Headlines



gazitv2

w41j

gazitv

Showing posts with label rana plaza. Show all posts
Showing posts with label rana plaza. Show all posts

Monday, April 28, 2014

অবিশ্বাস্য,সাভার ট্রাজেডির এক বছর পর জানা গেল সাবিনা বেঁচে আছেন!

অইয়ে গেলিও আমি একদিনের জন্যিও
মনে করিনি আমার সাবিনা মরে গেছে। আমার
কলিজার ধন আমারে ছাড়ি যাতি পারে না।
আমার বুকির মধ্যি শুধু বাজত কিডা যেন
আমারে কচ্ছে- এই দ্যাখ তোমার
সাবিনা বাঁচে আছে। সত্যিই আজ সেই খবর
পালাম। খবর শুনে শুধু কানতিছি। মানুষ
সুখি আর দুখি কান্দে। আজ সারাদিন
আমি সুখির কান্না কানতিছি। দুই রাকাত
নফল নামাজও পড়িছি।’
রানা প্লাজা ট্রাজেডির এক বছর দুইদিন পর
নিখোঁজ গার্মেন্টকর্মী সাবিনার সন্ধান
পাবার পর তার মা সালেহা এভাবেই
প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করলেন। অবিশ্বাস্য
ঘটনায় এখন আনন্দের
জোয়ারে ভাসছে সাবিনার পরিবার।
যশোরের চৌগাছা উপজেলার নারায়ণপুর
ইউনিয়নের গুয়াতলী গ্রামের কৃষক
মঈনউদ্দীন ও গৃহিণী সালেহার ৩ ছেলে ও ৪
মেয়ের মধ্যে সাবিনা (২৩) ৬ষ্ঠ। মেয়েদের
মধ্যে সবার ছোট। রানা প্লাজা ট্রাজেডির
পর থেকেই সাবিনা নিখোঁজ ছিলেন। ছিলেন
সংজ্ঞাহীন এবং নির্বাক। মাত্র পক্ষকাল
আগে তার জ্ঞান ফেরে। প্রায় ৬ মাস
আগে ডিএনএ পরীক্ষায় তার পরিচয় সনাক্ত
হয়। কিন্তু চিকিত্সার স্বার্থে এতদিন তার
পরিবার-পরিজনকে বিষয়টি জানানো হয়নি।
এখনো হাসপাতালের বেডে নির্বাক
চোখে ছাদের দিকে তাকিয়ে স্মৃতি হাতড়ানোর
চেষ্টা করছে সাবিনার মতো আরও শ’খানেক
হতভাগা। অনেকেরই পরিচয় জানা সম্ভব
হয়নি এখনো।
সূত্র জানায়, ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল
সাভারে রানা প্লাজা ধসের পর অনেকের
সাথে উদ্ধার অভিযানে অংশ নেয় সাভার
ক্যান্টনমেন্টের একটি দল। ৪৫০ জন
সদস্যের দলটিতে নেতৃত্বে ছিলেন কর্নেল
মারুফ হাসান। দুর্ঘটনার ৪৮ ঘন্টা পর ৩য়
তলার একটি বাথরুমে অচেতন অবস্থায়
পরিচয়হীন সাবিনাকে পাওয়া যায়।
ফেটে যাওয়া মাথা এবং অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ
থেতলানো অবস্থায় তাকে উদ্ধার করা হয়।
সাভার সিএমএইচে নেয়ার পর
চিকিত্সকরা বুঝতে পারেন মেয়েটি জীবিত
আছে। ১৫ দিন সাভার সিএমএইচে রাখার পর
তাকে পাঠানো হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ
হাসপাতালে। ১৩ দিন পর সেখান
থেকে পাঠানো হয় পঙ্গু হাসপাতালে। দু’মাস
হলো পঙ্গু হাসপাতাল থেকে পাঠানো হয়
মিরপুরের সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে।
এখানে পরীক্ষা-নীরিক্ষার পর
দেখা গেছে তার বাম
কিডনি অকেজো হয়ে গেছে। মাথাও
ক্ষতিগ্রস্ত। এ সময় কিডনি পরিবর্তনের
জন্য ‘ডোনার’ আহ্বান
করে পত্রিকাতে বিজ্ঞপ্তিও দেয়া হয়।
আমেরিকা প্রবাসী এক
বাঙালি এবং শেরপুরের এক
ব্যক্তি কিডনিদাতা হবার আগ্রহ ব্যক্ত
করে সিএমএইচে যোগাযোগ করেন। এ
প্রেক্ষিতে গতকাল রবিবার বেলা ১২টার
দিকে তাকে সিএমএইচ থেকে ঢাকা মেডিক্যাল
কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
গতরাতেই সেখানে তার কিডনি প্রতিস্থাপন
এবং ব্রেনের সিটিস্ক্যান করার কথা।
এদিকে রানা প্লাজা ধসের পর গ্রাম
থেকে সাভারে ছুটে যান সাবিনার স্বজনেরা।
তারা সাভার থেকে ঢাকার
প্রতিটি প্রান্তে খুঁজে ফেরেন সাবিনাকে।
কিন্তু কোনো সন্ধান না পেয়ে ফিরে আসেন
গ্রামে। দ্বিতীয় দফায় আবারও সাভার আর
ঢাকায় ছোটাছুটি করে রণে ভঙ্গ দেন।
তবে ডিএনএ পরীক্ষার
কথা জেনে রেখে আসেন রক্তের নমুনা।
দুর্ঘটনার ৫-৬ মাস পর ডিএনএ পরীক্ষায়
সাবিনার পরিচয় সনাক্ত হয়। কিন্তু
চিকিত্সার স্বার্থে পরিবারের
কাছে বিষয়টি গোপন রেখে চেষ্টা চালানো হয়
সাবিনাকে সুস্থ করে তোলার। প্রায় একবছর
ধরে সংজ্ঞাহীন সাবিনার জ্ঞান
ফিরে আসে ১৫ দিন আগে।
আধো আধোভাবে সাবিনা নিজেও তার পরিচয়
নিশ্চিত করেন। এ সময় সিএমএইচ
থেকে স্বরাষ্ট্র
মন্ত্রণালয়ে বিষয়টি জানানো হলে সেখান
থেকে সাবিনাকে তার পরিবারের
কাছে হস্তান্তরের পরামর্শ দেয়া হয়।
সিএমএইচ থেকে শনিবার রাতে চৌগাছা থানার
ভারপ্রাপ্ত
কর্মকর্তাকে টেলিফোনে সাবিনার পরিবারের
সন্ধান করতে বলা হয়। রবিবার
সকালে পুলিশ চৌগাছা থানায় সাবিনার বাবা-
চাচাকে নিয়ে এসে ঢাকায় যোগাযোগ
করিয়ে দেয়। সিএইএইচের চিকিত্সক
কর্নেল মারুফ হাসান সাবিনার বাবাকে ঢাকায়
যাবার অনুরোধ করেন। রবিবার রাতে সাবিনার
বাবা মঈনউদ্দীন, চাচা আলাউদ্দীন
এবং সাবিনার মেজ বোন নাজেরা ঢাকায়
রওনা হয়েছেন।
সাবিনার চাচা আলাউদ্দীন জানান, ২০০৯
সালে চট্টগ্রামের ছেলে জাহিদ
ওরফে রয়েলের সাথে সাবিনার বিয়ে হয়।
রয়েল ঢাকার
একটি গার্মেন্টসে চাকরি করত। বিয়ের দুই
বছর পর রয়েলের
পরামর্শে সাবিনা রানা প্লাজার
একটি গার্মেন্টসে চাকরি নেয়। তবে তাদের
কোনো সন্তান ছিল না।
সাবিনা মারা গেছে এমন ধারণা থেকে রয়েল
অন্যত্র
বিয়ে করেছে বলে তারা জানতে পেরেছেন।
সাবিনার পরিবারের সাথে তার যোগাযোগ
নেই।
প্রসঙ্গত, সাবিনার চিকিত্সার জন্য
বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ
আকবর সোবহান এক লাখ
টাকা এবং সিঙ্গাপুর প্রবাসী এক
বাংলাদেশি ৫০ হাজার টাকা দিয়েছেন।
সিএমএইচের তত্ত্বাবধানে থাকা এসব
অনুদানের টাকা শিগগিরই সংবাদ সম্মেলনের
মাধ্যমে হস্তান্তর করা হবে বলে সংশ্লিষ্ট
সূত্র জানায়।


Posted via Blogaway