ঢাকা: ৫ জানুয়ারির বিতর্কিত
একদলীয়
নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়
নারায়ণগঞ্জের সংসদ সদস্য
হিসেবে ওসমান পরিবার
গদিতে বসার পর সদরের
আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থা পুরোপুরি ধসে পড়েছে,
দাবি নারায়ণগঞ্জ সিটি মেয়র
সেলিনা হায়াত আইভীর।
আওয়ামী লীগ নেতা আইভী জানান,
শামীম ওসমান এবং তার সদ্যপ্রয়াত
ভাই সংসদ সদস্য নাসিম ওসমানের
নেতৃত্বে স্থানীয়
সন্ত্রাসীরা নিজেদের স্বার্থ
হাসিলের জন্য অবাধ ও
স্বাধীনভাবে পুরো নারায়ণগঞ্জকে নিয়ন্ত্রণ
করছে। আর একইসময়ে নারায়ণগঞ্জের
প্রশাসন নীরব ভূমিকা পালনের
মাধ্যমে ওসমান পরিবারের আজ্ঞাবহ
হয়ে কাজ করছে। এভাবেই প্রশাসনিক
কর্মকর্তাদের একটি অংশও এখন মাদক
ব্যবসাসহ নানারকম অসামাজিক
কার্যকলাপের মতো অবৈধ
কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছে।
ফলে পুরো নারায়ণগঞ্জে এখন
কোনো বাধা ছাড়াই বিভিন্ন অপরাধ
কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।
এছাড়াও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ
দলটি নারায়ণগঞ্জে আধিপত্য
বিস্তারের রাজনীতির কারণে দুই
ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছে- বিভক্ত দুই
ভাগের একদিকে রয়েছেন শামীম
ওসমান এবং অন্যদিকে রয়েছেন তার
প্রতিদ্বন্দ্বী আইভী।
এই বিভেদ এতটাই প্রকট
হয়ে উঠেছে যে আওয়ামী লীগপন্থী আইনজীবী চন্দন
সরকারকে অপহরণ ও হত্যার
প্রতিবাদে রোববার নারায়ণগঞ্জ
শহরের আইনজীবীদের আহ্বান
করা হরতালও ক্ষমতাসীন দলের
আইনজীবীরা দৃশ্যত পালন করেননি।
হঠাৎ করেই নারায়ণগঞ্জে অপহরণ ও
হত্যার ঘটনা এত বেড়ে গেলো কেন-
এমন এক প্রশ্নের জবাবে ২০১২
সালের আলোচিত ত্বকী হত্যাকাণ্ডসহ
সাম্প্রতিক সময়ের বিভিন্ন
হত্যাকাণ্ডের প্রসঙ্গ
টেনে আইভী বলেন,
“অতীতে নারায়ণগঞ্জে সংঘটিত
একটি হত্যাকাণ্ডেরও বিচার হয়নি।
কোনো তদন্ত হয়নি, আসল অপরাধীদের
কাউকে গ্রেফতারও করা হয়নি।”
তিনি বলেন, “দীর্ঘদিন
ধরে আমরা তাদের বিরুদ্ধে আওয়াজ
তুলে চলেছি যারা শহরে এই
অপরাধী গোষ্ঠীকে আশ্রয়
দিয়ে যাচ্ছেন, কিন্তু এর কোনো ফলই
আমরা এখন পর্যন্ত পাইনি।”
নারায়ণগঞ্জে বসবাস করেন এমন
অনেকের মতোই আইভীও স্থানীয় পুলিশ
প্রশাসনের বিরুদ্ধে তার বিভিন্ন
অভিযোগের কথা জানান।
সম্প্রতি বাহিনীটির কয়েকজন শীর্ষ
কর্মকর্তাকে বদলি করা হয়েছে।
আইভী বলেন, “প্রশাসন
আমাকে বিন্দুমাত্র
সহযোগিতা করে না। উদাহরণস্বরূপ
বলা যায়, গত ছয় মাসে শহরের
সবগুলো ফুটপাত দখল করে নিয়েছেন
হকাররা, আর ফুটপাতগুলো পুনরুদ্ধার
করা সম্ভব হচ্ছে না কারণ
ফুটপাতগুলো পুনরুদ্ধার না করার জন্য
পুলিশের প্রতি নির্দেশ
রয়েছে শামীম ওসমানের। একই
কারণে জেলা প্রশাসকের কাছ থেকেও
আমি কোনো ধরনের সহযোগিতা পাই
না।”
তিনি আরো বলেন, “গত ২৫ বছর
ধরে নারায়ণগঞ্জে একটু একটু
করে সন্ত্রাসী তৎপরতা বাড়তে বাড়তে আজ
এই পর্যায়ে এসে পৌঁছেছে।
প্রথমে নাসিম ওসমানের
আশীর্বাদপুষ্ট হয়ে জাকির খানের
মতো অপরাধী জন্ম নিল, তারপর
ডেভিডের মতো অপরাধীদেরও উত্থান
ঘটলো। এই জাকির এবং ডেভিডের
দুজনেই পরে বিএনপিতে যোগ
দিয়েছিল। এই অপরাধীদের
যারা পৃষ্ঠপোষক ছিলেন, তারা একই
পরিবারের সদস্য। কিন্তু
পরবর্তীতে দল বদল করার
কারণে ‘টাওয়ার’ সেলিম, সুইট,
জাকির, ডেভিডের মতো এই
অপরাধীদের ‘বন্দুকযুদ্ধে’র
মাধ্যমে হত্যা করা হয়।”
খোদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার
আশীর্বাদপুষ্ট শামীম
ওসমানকে পরাজিত করে ২০১১
সালে আইভী নারায়ণগঞ্জ
সিটি করপোরেশনের মেয়র
হিসেবে নির্বাচিত হন। ২০০৯
সালের পর থেকে আইভীর মেয়র
হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার পরেও
নারায়ণগঞ্জের
পরিস্থিতি যুক্তিসঙ্গতভাবেই শান্ত
ছিল। কিন্তু ২০১২
সালে ত্বকী হত্যাকাণ্ডের পর
থেকে শহরজুড়ে অনেকগুলো হত্যাকাণ্ডের
ঘটনা ঘটলেও কোনো সময়েই
নিরাপত্তা বাহিনী হিসেবে পুলিশকে পেশাদারী ভূমিকায়
দেখা যায়নি।
অধিকাংশ সময়েই
দেখা গেছে যে বিভিন্ন অপরাধের
ঘটনায় পুলিশ নিরপরাধ মানুষকেই
অপরাধী হিসেবে সাব্যস্ত
করছে এবং এই নিরপরাধ হয়েও
দুর্ভোগ পোহানো মানুষদের
মধ্যে ছিলেন আইভীর আত্মীয়স্বজনও।
আইভী আরো জানান, বছরের পর বছর
ধরে শামীম ওসমান
চেষ্টা চালিয়ে গেছেন
নাজমা রহমান এবং এসএম আকরামের
মতো আওয়ামী লীগের অন্যান্য
জনপ্রিয় নেতাদের সরিয়ে ফেলার।
আইভী নিজেও তেমনি একজন জনপ্রিয়
নেতা যার ওপর শামীম ওসমানের
অব্যাহত চাপ
রয়েছে বলে দাবি তার।
নজরুল ইসলাম অপহরণ ও হত্যাকাণ্ড
প্রসঙ্গে আইভী জানান, নিহত নজরুল
এবং তার
হত্যাকারী হিসেবে অভিযুক্ত আসামি-
দুজনেই শামীম ওসমানের লোক
ছিলেন। অথচ নূর ও নজরুল- দুজনেই
তৃণমূল আওয়ামী লীগের কর্মী ছিলেন।
তিনি বলেন,
“যারা অপরাধী কর্মকাণ্ডের
সঙ্গে জড়িত,
প্রকৃতপক্ষে তারা কোনো রাজনৈতিক
দলেরই অনুসারী নন। নিজেদের
স্বার্থ হাসিল করার জন্য
তারা রাজনৈতিক ক্ষমতা ব্যবহার
করেন মাত্র।”
আইভী আরো বলেন, “নারায়ণগঞ্জের এই
পরিস্থিতির পরিবর্তন
চাইলে সরকারকে অবশ্যই
অপরাধীদের শনাক্ত করে তাদের
বিচার করতে হবে, তা সেই
অপরাধীরা যে দলেরই হোক না কেন।
আর এই পুরো প্রক্রিয়াটিই
করতে হবে আইন মেনে,
কোনো রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের
উদ্দেশ্যে কিংবা বন্দুকযুদ্ধের
মাধ্যমে অপরাধীদের বিচার
করা যাবে না। এভাবেই মাদকসহ
বিভিন্ন অপরাধের পেছনের সংঘবদ্ধ
চক্রটিকে পুরোপুরি নির্মূল
করে দিতে হবে।” সূত্র: ডেইলি স্টার।
একদলীয়
নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়
নারায়ণগঞ্জের সংসদ সদস্য
হিসেবে ওসমান পরিবার
গদিতে বসার পর সদরের
আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থা পুরোপুরি ধসে পড়েছে,
দাবি নারায়ণগঞ্জ সিটি মেয়র
সেলিনা হায়াত আইভীর।
আওয়ামী লীগ নেতা আইভী জানান,
শামীম ওসমান এবং তার সদ্যপ্রয়াত
ভাই সংসদ সদস্য নাসিম ওসমানের
নেতৃত্বে স্থানীয়
সন্ত্রাসীরা নিজেদের স্বার্থ
হাসিলের জন্য অবাধ ও
স্বাধীনভাবে পুরো নারায়ণগঞ্জকে নিয়ন্ত্রণ
করছে। আর একইসময়ে নারায়ণগঞ্জের
প্রশাসন নীরব ভূমিকা পালনের
মাধ্যমে ওসমান পরিবারের আজ্ঞাবহ
হয়ে কাজ করছে। এভাবেই প্রশাসনিক
কর্মকর্তাদের একটি অংশও এখন মাদক
ব্যবসাসহ নানারকম অসামাজিক
কার্যকলাপের মতো অবৈধ
কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছে।
ফলে পুরো নারায়ণগঞ্জে এখন
কোনো বাধা ছাড়াই বিভিন্ন অপরাধ
কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।
এছাড়াও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ
দলটি নারায়ণগঞ্জে আধিপত্য
বিস্তারের রাজনীতির কারণে দুই
ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছে- বিভক্ত দুই
ভাগের একদিকে রয়েছেন শামীম
ওসমান এবং অন্যদিকে রয়েছেন তার
প্রতিদ্বন্দ্বী আইভী।
এই বিভেদ এতটাই প্রকট
হয়ে উঠেছে যে আওয়ামী লীগপন্থী আইনজীবী চন্দন
সরকারকে অপহরণ ও হত্যার
প্রতিবাদে রোববার নারায়ণগঞ্জ
শহরের আইনজীবীদের আহ্বান
করা হরতালও ক্ষমতাসীন দলের
আইনজীবীরা দৃশ্যত পালন করেননি।
হঠাৎ করেই নারায়ণগঞ্জে অপহরণ ও
হত্যার ঘটনা এত বেড়ে গেলো কেন-
এমন এক প্রশ্নের জবাবে ২০১২
সালের আলোচিত ত্বকী হত্যাকাণ্ডসহ
সাম্প্রতিক সময়ের বিভিন্ন
হত্যাকাণ্ডের প্রসঙ্গ
টেনে আইভী বলেন,
“অতীতে নারায়ণগঞ্জে সংঘটিত
একটি হত্যাকাণ্ডেরও বিচার হয়নি।
কোনো তদন্ত হয়নি, আসল অপরাধীদের
কাউকে গ্রেফতারও করা হয়নি।”
তিনি বলেন, “দীর্ঘদিন
ধরে আমরা তাদের বিরুদ্ধে আওয়াজ
তুলে চলেছি যারা শহরে এই
অপরাধী গোষ্ঠীকে আশ্রয়
দিয়ে যাচ্ছেন, কিন্তু এর কোনো ফলই
আমরা এখন পর্যন্ত পাইনি।”
নারায়ণগঞ্জে বসবাস করেন এমন
অনেকের মতোই আইভীও স্থানীয় পুলিশ
প্রশাসনের বিরুদ্ধে তার বিভিন্ন
অভিযোগের কথা জানান।
সম্প্রতি বাহিনীটির কয়েকজন শীর্ষ
কর্মকর্তাকে বদলি করা হয়েছে।
আইভী বলেন, “প্রশাসন
আমাকে বিন্দুমাত্র
সহযোগিতা করে না। উদাহরণস্বরূপ
বলা যায়, গত ছয় মাসে শহরের
সবগুলো ফুটপাত দখল করে নিয়েছেন
হকাররা, আর ফুটপাতগুলো পুনরুদ্ধার
করা সম্ভব হচ্ছে না কারণ
ফুটপাতগুলো পুনরুদ্ধার না করার জন্য
পুলিশের প্রতি নির্দেশ
রয়েছে শামীম ওসমানের। একই
কারণে জেলা প্রশাসকের কাছ থেকেও
আমি কোনো ধরনের সহযোগিতা পাই
না।”
তিনি আরো বলেন, “গত ২৫ বছর
ধরে নারায়ণগঞ্জে একটু একটু
করে সন্ত্রাসী তৎপরতা বাড়তে বাড়তে আজ
এই পর্যায়ে এসে পৌঁছেছে।
প্রথমে নাসিম ওসমানের
আশীর্বাদপুষ্ট হয়ে জাকির খানের
মতো অপরাধী জন্ম নিল, তারপর
ডেভিডের মতো অপরাধীদেরও উত্থান
ঘটলো। এই জাকির এবং ডেভিডের
দুজনেই পরে বিএনপিতে যোগ
দিয়েছিল। এই অপরাধীদের
যারা পৃষ্ঠপোষক ছিলেন, তারা একই
পরিবারের সদস্য। কিন্তু
পরবর্তীতে দল বদল করার
কারণে ‘টাওয়ার’ সেলিম, সুইট,
জাকির, ডেভিডের মতো এই
অপরাধীদের ‘বন্দুকযুদ্ধে’র
মাধ্যমে হত্যা করা হয়।”
খোদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার
আশীর্বাদপুষ্ট শামীম
ওসমানকে পরাজিত করে ২০১১
সালে আইভী নারায়ণগঞ্জ
সিটি করপোরেশনের মেয়র
হিসেবে নির্বাচিত হন। ২০০৯
সালের পর থেকে আইভীর মেয়র
হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার পরেও
নারায়ণগঞ্জের
পরিস্থিতি যুক্তিসঙ্গতভাবেই শান্ত
ছিল। কিন্তু ২০১২
সালে ত্বকী হত্যাকাণ্ডের পর
থেকে শহরজুড়ে অনেকগুলো হত্যাকাণ্ডের
ঘটনা ঘটলেও কোনো সময়েই
নিরাপত্তা বাহিনী হিসেবে পুলিশকে পেশাদারী ভূমিকায়
দেখা যায়নি।
অধিকাংশ সময়েই
দেখা গেছে যে বিভিন্ন অপরাধের
ঘটনায় পুলিশ নিরপরাধ মানুষকেই
অপরাধী হিসেবে সাব্যস্ত
করছে এবং এই নিরপরাধ হয়েও
দুর্ভোগ পোহানো মানুষদের
মধ্যে ছিলেন আইভীর আত্মীয়স্বজনও।
আইভী আরো জানান, বছরের পর বছর
ধরে শামীম ওসমান
চেষ্টা চালিয়ে গেছেন
নাজমা রহমান এবং এসএম আকরামের
মতো আওয়ামী লীগের অন্যান্য
জনপ্রিয় নেতাদের সরিয়ে ফেলার।
আইভী নিজেও তেমনি একজন জনপ্রিয়
নেতা যার ওপর শামীম ওসমানের
অব্যাহত চাপ
রয়েছে বলে দাবি তার।
নজরুল ইসলাম অপহরণ ও হত্যাকাণ্ড
প্রসঙ্গে আইভী জানান, নিহত নজরুল
এবং তার
হত্যাকারী হিসেবে অভিযুক্ত আসামি-
দুজনেই শামীম ওসমানের লোক
ছিলেন। অথচ নূর ও নজরুল- দুজনেই
তৃণমূল আওয়ামী লীগের কর্মী ছিলেন।
তিনি বলেন,
“যারা অপরাধী কর্মকাণ্ডের
সঙ্গে জড়িত,
প্রকৃতপক্ষে তারা কোনো রাজনৈতিক
দলেরই অনুসারী নন। নিজেদের
স্বার্থ হাসিল করার জন্য
তারা রাজনৈতিক ক্ষমতা ব্যবহার
করেন মাত্র।”
আইভী আরো বলেন, “নারায়ণগঞ্জের এই
পরিস্থিতির পরিবর্তন
চাইলে সরকারকে অবশ্যই
অপরাধীদের শনাক্ত করে তাদের
বিচার করতে হবে, তা সেই
অপরাধীরা যে দলেরই হোক না কেন।
আর এই পুরো প্রক্রিয়াটিই
করতে হবে আইন মেনে,
কোনো রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের
উদ্দেশ্যে কিংবা বন্দুকযুদ্ধের
মাধ্যমে অপরাধীদের বিচার
করা যাবে না। এভাবেই মাদকসহ
বিভিন্ন অপরাধের পেছনের সংঘবদ্ধ
চক্রটিকে পুরোপুরি নির্মূল
করে দিতে হবে।” সূত্র: ডেইলি স্টার।
posted from Bloggeroid
No comments:
Post a Comment