তিনি মিথ্যা বলছেন।
সরাসরি কোনো প্রশ্নের
জবাবে কেউ
মিথ্যা বললে এমনটি ঘটে।
গ্লাস বলেন, এ
ক্ষেত্রেমাথানাবোধকভাবেপেছনের
দিকে মাথা ঝাঁকায় অথবা দুই
পাশে কাত করে দেয়।
২. শ্বাস-প্রশ্বাসের
পরিবর্তন
রিফ্লেক্স অ্যাকশনের
কারণে মিথ্যাবাদী ঘন করে শ্বাস
নেয় বলে জানান গ্লাস। শ্বাস-
প্রশ্বাসের পরিবর্তনে তাদের
কাঁধ ওপরের দিকে উঠে যায়
এবং কণ্ঠ হালকা হয়ে আসে।
হৃদস্পন্দন এবং রক্তচাপের
পরিবর্তনের কারণে তাদের
অক্সিজিনের অভাব ঘটে। এ ধরনের
পরিবর্তন দেহে ঘটে যখন
দুশ্চিন্তা বা স্নায়বিক চাপ
থাকে।
৩. অস্বাভাবিকভাবে স্থির
দাঁড়িয়ে থাকার চেষ্টা
স্নায়বিক চাপে মানুষ উসখুস
করে এটা ঠিক। তবে এটাও ঠিক
যে তারা একদম
নড়াচড়া করতে চান না।
গ্লাস বলেন, এটা সহজাত
নিউরোলজিক্যাল সংগ্রামের
চিহ্ন। যখন কেউ আপনার
সঙ্গে বন্ধুসুলভ
মানসিকতা নিয়ে সহজ আচরণ
করবে, তখন তার মধ্যে দেহের
নড়াচড়া সহজ ও স্বাচ্ছন্দ্যময়
হবে। কিন্তু কথা বলার সময়
অতিমাত্রায় স্থির থাকার
প্রবণতা স্বাভাবিক আচরণের
প্রকাশ নয়।
৪. একই শব্দ বা বাক্যাংশ
বারবার বলা
এটা হয় কারণ
মিথ্যাবাদী আপনাকে বোঝানোর
চেষ্টা করছেন। এর আরেকটি কারণ
হলো, সন্তোষজনক জবাব
খুঁজতে তারা শব্দ বা বাক্য
খুঁজে পায় না। এ কারণে একই শব্দ
বা বাক্যাংশ ক্রমাগত বারবার
বলেত থাকেন মিথ্যাবাদী।
৫. অতিরিক্ত তথ্য প্রদান
করা
যখন কেউ আপনাকে অতিমাত্রায়
অপ্রয়োজনীয় তথ্য প্রদানের
চেষ্টা করে, তবে তার
মিথ্যা বলার বড়
সম্ভাবনা রয়েছে। গ্লাসের মতে,
তারা খুব দ্রুত আপনাকে বোঝানোর
চেষ্টা করবে যে,
সে যা বলছে তার সব সত্যি। আর এ
কারণেই অতিরিক্ত তথ্য দেওয়ার
চেষ্টা করেন।
৬. মুখ বা ঠোঁটে হাত দেওয়া
গ্লাস বলেন, মিথ্যা কথা বলার
সময় কেউ তার হাত
মুখে রেখে কথা বলার
চেষ্টা করেন। এর অর্থ কিছু
কথা তিনি বলতে চাচ্ছেন
না অথবা লুকোতা চাচ্ছেন।
ঠোঁটে হাত রাখার অর্থ
তিনি কথা-বার্তা বন্ধ
করতে চান।
৭. অবচেতনভাবে দেহের
অরক্ষিত অংশ ঢাকার চেষ্টা
দেহের বিভিন্ন অংশ যেসব
স্থানে আঘাত করা যায়, একজন
মিথ্যাবাদী অবচেতনভাবে সে সব
অংশ ঢাকার চেষ্টা করেন। যেমন-
গলা, মাথা বা বুক ইত্যাদি। এই
সকল স্থানে অকারণে হাত
রাখা হাত
নাড়াচাড়া করা ইত্যাদি আচরণ
প্রকাশ পায়।
৮. পা নাড়ানো
মিথ্যা বলার সময় মানুষ
পা নাড়ায় অতিমাত্রায়। এতে তার
অস্বস্তি বা স্নায়বিক চাপের
প্রকাশ ঘটে। এর আরেকটি অর্থ
মিথ্যাবাদী এখনই এই স্থান
থেকে সরে পড়তে চান।
৯. কথা বলা কঠিন হয়ে পড়ে
যেকোনো মিথ্যাবাদীর জন্য
ক্রমাগত কথা বলা কঠিন
হয়ে পড়ে। এর কারণ
হলো মিথ্যা বলার স্নায়বিক
চাপে তাদের
স্যালিভারি গ্রন্থি থেকে হরমোন
প্রবাহের মাত্রা কমতে থাকে।
এতে মুখের মিউকন মেমব্রেন
শুকনো হতে থাকে। ফলে তার
কথা চালিয়ে যাওয়া কঠিন
হয়ে পড়ে। এর লক্ষণ প্রকাশ পায়
বারবার ঠোঁটে কামড় বা ঠোঁট
চাটা ইত্যাদি।
১০. চোখের
পাতা না ফেলে তাকিয়ে থাকা
যখন মানুষ মিথ্যা বলে তখন
স্বাভাবিকভাবে তারা চোখে চোখ
রাখতে চায় না। তবে চতুর
মিথ্যাবাদী আপনার চোখে চোখ
রাখার চেষ্টা করবে। এ
ক্ষেত্রে চোখে চোখ রেখে মানুষ
সাধারণত তা চোখের
পাতা স্বাভাবিকমাত্রায় বন্ধ
হবে আবার খুলবে। কিন্তু
মিথ্যাবাদী বেশি সময়
ধরে একদৃষ্টে তাকিয়ে থাকার
চেষ্টা করবে।
অতি সাবধানতা অবলম্বন
করতেগিয়েমিথ্যাবাদীশীতলভাবেএকপলকেতাকিয়েথেকেআপনাকেমানিয়েনেওয়ার
চেষ্টা করবে।
১১. উত্তেজিত
হয়ে অতিরিক্ত
যুক্তি তুলে ধরা
অনেক
মিথ্যাবাদী ধরা খেয়ে গেলে তার
স্বাভাবিক আচরণ
ধরে রাখতে পারেন না।
ফলে উত্তেজিত হয়ে পড়েন
এবং তার মিথ্যাকে সত্য
করতে প্রচুর পরিমাণে যুক্তি-তর্ক
উত্থাপনের চেষ্টা করেন।
তা করতে গিয়ে প্রায় সময়ই
মেজাজ হারিয়ে ফেলেন। এ সময়
তার আচরণে ভয়ঙ্কর কিছুও
ফুটে উঠতে পারে। সূত্র : বিজনেস
ইনসাইডার
Posted via Blogaway